বিপদটা হলো আমরা সোচ্চার হলাম অনেক দেরীতে........
ঘটনা ঘটার পরে কথা-বার্তা শুরু করে তো সত্যিকারের কোন লাভ নাই.......ইতিমধ্যে এই বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়ে গেছে (ভিত্তিপ্রস্তর করে ফেলেছে মনমোহন সিং).......আমাদের কর্মকর্তাদের সেখানে গিয়ে চা খেয়ে আসার দাওয়াত-ও দিয়েছে ভারত!!!!
আমাদের কি মনে আছে International Tipaimukh Dam Conference 2005 Dhaka Bangladesh নামে একটা সম্মেলন হয়েছিল ২০০৫-এর ৩০-৩১ ডিসেম্বরে??? এবং যাতে দাওয়াত পেয়েও মেজর হাফিজ যোগ দেননি........আবার মাল মুহিত, রাজ্জাক এনারা গিয়েছিলেন......যারা এখন কি বলতে কি বলছেন তারই কোন ঠিক নেই.......
তখন কিন্তু এই ব্যাপারটা নিয়ে তেমন কোন আলোচনাই হয়নি.......সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে কেন........এইখানেই লুকিয়ে আসল মজাটা........এটা বুঝতে না পারলে শত্রু-মিত্র নিয়ে জুজুর খেলাই চলতে থাকবে দেশজুড়ে........
রাজনীতির ক্ষেত্রে আমাদের দেশে যেমন ২টি ধারা.......প্রো-আওয়ামী আর এ্যান্টি-আওয়ামী, তেমনি মিডিয়াতেও......এখন অবশ্য ছদ্ম নিরপেক্ষ কিছু পত্রিকা আছে যারা আওয়ামী লীগের প্রতি দুর্বল.......
আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত সর্বদাই ফ্যাক্টর......এবং সব দলই ক্ষমতায় থাকলে ভারতের স্বার্থপন্থী হয়.....আ'লীগের সাথে ভারত অবশ্যই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, কিন্তু ক্ষমতাসীন বি.এন.পি.-ও ভারতের স্বার্থরক্ষায় সর্বদা তৎপরই থাকে.........
মনে রাখতে হবে বি.এন.পি.-র বিরোধী রাজনীতির স্ট্র্যাটেজিটাই হলো ভারত বিরোধীতা.......আ'লীগের তা নয়.......একারণে 'সুবিধাভোগী' বি.এন.পি.-র আমলে টিপাইমুখ নিয়ে তেমন সিরিয়াস আলোচনা হতোনা.......কারণ আওয়ামীপন্থী মিডিয়াতো চুপই থাকবে আর বি.এন.পি.-পন্থী মিডিয়াও তখন এইসব বিষয়কে তেমন গুরুত্ত্ব দেয়না........ভারত কিন্তু তার কাজ সবসময় ঠিকঠাক এগিয়ে নিচ্ছে.......
ফারাক্কার ব্যাপারটা দেখুন: ১৯৬৪-তে পাকের জান-পরাণের দোস্ত (?) আমেরিকার আরেক শয়তান বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় এই কাজ শুরু করে ভারত.......অথচ পাকিরা এটাকে কতটা headace হিসেবে নিয়েছিল আল্লাহ জানেন........কিন্তু ৭৪-এই বাঁধ চালু (পারীক্ষামূলক বলে পুরোদমে) হলে তার পুরো দায় একতরফা মুজিব সরকারকে চাপিয়েছি আমরা.......
তেমনি টিপাইমুখ নিয়ে কথা উঠে বাজপেয়ী সরকারের শেষ সময়ে......আমাদের উচিত ছিল তখনই ব্যাপারটা নিয়ে ভারতের সাথে দ্বি-পাক্ষিক সভায় বসা, পাশাপাশি technically তা বিশ্বসভায় তুলে ধরা.......হৈ চৈ-টা শুরু করা..........
যাই হোক, সাধারণ মানুষ যে এখন কথা বলছে, তা দেরীতে হলেও মন্দের ভালো.......আমাদের উপর ভারতের দাদাগিরির জন্য দায়ী আমাদের ধারাবাহিক রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা.......একক কোন দল নয়........
আমাদের আজ কোন নেতা নেই.......প্রচন্ডভাবে বিভক্ত জনতার কাতারে বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ করে আমরা মানসিক শান্তি হয়তো পেতে পারি.......কিন্তু ভারতের মতো রাষ্ট্রের সন্ত্রাস প্রতিহত করা তাতে সম্ভব কিনা তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়........কাশ্মীরের চেনাব নদীর বাঁধ নিয়ে যেমন পারমানবিক শক্তিধর পাকিস্তান বলার মতো কিছু করতে পারেনাই.......
আর এই প্রতিবাদে আমাদের আজকের গলাবাজ তথাকথিত দেশপ্রেমিকদের থেকেও সাবধান হওয়া উচিত........