somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পার্টটাইম কাজ হিসাবে বেছে নিতে পারেন শেয়ার ব্যাবসা

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের এ জনবহুল ১৫ কোটি মানুষের দেশে শেয়ার বাজারের বিনিয়োগকারীর সংখ্যা (বিও একাউন্ট) খুবই সীমিত। আমাদের দেশের পুঁজিবাজার গবেষকরা বলছেন এ দেশের অন্তত এক কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে বিনিয়োগে অংশগ্রহণ করতে পারে। তারা মনে করেন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে সক্ষম ৯০ শতাংশ মানুষ পুঁজিবাজারের সঙ্গে সম্পর্কহীন। আমাদের দেশের মানুষের এবং পুঁজিবাজারে আসতে সক্ষম এমন কোম্পানি আছে যাদের বাজার সম্পর্কে তেমন কোনো স্বচ্ছ ধারণা নেই। সরকার কিংবা এসইসি মানুষকে আগ্রহী করতে পারছে না। তারপরেও ধীরে ধীরে এ ছোট্ট পুঁজিবাজারটাতে বিনিয়োগ করতে মানুষ আগ্রহী হয়ে উঠছে। তাদের এ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনিয়োগ হয়তো একদিন পুঁজিবাজারকে আরো চাঙ্গা করে তুলবে।
বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশে সমস্যার অন্ত নেই। সব সমস্যার মূলে অর্থনীতি। বর্তমানে দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সম্পদের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। অভাব অসীম কিন্তু সম্পদ সীমিত। এ সীমিত সম্পদ কিভাবে বণ্টন করতে হবে তাই অর্থনীতির মৌলিক সমস্যা। অর্থনৈতিক সমস্যা মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করে। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষ এ অর্থনৈতিক টানাপড়েন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নানা পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। কেউ চাকরি, কেউ ব্যবসা, কেউ চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা দুটো চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে বাংলাদেশে যে ব্যবসাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তার নাম শেয়ার ব্যবসা। স্কুল-কলেজের ছাত্র থেকে শুরু করে এমনকি ঘরের গৃহিণী পর্যন্ত এ শেয়ার ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। এ ব্যবসায় আসতে হলে আইনের তেমন কোনো জটিলতা পোহাতে হয় না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কিছু নিয়ম মেনে চললে এ ব্যবসা করা যায়।
তার আগে জানতে হবে শেয়ার ব্যবসা কি? এক কথায় বলতে গেলে কোনো কোম্পানি মূলধন সংগ্রহের উদ্দেশ্যে তার উদ্দিষ্ট প্রাথমিক মূলধনকে কতোগুলো পূর্ণ অংশে ভাগ করে জনগণের কাছে বিক্রি করে। এরূপ প্রত্যেকটি অংশকে এক একটি শেয়ার বলে। হস্থন্তরযোগ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশের মালিকানা কেনাবেচা করাই হলো শেয়ার ব্যবসা।
কিভাবে শুরু করবেন
প্রাপ্ত বয়স্ক যে কোনো ব্যক্তি যদি শেয়ার ব্যবসায় আসতে চান তো আসতে পারেন। তবে তার জন্য প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হচ্ছে সর্বপ্রথম আপনাকে যে কোনো তফসিলি ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে হবে। এরপর সেই ব্যাংক হিসেবের বিপরীতে সিডিবিএল (সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অফ বাংলাদেশ লিমিটেডের) অধীনে বিও (বেনিফিসিয়ারি অনার) একাউন্ট খুলতে হবে। এক কথায় বলতে গেলে আপনি যে কোনো ব্রোকার হাউসে নিয়ে এ বিও একাউন্ট খুলতে পারেন। নির্দিষ্ট হাউসে খুলতে হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। এ বিও একাউন্ট খোলার পর একজন বিনিয়োগকারী প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি উভয় মার্কেটে শেয়ার ব্যবসা করতে পারেন।
বিও খুলতে যা লাগবে?
১.ব্যাংক স্টেটমেন্ট
২. ব্যাংক সার্টিফিকেট/ভোটার আইটি
৩. পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি
৪. একজন নমিনি ছবিসহ
৫. টিন (যদি থাকে)
একজন বিনিয়োগকারী দুটির বেশি বিও একাউন্ট খুলতে পারবে না। সেজন্য তাকে সর্বনিম্ন ১০০ সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা দিতে হবে।
বিদেশে অবস্থানরত যে কোনো বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে শেয়ার ব্যবসা করতে পারেন। সেজন্য বিনিয়োগকারীকে এনআরবি (নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশ) বিও একাউন্ট খুলতে হবে। সে ক্ষেত্রে তাকে পাসপোর্টের সত্যায়িত কপি এবং (এফসি) ফরেন কারেন্সি, ব্যাংক একাউন্টের সার্টিফিকেট লাগবে। এফসি হিসেবের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রায় ডিমান্ড ড্রাফট করে অর্থ জমা দিতে হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ভেদে ড্রাফট ফি ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি শেয়ার
আমাদের দেশে প্রত্যেক বছর কোনো না কোনো কোম্পানি ইনিশিয়াল পাবলিক অফারের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হয়। একটি কোম্পানি যখন প্রথমবারের মতো শেয়ার বাজারে ছাড়ে তাকে আমরা প্রাইমারি শেয়ার বলি। প্রাইমারি শেয়ার পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ফর্মে কোম্পানির কাছে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে আবেদন করতে হয়। কোম্পানির নির্দিষ্ট শেয়ারের বিপরীতে আবেদনপত্র বেশি হলে লটারির মাধ্যমে শেয়ার বরাদ্দ দেয়া হয়।
একজন শেয়ার হোল্ডার স্বতন্ত্রভাবে একটি এবং যৌথ বিও একাউন্টের মাধ্যমে দুটি আবেদনপত্র জমা দিতে পারে। আবেদনকারী যদি লটারির মাধ্যমে শেয়ার না পায় তবে আবেদনকারীর টাকা আবার ফেরত চলে আসে। প্রাথমিক শেয়ার বরাদ্দের পর ওই শেয়ার যখন ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেনাবেচা হয় তখন সেটা সেকেন্ডারি মার্কেট চলে আসে আর সেই শেয়ার সেকেন্ডারি শেয়ার বলে গণ্য হয়। সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগকারী তার ইচ্ছা মাফিক শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারে। সেকেন্ডারি মার্কেটে কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করলে সঙ্গে সঙ্গে শেয়ার বিক্রি করতে পারে না। বিভিন্ন ক্যাটাগরির শেয়ার বিভিন্ন সময় বিক্রি করতে হয়। যেমন এ ক্যাটাগরির শেয়ার চারদিন পর ম্যাচিউড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি করা যায়। অন্যদিকে দুই ক্যাটাগরির শেয়ার সাত দিন পর বিক্রি করা যায়।

পুঁজি ও ঝুঁকি কেমন
বাংলাদেশে শেয়ার বাজারে বর্তমানে দুটা ক্যাটাগরিতে শেয়ার লেনদেন হয়ে থাকে। প্রাইমারি (আইপিও) এবং সেকেন্ডারি। প্রাইমারি শেয়ারের জন্য আবেদন করতে কয়েক হাজার টাকার প্রয়োজন হয়। প্রাথমিক শেয়ারের ক্ষেত্রে ঝুঁকির তেমন সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
সেকেন্ডারি মার্কেটে লাভের সম্ভাবনা যেমন আছে তেমনি লোকসানের ঝুঁকিও বেশি আছে। না বুঝে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করলে পুঁজি রাতারাতি হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তাই কোনো রকম গুজবে কান না দিয়ে বুঝে-শুনে বিনিয়োগ করাই উত্তম। পেশাদার সেকেন্ডারি ব্যবসায়ী হতে হলে কয়েক লাখ টাকার প্রয়োজন হতে পারে।
সফল হওয়ার কিছু টিপস
১. শেয়ার কেনার ক্ষেত্রে কোম্পানির মূল ভিত্তি দেখে কেনা।
২. যে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় বেশি এবং নেট অ্যাসেট ভ্যালু বেশি। সেই কোম্পানির শেয়ার ভালো।
৩. কোম্পানির ব্যালেন্স সিট সম্পর্কে ধারণা রাখা।
৪. কোম্পানির পণ্যের চাহিদা সম্পর্কে ধারণা।
৫. দেশি-বিদেশি শেয়ার মার্কেটের ওপর জ্ঞান রাখা এবং
৬. যে কোনো ধরনের গুজব এড়িয়ে চলা।

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০৮
১৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×