তামিল নারীরা শাড়ি পড়ে, তবে শাড়ির নিচে কিছুটা ধুতির মতো জড়িয়ে নেয়। আধুনিক নারী সেলোয়ার কামিজের সাথে ওড়না পড়ে না, অবশ্য এটা সারা ভারতেই এমন স্টাইল ছড়িয়ে পড়েছে। আন্নাকে এভাবে ওড়না ছাড়াই কাপড় পড়তে বললাম। ও বিচিত্র এক হাসি উপহার দিল। নারীর হাসি নাকি বহুমাত্রিক হয়, তাই আমি ঠিক কোন মাত্রাই বুঝতে পারলাম না।
ওড়না ত্যাগ করার ফলে ভারতীয় নারীদের জীবন বেশ কিছুটা স্বাচ্ছন্দপূর্ণ হযেছে, তাদের মনের দাসত্বকে ঝেড়ে ফেলার মানসিকতা তৈরী হয়েছে। নিজেকে, নিজের শরীরের বৈশিষ্ট্যকে স্বাভাবিক হিসেবে উপস্থাপনের শক্তি তৈরী হয়েছে। যে টা শরীরের স্বাভাবিক অব্স্থা তাকে সব সময় সংকোচে ঢেকে রাখাটাই তো অস্বাভাবিক। আর সেটা করতে গিয়ে তাদের গলদঘর্ম হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বুকহীন নারী শরীরের কল্পনা করে কেউ, নাকি সেটা নারীর জন্য অবমাননাকর? তাহলে ওড়না পড়তেই হবে কেন?
আন্না আমার কথা শুনে কেবল হাসে। বলে, তোমার মতো বাংলাদেশের সবাই তো আর ভাবে না। ভাবলে হয়তো আমাদেরও আর কোন সংকোচ হবে না।
তামিল নারীরা প্রায় সবাই দেখলাম আনুষ্ঠানিক সাজের সাথে সাথে মাথায় একটি ফুলের মালা গেঁথে নেয়। তাদের পছন্দের ফুল বেলি। সাদা বেলি ফুল চুলে দুলতে থাকে, দেখতে বেশ লাগে। আন্নাকেও তেমনি ভাবে সাজালাম, যেন তামিল নারী। ওদের পাশে ওকে আলাদা মনে হলো না। ওকে দেখে অনেকেই ভুল করলো তামিল ভেবে। পরে ভুল বুঝতে পেরে তামিল মহিলাদের সেকি হাসি। ভাবের দিক থেকে সেই সময় বাঙালি নারীর সাথে তামিল নারীদের কোন পার্থক্য খুঁজে পেলাম না।
তামিল পুরুষ সাদা পোশাক খুব পছন্দ করে। তাদের সাদা শার্ট-সাদা প্যান্ট প্রায় কমন ড্রেস। একটু বযস্করা সাদা শার্ট অথবা ফতুয়ার সাথে সাদা লুঙ্গি পড়ে থাকে। তারা লুঙ্গি গুলো ভাঁজ করে হাটুর উপরে তুলে রাখে বিশেষ পদ্ধতিতে, এটাই তাদের পরিচিত পদ্ধতি। একজন তামিলকে সহজে চেনার জন্য তার সাদা পোষাক, গোঁফ এবং লুঙ্গি হাঁটুর উপর তুলে ধরার বৈশিষ্ট্য দেখাই যথেষ্ট।