somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেষের আগে

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পানসে কিছু বিকেল আছে। কোন কিছুই ভাল লাগে না এইসব বিকেলে। কেমন একটা মন খারাপ করা বিষণ্ণ আলো ছড়িয়ে থাকে চারপাশে। প্রকৃতিও যেন কেমন একটা ক্লান্ত - শ্রান্ত রূপ নেয়। আকাশের অনেক উপরে উড়ে বেড়ানো চিলটাও খানিক বাদে বাদেই বিদীর্ণ বুকের চিৎকার শুনিয়ে যায়।

আজকের বিকালটাও এমনই কাটছে। অনেক সকালেই উঠে টেবিলে বসেছিলাম পড়তে। পড়া বাদে মুভি দেখা, গান শোনা, ছবি আঁকা, চিঠি লেখা এইসব হয়েছে। বেশ খানিকক্ষণ সময় নিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পত্রিকাও পড়েছি। তারপর দুপুরে খেতে গেলাম আজিজে। শ্রাবণ প্রকাশনীতে বসে ছিলাম আরো খানিকটা সময়। একটু আগে হলে ফিরলাম। গাছগুলোতে পানি দিলাম। পড়তে বসতে ইচ্ছে করছে৷ একটা বই নিয়ে আধঘন্টা নাড়াচাড়া করলাম। কি মনে করে যেন বাইরে তাকালাম। এমন মন খারাপ করা বিকেল অনেকদিন চোখে পড়েনি।
বেলকনিতে আসতেই চোখে পড়লো নিম গাছটা কেমন জবুথবু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে৷ পাশের লম্বা বাদাম গাছের ডালে একটা দাঁড়কাক বসে বসে ঝিমুচ্ছে। অপরাজিতা গাছে নতুন ফুল ফুটেছে। একটু আগে পানি দেয়া পানির ফোটা গুলোকে শিশিরের মতন দেখাচ্ছে।

নিচের রাস্তায় কয়েকটা বাচ্চা হৈচৈ করতে করতে দৌড়ে গেল। প্রতিদিন বিকেলেই এরা খেলতে বের হয় দল বেঁধে। আমার ভালই লাগে দেখতে।

সামনে মিডটার্ম পরিক্ষা। এটাই শেষ মিডটার্ম। দেখতে দেখতে এই সেমিস্টারটাও শেষ হয়ে আসছে। সময় কত দ্রুত যায়। মনে হয় এইতো সেদিন ভর্তি হলাম। পাঁচ বছর চোখের পলকে কেটে গেল। নতুন ব্যাচ আসার জন্য ভর্তি পরিক্ষাও শুরু হয়ে গেছে৷

প্রতিটা ভর্তি পরিক্ষার সময় দেখা যায় চোখে মুখে কত উৎসাহ আর স্বপ্ন নিয়ে একঝাঁক নতুন মুখ পরিক্ষা দিতে আসছে। যারা পরিক্ষায় টিকে যায় কী আনন্দ তাদের! তারপর ভর্তি হয়, হলে ওঠে। অনেক রঙিন দিন। দল বেঁধে আড্ডা দেয়া, চা খাওয়া, এখানে সেখানে ঘুরতে যাওয়া, ক্যাম্পাস দেখা, সিনেমায় যাওয়া, জন্মদিন পালন। কত্ত কী।

মফস্বলের আনাড়ি ছেলেটাও আস্তে আস্তে নিজেকে খাপ খাওয়াতে শুরু করে নতুন একটা জগতের সাথে। ছেলেরা রাতে ঘুরতে বের হয়। ফল গাছগুলি চষে বেড়ায়। গান গায়। ক্রিকেট খেলে। ভোরের আগে আগে গনরুমে ঢুকে ঘুমানোর মত একটু জায়গা খুঁজে নেয়।

সকালে উঠে আটটার ক্লাস। আটটা মানে আটটা। ক্লাসের ফাঁকে আবার আড্ডা, টিএসসি, গান। নবীন বরণে সেই আনন্দ হয়৷ বড় ভাইয়াদের আলাপ যে ওঠে জুনিয়র ব্যাচের সুন্দরীদের সাথে। এভাবেই সময় যায়। কেউ কেউ প্রেমে পড়ে। কেউ কেউ পড়াশোনায় হয় খুব সিরিয়াস। বিসিএসের ভুত চাপে কারো কারো মাথায়।
কেউ কবি হয়। একবুক প্রেম নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। ক্লাসে কিছু ছেলে থাকে উদাসীন। কোন কিছুই এদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। জীবন যেমন চলছে চলুক না।

একই গল্প মঞ্চায়িত হতে থাকে দিনের পর দিন। কেউ কেউ বিভিন্ন সংগঠনে যোগ দেয়। ডিউটিএস, ডিবেটিং ক্লাব, কালচারাল সোসাইটি, মাইম একশন কত্ত কত্ত নাম।
সময় যায়। আস্তে আস্তে সবাই বাস্তববাদী হতে থাকে। নতুন একটি ব্যাচ চলে আসে আবারও। পুরনোরা হঠাৎ করে আবিষ্কার করে তারা বড় হয়ে গেছে। অনেক দুষ্টুমি আর চাইলেই করা যায় না। কোথা থেকে কোন জুনিয়র আবির্ভূত হয়ে সালাম ঠুকে দেবে।

তারপর....
অনেকদিন পর এরকম কোন এক বিকেলে সেই ছেলেটি এমনই করে হলের বেলকনিতে এসে দাঁড়ায়। এই কথাগুলোই হয়তো তার মনে পড়েছিল/ পড়ছে/ পড়বে....
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫৮
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×