somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"টিভি ক্যামেরার সামনের মেয়েটি" অধ:পতিত’, ‘খারাপ মেয়ে’ নয়... বরং একজন প্রতিবাদী মানুষ...

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্প্রতি সর্বজনশ্রদ্ধেয় "হাসনাত আব্দুল হাই"....প্রথম আলোতে প্রকাশিত "টিভি ক্যামেরার সামনের মেয়েটি" ছিল বাংলা নববর্ষ-১৪২০ বাংগালীর জন্য এক অনন্য উপহার...যেভাবে যৌনসুড়সুড়ি দিয়ে সাহিত্য রচনার মত স্পর্শকাতর বিষয়টি সম্পন্ন করেছেন, তা দেখে মনে হয়েছে....নিয়তিবাদী লেখক বলে তার যে পরিচয় ছিল সেটা অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে...

মনস্তাত্বিক থেকে শুরু করে পেশাগত দ্বন্ধ, সামাজিক পারিবারিক জটিলতা, রোমান্স, শাসক ও শোষিতের গল্প সবকিছুই শেখার আসে বর্ষীয়ান এই ঔপন্যাসিক এর কাছ থেকে..মানব চরিত্রের অন্ধকার ও নোংরা দিকটা তার লেখায় ফুটে উঠেছে বারবার... রাজনৈতিক উত্তাল বিষয়গুলি হয়ত সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা(তিনি সচিব পদে কর্মরত অবস্থায় অবসর নেন) ছিলেন বলে এ বিষয়গুলো এড়িয়ে গিয়েছেন।তবে তা পুষিয়ে দিয়েছেন সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের নানা দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা বা নির্যাতনের লেখা দিয়ে। কিন্তু "টিভি ক্যামেরার সামনের মেয়েটি" শিরোনামে লেখায় সীমা নামের যে চরিত্রটি অংকিত হয়েছে তা যে অগ্নিকণ্যা "লাকী" দের নিয়ে লেখা, সেটা খুবই কটুভাবে দৃশ্যমান...অগ্নিকন্যা লাকি কে নিয়ে আমি আগেও লিখেছি...বলেছি অনেক কথা....কিন্তু জমির চাচা আর মঞ্চের ছাত্রনেতারা, যারা 'প্রগতিশীলতার' ধারক এবং বাহক হিসেবে তার লেখায় উর্দ্দিষ্ট হয়েছেন, তাদের চরিত্র রুপায়নের সংগে সংগে তিনি গনজাগরন বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে গেছেন...সুর মিলিয়েছেন হেফাজতের সকল দাবীর সাথে....সুর মিলিয়েছেন....বিখ্যাত চটিসাহিত্যিক "রসময় গুপ্তের" সাথে....

তার এই লেখনি ও ভাবনাকে জনসম্মুখে "বাস্তব" রুপ দিতে প্রথম আলোর ভুমিকা অনস্বীকার্য..."আমার দেশ" এর সাময়িক অনুপস্থিতে "সাময়িক মুখপত্রহীন" পাঠকদের বিশ্বাস অর্জনের ও পত্রিকার বিক্রি বাড়ানোর এক চেস্টা হিসেবে সেটাকে সাধুবাদ জানানো যেতেই পারে...কিন্তু হাসনাত আবদুল হাইয়ের এই গল্পটিকে নোংরা অপপ্রচারণা থেকে আলাদা করে দেখার আক্ষরিক অর্থেই কোন সুযোগ নেই। গল্পকারের স্বাধীনতা কোন ভাবেই বাস্তব চলমান রাজনৈতিক সংগ্রামের নারী নেতা-কর্মীদের নামে নোংরা অপপ্রচারকে অনুমোদন করে না।

গণজাগরণ মঞ্চের নারী শ্লোগানদাতাদের ‘অধ:পতিত’, ‘খারাপ মেয়ে’ হিসেবে দেখার জন্য যে দৃষ্টিভংগি দরকার, তা এককালের "সবল এর বিরুদ্ধে দুর্বল এর লড়াই ও অত:পর জয়" এর কথক জনাব "হাসনাত আব্দুল হাই" কোথায় পেলেন সেটাই এখন ভাববার বিষয়....তার বক্তব্য শুধুমাত্র সুনির্দিষ্ট করে গণজাগরণ মঞ্চের, মিডিয়ার এবং রাজনীতিতে অংশগ্রহণকারী নারী কর্মীদেরকে অপমান করা, নোংরা অপবাদ দেয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং নিজ অবস্থান থেকে সংগ্রাম করে যাওয়া প্রতিটি নারীর প্রতি একটা মূর্তমান "কষাঘাত"...আবার "সম্পাদকীয় নীতিমালা" অনুসারে এরকম ইংগিতপূর্ণ এবং নোংরা অভিযোগ মূলক গল্প প্রথম আলোতে যথেষ্ট গুরুত্ব সহযোগে প্রকাশিত হলে সেটা কি ইংগিত করে, তার মর্মার্থও অনেকেরই জানা...

সমাজের সমকালীন চালচিত্র ফুটিয়ে তোলা বাইরেও একজন ঔপন্যাসিক এর সাধারণ দ্বায়িত্ব থাকে সেই চরিত্রটিকে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা পাঠকের কাছে সেটাকে বাস্তব এবং গ্রহণযোগ্য করে তুলে ধরার....যেটা "চটি সাহিত্যিক" বা "চটি প্রকাশক" দের থাকে না...ব্যাক্তিগতভাবে, আমি কথাসাহিত্যিক বা সমালোচক নই...শুধু "আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা" পাঠক গোষ্ঠীর একজন মাত্র...আমার সেই ক্ষুদ্র অবস্থান থেকেই আমি মনে করি যে, চিন্তা ভাবনায় প্রগ্রতিশীলতার নামে "নারীদের মক্ষীরাণী" হিসেবে উপস্থাপন করার "রগরগে" প্রচেষ্টা, পুরো নারী সমাজকে হেয় করার একটা সুক্ষ প্রয়াস...যেটা "রসময় গুপ্ত"দের মানায়...শ্রদ্ধেয় "হাসনাত আব্দুল হাই" এর মতো ঔপন্যাসিকদের নয়.....
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:০৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×