বিশিষ্ট সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান তার ফেসবুকে লিখেছেন, সিইসি রকিব গালভরা পান খেয়ে বলেছেন,নির্বাচন সুস্ঠু।সবাই বলেছে, কেন্দ্র দখল,জালিয়াতি,সিল,বর্জনেই ভোটশেষ।সিইসির আমলনামা ভালো,কি বলেন?
প্রথম আলোরকলামিষ্ট ফারুক ওয়াসিফ লিখেছেন, সুষ্ঠু ভোটেরস্বার্থে আমাকে বের করে দিল এক পুলিশ। ধমক দিয়ে বলল, যা পারেন করেন। সাংবাদিকের কাজটাও ওনারা করলে আমরা তো বেকার হয়ে যাব। চীফ অব করেসপন্ডেন্ট, বাংলানিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের সাজেদা সুইটি লিখেছেন, সুইটির ল্যাপটপে চার্জ থাকবে, আর সে রিপোর্ট লিখবে না- এটা সম্ভব? হ্যাঁ, সম্ভব! কারণ কোনদিন এমনও আসে, যেদিন রিপোর্টারকে ভাবতে হয়, এ নিউজ আপ করে হাউজ বন্ধ হয়ে যাবে নাতো!? এবিসি রেডিওর রাজীব হাসান লিখেছেন, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে আমার ভোট দান সম্পন্ন হয়েছে।
আঙুলে কালি নাই ক্যান? গুড কোয়েশ্চন। আসলে আমি দক্ষিণের ভোটার, থাকি উত্তরে। সকালে ভার্সিটির এক রাজনৈতিক কর্মী ছোট ভাই ফোন দিয়া কইল, ভাই এই গরমের মধ্যে এতদূর থেকে আসবেন? তা ছাড়া বাস–সিএনজিও বন্ধ। খামোখা এতদূর আসার কষ্ট করবেন ক্যান? আপনার ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা আমি করতেছি।
আহারে, ভার্সিটির পোলারা নাকি এখন আর মুরুব্বিদের সম্মান করে না। কে বলছে এই কথা! আবেগে আমার চক্ষে পানি চলে আসল। বড় ভাইয়ের কষ্ট ছোট ভাই দেখবে না তো কে দেখবে? দুপুরে আবার ফোন, ‘ভাই দিয়া দিছি। টেনশন করবেন না। নিতু আপারটাও দিছি।’
আবার আমার চোখে জল। এবার স্মৃতি কাতরতায়। নিতু আর আমি ভার্সিটি জীবনের ‘বন্ধু’ ছিলাম। একসঙ্গে ভোটার তালিকায় নাম্ও লিখিয়েছিলাম। আহা কী সেই দিন ছিল!
হুটকরে মনে হলো, আমার ভোট দিছিস ভালো কথা। তাই বলে একজন নারী ভোটারেরও ভোট! ছোট ভাই লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিতে বলল, ‘ভাই, পোলাগো ভোট তো বহুদিছি। অনেক দিনের শখ আছিল মাইয়া গো একখান ভোট দিমু, হে হে হে...।’ না, ভাই, ভোট দান করিয়াছি ঠিকই। শেষ পর্যন্ত কালি লাগাইতে পারি নাই। তা ছাড়া এমনিতে ভোট নিয়ে যেসব খবর পাচ্ছি, তাতে আর নতুন করে ‘কালিমা’ লাগাইতে ইচ্ছাও করতেছে না। প্রথম আলোরসাবেক সাংবাদিক শাওগাত আলী সাগর তার ফেসবুকে লিখেছেন,
আমাদের বাইরে কারোই কোনো 'রেকর্ড' থাকবে না। অতীতের যতো'রেকর্ড' আছে সব ম্লান করে দিয়ে নতুন নতুন 'রেকর্ড' গড়তে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
সিনিয়র সাংবাদিক জাহিদ আল আমীন তার ফেসবুকে সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন এভাবে,
বেগম জিয়া ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন বর্জন করায় এতদিন যারা বিএনপিকে জ্ঞান দিতো,আজকের নির্বাচন তাদের জন্য একটা ভালো জবাব ! সকলের চোখেরসামনে দিনে-দুপুরে এমন প্রহসনের নির্বাচন মানুষ যুগ যুগ স্মরণ রাখবে! সিনিয়র সাংবাদিক ও নিউনেশন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার এহসানুল হক জসিম তার ফেসবুকে লিখেছে,
‘আল্লাহর কসম’! ‘আল্লাহর কসম’! ‘আল্লাহর কসম’! কোনবিশেষ রাজনৈতিক মতের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নয়; যা দেখেছি স্বচক্ষে তা-ই লিখছি। তাই কসম তিন বার। এমন নির্বাচন নজিরবিহীন। বয়স যদিও সিকি শতাব্দীর একটু বেশি, নিশ্চিত করে বলতে পারি-- একশত বছরের মধ্যে এমন নির্বাচন দেখেনি কেউ। তার আগের কথা না-ই বললাম। ১০০ বছর বললাম এ কারণে, ঐ সময়টুকু যারা দেখেছে তাদের অনেককে পেয়েছি। সকাল ৮:০০ টার আগে ভোটশেষ বহুকেন্দ্রে। আর ৯:০০ টার আগে তোইলেকশনই শেষ। কত কেন্দ্রে সরকার দলের লোকজনওগিয়ে দেখে তাদের ভোটদেওয়া হয়ে গেছে।
ফকিরাপুলের কোমরগলি-শুরুর আগেই দখল। সাংবাদিকদের ঠেলা-ধাক্কা দিয়ে বের। শান্তিনগর- কেন্দ্রে ঢুুকতেই বিরোধি প্রাথীর ৯ এজেন্ট গ্রেফতার। সিদ্ধেশ্বরী বালিকা স্কুল- কাউন্সিলর প্রার্থী নিজেই ভোট দিতে পারেননি। দেওয়া হয়ে গেছে তার আগে। ভিকারুন্নিসা স্কুল--৯ টার দিকে পোলিং অফিসার কন, কাস্ট হয়েছে ১০০ ভোট। কিন্তু দুই বাক্সে অন্তত ৫০০‘র কম ভোট দেখিনি। সেগুনবাগিচার রহিমা স্কুল- ৯:৩০, জানালা দিয়ে দেখা গেল মারা হচ্ছে সিল আর সিল। খিলগাও স্কুল- বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে শত শত ভোটার। কাউকে ঢুুকতে দেয়া হচ্ছেনা। ভেতরে ভিন্ন চিত্র। ১০ টার দিকে প্রিসাইডিং অফিসার কন, ‘কি করবো।আমার কাছ থেকে ১০০০ ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে বক্সে ঢোকানো হয়েছে’। অনেক কেন্দ্রে রাতেই ব্যালট ঢুুকানোর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল।
যা দেখেছি- লিখলাম। কোনকেন্দ্রে পাওয়া যাইনি বিরোধি প্রার্থীর এজেন্ট। প্রিসাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসাররা মারছেন সিল। পুলিশ করছে সহযোগিতা। চিরকুট দেখালেই বহিরাগতদের অবাধে ঢুুকতে দিচ্ছে পুলিশ। নয়া দিগন্তের সিনিয়র রিপোর্টার ও সাংবাদিক নেতা ফয়েজ উল্লাহ ভুইয়া তার ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন, ভোটনা প্রহসন!! ৫ জানুয়ারি আর ২৮ এপ্রিল এ কোনপাথক্য দেখলামনা। সবই একদলীয়। কেন্দ্র ভেতর বাহির সব পুলিশ, ছাত্রলীগের নিয়ন্ত্রনে। সাধারণ ভোটার নেই বললেই চলে। বাইরে মহড়া ্আর মহড়া। ঢাকা উত্তর ঘুরে যা দেখলাম। ইংরেজি দৈনিক দ্যা ইন্ডিপেন্ডেটের সিনিয়র সাংবাদিক তারেক মোরতাজা মাঠ ঘুরে লিখেছেন,
আম্লীগের রাজনীতির কাছে তুমরা দুগ্ধপোষ্য অপুষ্ট শিশু কিছুআবুল আছে ঢোলেরদুই পিঠে পিটায়। আহা তুমার এত মাথা ব্যথা ক্যান। বিম্পি ৫ জানুয়ারীর নিব্বাচনে যায় নাই--- এটা চ্রম ভুল ছিল। কানে কানে তুমরাই তোকইছো।বিশ্বাসও করছো---ইসি কি বাল ছিঁড়তো---নির্বাচনে গেলে ক্ষমতায় যেতো বিম্পি। এ সব তোতোমগো ইন্টারনাল বয়ান। আম্লীগের রাজনীতির কাছে যে তুমরা দুগ্ধপোষ্য অপুষ্ট শিশুসেইটা বোঝনের ক্ষমতা তোমাগো নাই। একবার ক্ষমতার স্বাদ পাইছিলা--- তাই ভাবছ ক্ষমতা কী মোহনীয়--- ! খালি উপভোগকরবা। ত্যাগ করতে শিখো। ত্যাগ ছাড়া আম্লীগও এত দূর আসতে পারতো না। বহুবছর ক্ষমতার বাইরে ছিল দলটি। সেইটাও ভাবো--- নগর নির্বাচনে বিম্পিকে তাড়িয়ে নেবার জন্য একজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীকে দোষদ্যায় কেউ। কেউ ডিহবাহির চরম পরম আলোচিত নেতার সমালোচনা করে। বলে সরকারের বাইরে থেকেও লোকটা সরকারেই আছে। আরেকজন বিম্পি অফিসে বসে আম্লীগের কাজ কর্ম করে বলে অভিযোগ।আরে ভাই তোমরা কই আছিলা। তারা এ সব জায়গায় যদি যাইতে পারে--- তুমি পারো নাই ক্যান। আম্লীগের টোপটা বোঝ নাই ক্যান। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরের সিটি নির্বাচনের ফল তোমাগো পক্ষে না দিলেও তারা পারত। কেন দিয়েছে--- দিয়েছে বড় ফলটা তারা খাবে। সংসদ নির্বাচনটা নিজেদের অধীনে দেয়াটা জায়েজ করবার জন্য। অকাট্য প্রমাণ তখন সবার সামনে-- তাজা। এ সব বোঝার মত তোমাদের মাথায় মালের অভাব। তাই তোমরা ফাঁদে পা দিছো।খরবদার জণগণকে জিম্মি কইরা আর রাজনীতির নোংরা খেলা খেলবা না। তোমরা আগে নিজেরা ঠিক হও; রাজনীাত বোঝো; দলের ভিত্রের দালাল মুক্ত করো--- আদর্শের জন্য রাজনীতি করো---তারপর আলাপে আইসো। যারা আমার এ আওয়াজে কষ্ট পাইছেন--- তারা আমারে ত্যাগ করেন। মনে রাখা ভালো--- আমি কারো সাতেও নাই পাঁচেও নাই। শান্তি চাই। তোমরা তোমাদের রাজনৈতিক দুরদর্শিতার অভাবে--- কৌ্শল নির্ধারণে ব্যর্থ হয়ে জণগণকে জিম্মি করবা--- তা হবে না। তা তুমি বাবা আম্লীগ হও; বিম্পি হও, জমাত -জাতীয়পার্টি--- বাম রাম যাই--- হও! শান্তি চাই। প্রকাশিতব্য আমাদের নতুন সময় এর বার্তা সম্পাদক মোর্শেদুল আলম চৌধুরী তার ফেসবুকে লিখেছেন, ঢাকা দক্ষিণের প্রায় ২৫টি কেন্দ্রের শ-খানেক বুথে গিয়ে ভোটগ্রহণের চিত্র দেখলাম। প্রিজাইডিং, পোলিং কর্মকর্তা ও এজেন্টদের সঙ্গে কথাও বললাম। কী দেখেছি- না বললে হয় না! এটিএন নিউজের সাংবাদিক এরমান সুমন লিখেছে, এই কেন্দ্রে ভোটদিতে এসে দেখলাম আমার ভোটদেয়া হয়ে গেছে। চরম দু:খ ও মজা পাইলাম প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার কামরুল হাসান সংক্ষিপ্ত কমেনটে লিখেছেন, হায়রে ভোট! জানার আগেই কাম হইয়া গ্যাছে। এখন রেজাল্ট জানা বাকি শীর্ষ নিউজের সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম আনসারি লিখেছেন, সেই রকম সুষ্ঠু-অবাধ ও নিরপেক্ষ সিটি নির্বাচন হচ্ছে দৈনিক আজকের পত্রিকার বিনোদন ইনচার্জ রাকিব সুমন তার ফেসবুকে লিখেছেন, আমার সহকর্মী সাংবাদিক শেখ মিলন রাজধানীর দক্ষিণ পাইকপাড়া মডেল একাডেমিতে ভোট দিতে গিয়ে জানলেন, তার ভোটকেউ একজন দিয়ে গেছেন। তার মানে ভোটে কারচুপি হয়েছে। বিঃ দ্রঃ কেউ আমাকে অন্ধ বিএনপি বা আওয়ামীলীগের সমর্থক ভেবে গালি দেবেন না। আমি অন্ধ আওয়ামীলীগ বা বিএনপির সমর্থন হতে চাইনি কখনো।একজন সচেতন দেশপ্রেমিক হওয়ার চেষ্টা করছি। বিশিষ্ট কলামিস্ট আলফাজ আনাম ফেসবুকে লিখেছেন,
সকাল সাড়ে এগারোটায় প্রেসক্লাবে দেখা হয় সংরক্ষিত নারী আসন ১৫ প্রার্থী রাশিদা আক্তার রানীর। ভোটকেন্দ্র ছেড়ে প্রেসক্লাবে কেন? প্রশ্ন করতেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। বললেন স্বাক্ষী নিয়ে এসেছি। লুঙ্গি গেঞ্জি পড়া ১২ বছরের কিশোর।নাম ইব্রাহিম খলিল। মির হাজারি বাগ কেন্দ্রে এই কিশোর৩১টি ভোটদিয়েছেন। হাতে অমোচনীয় কালি লাগানো। কেন ভোট দিলে জিজ্ঞেস করলেই বললেন এলাকার বড়ভাইরা ভোটদিতে বলেছে। আমি দিয়েছি। আপা আমাকে এখানে ডেকে এনেছেন। সহজ সরল এই কিশোরজানেই না সে একটি অপরাধ করেছে। রাশিদা আক্তার রানী ৪৮,৫০ ও ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী। তার মার্কা কেটলি। তার অভিযোগসকালে সব কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়। ফলে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাশিদা আক্তার বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর অনেক আগেই নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর ঘোষনা দেন। চ্যানেল২৪ এর রিপোর্টার মাকসুদ নবী লিখেছেন,
আলহামদুলিল্লাহ, ভোটকেন্দ্রের বাইরে থেকে শান্তিপূর্ণ ভোটউপভোগকরছি। কারণ সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজের মধ্যে ঢুকতে মানা। অাল্লাহই জানে এই অাইনটা কই অাছে!!
সূত্রঃ amarbangladesh-online.com/সাংবাদিকদের-ফেসবুকে-মঙ্গ/#.