somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওরা সংখ্যালঘু নাকি যারা এ সকল নৃশংস হামলা চালায় তারা !!

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আচ্ছা, ওদের কি দোষ ছিল ! ওরা কি তাঁদের ভোট’টাও দিতে পারবে না? তাহলে সরকার যে টিভি, রেডিও, মাইক আর দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে লাগিয়ে বলে বেড়ায়, “আমার ভোট আমি দিবো, যাকে খুশি তাকে দিবো”। আর ভোট দেয়াটা তো প্রত্যেক যোগ্য নাগরিকের নাগরিক অধিকার। তার মানে কি, তাঁরা তাদের নাগরিক অধিকার পাবে না? আমাদের দেশ কি এখনো পরাধীন ! নাকি ওরা, স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক না!! হ্যাঁ, ওরা পরাধীন। কিছু উগ্র অনুর্বর মস্তিষ্ক মানুষের কাছে। যারা আমাদের সোনার বাংলার স্বাধীনতা চায়নি। চেয়েছিল দেশটা বাংলাদেশ না হয়ে, হোক পাকিস্তান!

ওরা যে মার্কায় ভোট দেক না কেন, ওদের নাম, হাতের শাখা আর কপালের সিঁদুর বলে দেয়; ওরা নাকি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে। আমি ঢাকা শহরেই ভোট দেবার সময় দেখেছি, শাখা আর সিঁদুর পড়া কোন মা-বোনকে দেখলেই পাশের যে কোন লোক বলে ওঠে; ওই যে, নৌকায় ভোট দিতে যায়। তবুও ভাল, ঢাকায় ওদের ঘরে কেউ আগুন লাগায় না। কিংবা শহরের কোন মন্দির ভাঙ্গে না। আরো ভাল, লুন্ঠিত হয় না কোন মা-বোনের সম্ভ্রম !

ঋতু পরিবর্তনের মতো, পাঁচ বছর পর পর আসে এমন সুযোগ! ভাঙা-পোড়ার সময়। মাঝের সময়ে হয়, কম। সুযোগ বুঝে। প্রতিশোধ নিতে। কিংবা রাজনৈতিক ফায়দার মারপ্যাচে। ভাঙ্গ, আরো ভাঙ্গ। পোড়াও, বেশী করে পোড়াও। ভেঙে-পুড়িয়ে শেষ করে দাও, যেটুকু আছে অবশিষ্ট।



ওদের সংখ্যা, স্বাধীন বাংলাদেশে কত? মাত্র ৯.৬%। তাই কি তাঁদের বলা হয় (যদিও এটা গালি হিসাবেই ধরা হয়) সংখ্যালঘু ! তারমানে তোমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ ! তাহলে বাদ দাও, ওদের ভোটের হিসাব। পুড়িয়ে দিও না, ওদের মাথা গোঁজার ঠিকানা আর বেঁচে থাকার আশ্রয়। তোমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, ভোট দিয়ে নিয়ে আসো তোমাদের পছন্দের দল বা সরকার। শুধু ওদের ভোটেই কি সরকার নির্বাচিত হয়? হয় না। তাহলে কেন, ভোটের পর ওদের ওপর অত্যাচার করো !

আমি বাংলাদেশের স্বাধীন নাগরিক। অন্য কোন দেশের পরিসংখ্যান বা অন্য দেশে কি করলে কি হতো, বলতে চাই। আমি জানি, ওরা তোমার-আমার মতো স্বাধীন নাগরিক। ওদের বুকে রয়েছে একই লাল রক্ত! যে রক্ত বইছে পৃথিবীর সকল হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সহ সকল ধর্মের মানুষের বুকে।

শুধুশুধু সংখ্যালঘুর নামে, ধর্মের অপবাদে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে ওরা কেন সব হারাবে? ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পরের ধ্বংস যজ্ঞ ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে আছে। আবার ২০১৪ সালে আওয়ামী লিগ তথা জাতীয় ঐক্যের সরকারের সময় ইতিহাসের পাতায় পড়ল আরো একটু কালিমা।

ওদের ওপর হামলার জন্য শুধু সাম্প্রদায়িক বিষয় নয়, এর সাথে তাঁদের সম্পদ আর ব্যবসা লুট করার উদ্দেশ্য থাকে। ওদের উপর প্রতিনিয়ত যে হামলা ও নির্যাতন হচ্ছে, তা প্রমাণ করে স্বাধীনতার পর থেকে এখনো বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা জাগ্রত হয়নি।

৫ই জানুয়ারি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ঘটে গেল, তার জন্য কিন্তু প্রশাসন এবং আওয়ামী লিগ সরকারই দায়ী। কারণ এখন তো তারাই ক্ষমতায়। নির্বাচনের সময়ে দেশে প্রায় ১ লাখের বেশি আর্মি, র‌্যাব, পুলিশ নিয়োজিত ছিল। তবে কেন ঘটলো এই নৃশংস বর্বর হামলা? এর উত্তর কি ওরা পাবে !

প্রথমত ওদেরকে রক্ষা করার দায়িত্ব প্রতিবেশীর। তাই স্থানীয়দের মাঝে অসাম্প্রদায়িক চেতনা জাগ্রত করতে হবে। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পূর্ব পরিকল্পিত, তাই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার প্রশাসনকে আরো সর্তক অবস্থায় থাকতে হবে। কেননা এ সকল হামলা দেশের চিহ্নিত এলাকাসমূহে ঘটে। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে নাশকতাকারীদের বিচার কার্য সম্পন্ন করতে হবে। শুধু মামলা আর মামলার তারিখ পেছানোর খেলা দেখতে চাই না। চাই দ্রুত রায় কার্যকর।

বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হলে সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসী অপশক্তিকে কঠোর হাতে প্রতিহত করুক। যত দ্রুত সম্ভব সকল সন্ত্রাসী চক্রকে নির্মূল করতে হবে।

সর্বোপরি, এ সন্ত্রাস মোকাবেলায় সকল জনগণকে সম্পৃক্ত হতে হবে। সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধের প্রাচীর গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে, বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হবে। যা আমাদের স্বাধীন সোনার বাংলার জন্য লজ্জাকর।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:১১
৪৫টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×