somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্ষ চিঠি

২৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তাবা,
অনেকদিন কাউকে চিঠি লিখিনা।লিখবনা বলে পণও করেছিলাম। কিন্তু আমার অন্যসব পণের মত এটাও রাখতে পারলাম না। জ্বর, সর্দি আর মাথা ব্যথা নিয়ে মেডিকেলের বারান্দায় বসে আছি। তোকে লিখতে ভাল লাগছে।
এই চিঠিটা কেন লেখা? কারণ, এই অপদার্থ মানুষটা জানতে চায় একটা পবিত্র সম্পর্ক কেন ডুবে যাচ্ছে ।কেন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ফুলের পাপড়ির মত বন্ধুত্ব। কেন থমকে যাচ্ছে সোনালী সোনালী মুহূর্তের ধারা। এখনো তো সন্ধ্যা হয় নি।এখনো তো আকাশ জুড়ে ছেয়ে আসেনি ঘনকালো মেঘ। তবে কেন?
শেষ কবে তুই আমাকে ফোন দিয়েছিলি মনে পড়ে না। আমি ফোন দিলেও এক মিনিটের বেশি কথা বলতে চাস না। অথচ একটা সময়....
জানি সময় বদলেছে, বেড়েছে তোর ব্যস্ততা। তাই হয়তো। জানিস , একটা সময় পুরোপুরি ভুলে যাবি আমাকে । কথাটা আগেও একবার বলেছিলাম। তখন এতটা বিশ্বাস করতাম না। এখন যতটা করি।
কতদিন তর মুখে দাদাভাই ডাকটা শুনি না। অবশ্য জানিনা কোন কারণে এই ডাক শোনার অযোগ্য হয়ে গেছি ... ভাঁড়ামি করতে করতে কখন যে কাকে কষ্ট দিয়ে ফেলি জানিনা।এমন না যে ইচ্ছে করে কাউকে কষ্ট দিই। যখন বুঝতে পারি নিজে কষ্ট পাই দ্বিগুণ। তোকে চিঠি লিখিনা । সে অনেক কাল পুরনো কথা। ছোট ছোট চিরকুট না পাওয়ার বেদনা তো আমাকেও পোড়ায় ..
তোর পৃথিবীটা অনেক বিশাল । সেই বিশাল পৃথিবীর পুরোটা জুড়ে শুধু তোর বাবা। তোর প্রিয় মুখ ।সেই মানুষটা যখন পৃথিবী ছাড়লো তখন থেকে তুই কেমন যেন খোলস বন্দী হয়ে গেছিস । কেউ এখন আর আমাকে হঠাৎ হঠাৎ ফোন দিয়ে গান শোনায় না, গিটারে টুংটাং করে না। আকাশ কালোকরে কেউ বলেনা দাদা ভাই ভিজবি? আমি জানি সবাই তোর মত ভাল না। আর সবাই আমার মত খারাপও না। তাই হয়তো ধীরে ধীরে অনেক দূরে সরে যাচ্ছি। সম্পর্কগুলো স্রেফ প্রয়োজনের হয়ে যাচ্ছে। বন্ধু থেকে আমরা ক্রমেই পরিচিত কেউ একজন হয়ে যাচ্ছি। নিজের দোষটাকেই বড় করে দেখি আমি। মানুষকে কষ্ট দিয়ে বরং উল্টো পেয়ে যাই। যখন টিএসসিতে চা খাই হঠাৎ হঠাৎ মনে পড়ে সেই সোনালী সোনালী সব স্মৃতি। নতুন ভোরের আলোর মত সব ঝলমলিয়ে উঠে। আকাশ কালো হয়ে যায় আমার । মন খারাপের কারণ হোস তুই মাঝে মাঝেই। তখনই তোকে ফোন দিই। ওপাশে তোর ব্যস্ততার শব্দ শুনি।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে তর ক্যাম্পাসে যাই। কিন্তু পরক্ষণেই মনে পড়ে তুই তো ব্যস্ত থাকবি। হয়তো তোর কোন পরিক্ষা থাকবে। খুব ইচ্ছে করে সংসদ ভবনের পাশের হলুদ ফুলগুলো মাড়িয়ে চীনমৈত্রীর পাশের ফাঁকা জায়গাটায় বসি।ছবি তুলি ফুলের, ঘাসের ,আকাশের কিংবা গঙ্গাফড়িয়ের। এখনো ফের ইচ্ছে জাগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সেই ফাঁকা জায়গাটায় বসি ।যেখানে বসলে ঢাকা শহরের আকাশ সবচে সুন্দর দেখায়। রমনায় গিয়ে গাছে গাছে নাম লিখে আসি।খুলনা জেলার অনুষ্ঠানে গিয়ে খুলনাবাসি হয়ে যাই। পিঠা খাই। বোর্ডে সবচে বড় করে নাম লিখে আসি। মরার ইচ্ছেগুলো মরেই থাকে। তুই একটা শব্দ শিখিয়েছিলি আমায় হালুম। এখন এটা আমার নামই হয়ে গেছে।অনেকদিন দেখিনা তোকে । ব্যস্ততা কত বিষাদময়। যখন তুই ‘ক্ষ’ হয়ে যাবি। তখন একটুও মনে পড়বেনা আমাকে। আহা যদি কখনো আবার ফিরে পেতাম সোনালি সেই দিনগুলো। সেই মুহূর্তগুলো । হঠাৎ কুড়িয়ে পাওয়া মাটির পাখিটা এখনো যত্নে আছে যেমন যত্নে আছে তোর ফেলে যাওয়া অনুভূতির খাতাটা। অরিয়ন ব্লাক আর নীলঘুঘুর সাথে তোর দিন কাটুক গানে গানে । ভালো থাকিস…
.
ইতি,
দাদাভাই
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০১৭ রাত ১২:১১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×