নিজের ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে নিজের আপন ভাই বোন থাকার মত বালাই আর নাই। আর তা যদি হয় আমার মত মধ্যবিত্ত পরবারের কারো তাহলে ব্যাপারটা আরও সংকটময়। আমার বাকি তিন ভাই আমার ফেসবুক ফ্রেন্ড লিস্টে আছে বিধায় আমি মাঝে মাঝে আমার ভাবে ভর্তি স্ট্যাটাস সমূহ নিয়ে বেশ কিছু সমস্যায় পরে যায়। তারা আমার ভাবময় স্ট্যাটাস গুলা নিয়ে হাসাহাসি করে, মজা করে। ব্যাপারটা কিছুটা এম্বেরেসিং। তাদের এই হাসি তামাশা মাঝে মাঝে আমাকে যে সমস্যার সম্মুখীন করে সাহিত্যের ভাষায় তাকে বলে "মধ্যবিত্ত সংকট"।
বেশকিছু বছর আগে কোন এক পত্রিকায় "মধ্যবিত্ত সংকট" নামে একটা লেখা পরেছিলাম। যেখানে লেখক বলেছিলেন যে মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষেরা তাদের প্রেম, ভালবাসা, আবেগ ইত্যাদি বিষয়ক ব্যাপারগুলা খুব সহজে পরিবারের অন্যদের সাথে শেয়ার করতে পারেনা বা তাদের সোশালাইজেসন অভাবে হয় না যা উচ্চবিত্তরা খুব সহজে করতে পারে। আবার একই লেখায় বলা ছিল যে মধ্যবিত্তদের পারিবারিক বন্ধন উচ্চবিত্তদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হয়। পারিবারিক বন্ধন শক্তিশালী হলেও প্রেম, ভালবাসা, আবেগ বিষয়ক ব্যাপার গুলো মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েরা একে অন্যের থেকে এড়িয়ে যায়। তাই আমার ভাব সম্পন্ন স্ট্যাটাস নিয়ে আমি এরকম একটা সংকটেই পড়ে আছি যা ফেসবুকেও শেয়ার করা যাচ্ছে না।
আমার বড় আর মেজ ভাইয়া মাঝে মাঝে দু একখানা স্ট্যাটাস দিলেও আমার সেজ ভাইয়া মনে হয় ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খোলার পর একটা স্ট্যাটাস ও দেয়নি। আবার বড় ভাইয়া বা মেজ ভাইয়ার স্ট্যাটাসগুলো এক বা দুই লাইন এর বেশি হয়না আবার তেমন ভাবও থাকে না। যেমন "হোয়াট আ ক্যাচ বাই তামিম" "ওয়েল প্লেইড বায়ার্ন" "ওয়াও ইটজ নেইমার" এই টাইপের। এক লাইনে লেখা, এক লাইনেই শেষ।
তো স্ট্যাটাস দেয়া নিয়ে কথা হচ্ছিল আমার সেজ ভাইয়ার সাথে। তার স্ট্যাটাস না দেয়ার অনীহার ব্যাপারে জানতে চাইলাম। উত্তরে সে নগদে আমাকে অপমান করে দিয়ে বলল-
" আরে তোদের মত সকাল বিকাল স্ট্যাটাস চেঞ্জ করব নাকি? আমার একটাই স্ট্যাটাস আর সবসময় ওটা ধরে রাখার চেষ্টা করি। সকাল বিকাল কারা স্ট্যাটাস চেঞ্জ করে জানিস তো, তাই না?"
আমার সমস্যাটা বুঝেই মনে হয় জুকারবারগ ফেসবুক এ কাস্টমস অপশন টা নিয়ে আসছে।