somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষা বাতিল করা হোক

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বর্তমান সরকার বেশ কয়েক বছর পূর্বে দেশে জাতীয় শিক্ষানীতি কার্যকর করেছে। অনেক আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষানীতিতে কিছু ভালো দিক রয়েছে। কিন্তু মূল্যবোধ, নৈতিকতা, সততা, ভদ্রতা, শিষ্টাচার শিক্ষানীতিতে ব্যর্থতা যথেষ্ট রয়েছে। আর প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যর্থতা-ত যথেষ্ট রয়েছে এ নিয়ে অনেক ক্ষুদ্ধ অভিভাবকরা।

উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করতেই একজন শিক্ষার্থীর চারটি পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। আর প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে প্রতিটি শ্রেণিতে অংশ নিতে হয় কমপক্ষে ছয়টি পর্বের স্কুলের পরীক্ষায়। একটি পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই আরেকটি পরীক্ষার সূচি ঘোষণা হয়ে যায়। পরীক্ষার এই বোঝা মাথায় নিয়ে ভীত হয়ে পড়ছে শিশু শিক্ষার্থীরা।

পঞ্চম শ্রেণি উত্তীর্ণ হতে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় একজন শিশু শিক্ষার্থীকে। এই পরীক্ষায় পাস করা বা ভালো ফল করার প্রস্তুতি শুরু হয় বছরের শুরু থেকেই। দিতে হয় একাধিক মডেল টেস্ট। ভালো ফল করানোর জন্য শিক্ষার্থীর ওপর স্কুল কর্তৃপক্ষের চাপিয়ে দেয়া বাড়তি বোঝার চাপে ভীত হয়ে পড়ছে শিশুরা।

২০০৯ সালে বাংলাদেশে এই পরীক্ষা চালু হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এই পরীক্ষার আয়োজন করে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যেই ফল প্রকাশ করা হয়।
পঞ্চম শ্রেণির পাসের তিন বছর পেরুলেই অংশ নিতে হচ্ছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায়। পঞ্চম শ্রেণির আদলেই শুরু হয় কোচিং-পরীক্ষা। স্কুলের কৃতিত্ব বাড়ানোর দায়ভার পড়ে শিক্ষার্থীর ওপর। এ পরীক্ষাও ২০১০ সালে শুরু হয়।

অষ্টম শ্রেণি পাসের দুই বছর পর এসএসসি এবং এর আরো দুই বছর পর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। এভাবে চারটি পাবলিক পরীক্ষা ছাড়াও স্কুলের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার চাপে দিশাহারা শিক্ষার্থীরা।

এত পরীক্ষার আয়োজনে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন অভিভাবকরাও। পরীক্ষা নিয়ে সন্তানের দুশ্চিন্তায় অভিভাবকরা এখন বিপাকে। ব্যবসায়ী আবুল কালামের ছোট মেয়ে শান্তা। পড়ছে রাজধানীর একটি নামিদামি স্কুলে। নভেম্বরে শুরু হয়েছে তার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। ৯ বছর বয়সেই প্রথম পাবলিক পরীক্ষায় লড়তে হচ্ছে এই শিশুটিকে।

কোচিং ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে পুরোটা বছরই কাটছে ব্যস্ততায়। একটু বিশ্রাম পায়নি। সকালে স্কুলের কোচিং, বিকালে অন্য এক শিক্ষকের কোচিংয়েই কেটেছে তার পুরো ৯ মাস। অবসর বা খেলাধুলার সুযোগ পায়নি বা দেয়া হয়নি। পড়া মুখস্ত করানোর জন্য স্কুলে শিক্ষকের চাপ, বাসায় বাবা-মায়ের চাপ। সব মিলে ভালো নেই শিশুটি।

সে জানায় সারাক্ষণ বই পড়তে হয়। পরীক্ষা দিতে হয়। স্কুলে যেতে হয়, কোচিং ক্লাস করতে হয়। কোথাও বেড়াতে যেতে পারি না।’ অভিভাবকদের বক্তব্য, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরি করার নামে বিরামহীন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ভারে ভীত শিক্ষার্থীরা। শিশুদের সক্ষমতার কথা বিবেচনা করা হয় না। চাপিয়ে দেয়া হয় একের পর এক পরীক্ষা আর বিশাল পাঠ্যক্রমের বোঝা।

পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে দুটি পাবলিক পরীক্ষার আয়োজন, ঢাক ঢোল পিটিয়ে পরীক্ষার ঘোষণা, উচ্ছ্বাস প্রকাশের মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাচ্ছে-শিক্ষা মন্ত্রণালয় এমন বক্তব্য প্রচার করলেও অভিভাবকদের ক্ষেত্রে চিত্র ঠিক উল্টো।

এই পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অসন্তোষ। অসংখ্য পরীক্ষা এবং যখন তখন নতুন বিষয়ের চাপে শিক্ষা নিয়ে শিশুদের মধ্যে বাড়ছে আতঙ্ক। তাই শিক্ষা নিয়ে অতিমাত্রায় চলা পরীক্ষা-নিরীক্ষা বন্ধ হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

কোমলমতি শিশুদের ওপর চাপ কমাতে পরীক্ষা ও পাঠ্যবইয়ের বোঝা কমানোর জোর দাবি অনেক দিনের।

কিন্তু বাস্তবতা হলো শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেয়া পাঠ্যক্রমের বোঝা তো কমেইনি, বরং মেধা যাচাইয়ের নামে শিশুদের ওপর চাপছে একের পর এক পরীক্ষা ও নতুন নতুন বইয়ের বোঝা।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×