যদি এক মুহূর্তের জন্যও আমায় চাও,
সেটাই সত্যি...
অনুপম রয়ের অদ্ভুত একটা গান। গেয়েছেন রূপঙ্কর বাগচি। গত কয়েক দিন ধরে এই গানটাতে ব্যুদ হয়ে আছি। বিশেষ করে উপরের দুইটা লাইন মাথাটা কামড়ে খাচ্ছে। সত্যিই তো, যদি একটা মুহূর্তের জন্যও তুমি আমাকে চেয়ে থাকো, নিজের বলে মনে করে থাকো, সেটাই সত্যি!
এই ভাবনাটা জীবনকে দারুণ পরিপূর্ণ করে দেয়। একটা মুহূর্তের জন্য সত্যিই যদি আমাকে চেয়ে থাকো, তবে জীবনে আর কী চাওয়ার থাকতে পারে। এক মুহূর্তের পর আরো হাজার মুহূর্ত গেলো। মুহূর্তের ডানায় চড়ে বিদায় নিলো অগণন ঘুমহীন রাত। তারপরও আমার কষ্ট লাগে না। একটা ভাবনাই সব কষ্টকে হাওয়া করে দেয়- তুমি তো একটা মুহূর্তের জন্য হলেও আমায় চেয়েছিলে। আহা! সত্যিই তুমি আমায় চেয়েছিলে।
সে দিন আকাশের মন খারাপ ছিলো সারাদিন। সে দিন সারাদিন তোমাকে আমার প্রথম দেখার মুগ্ধতা। সে দিন আসবে বলেই জন্ম হয়েছিলো পৃথিবীর। সে দিনটা আমার হবে বলেই সূর্য উঠেছিলো।
অনুপমের এই গানটা পাগল করে দেয়, জানো?
সেই দিনটাতেই তো তুমি আমায় চেয়েছিলে! আমার স্পষ্ট মনে আছে। কতো দিন হয়ে গেলো। তারপরও স্মৃতিতে ধুলো জমেনি একটুও। বিস্মৃতির মরিচীকা পড়েনি একটুও। আমার খুব ভালো করে মনে আছে। তুমি বলেছিলে আমাকে চাও। তুমি বলেছিলে আমি মানিয়ে নিতে পারি তোমার জীবনে।
অনুপমের গানে ব্যুদ হয়ে আছি। অনুপমের গানে ব্যুদ হয়ে থাকি। তোমার আমার বিচ্ছেদের মুহূর্তবেলায়-ই অনুপমের আবির্ভাব। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও... তখন বাঙালির গান। কলকাতার তো বটেই, বাংলাদেশেরও।
আমাকে আমার মতো থাকতে দাও... শুনতেই তোমার চলে দেখেছিলাম। ভেঙে পড়ে যেতে দেখেছিলাম বিশ্বাসের পাহাড়টা। অনুপমের গানে ডুবে থেকেই বুঝতে পারিনি বুকের গভীরে সুগভীর একটা খাদ হয়ে গেলো। যে খাদ শতবার জন্ম নিলেও ভরে উঠবে না। যে খাদ চিরকাল খাদ হয়ে থাকবে।
অনুপমের গান শুনতে শুনতে আমিও কয়েকটা গান লেখে ফেলেছি, জানো?
তুমি জানলে খুব খুশি হতে সম্ভবত। গানের বাজারে আমার লেখা অন্তত তিনটা গান আছে এখন। সামনে আরো আসবে। এই ঈদেই হয়তো দশটা গান আসবে পৃথিবীতে। যে গানগুলোর কথা আমার মাথায় এসেছে। ভাবতে পারো কতোটা উত্তেজনায় কাঁপার কথা আমার!
একটা সময় দিন এমন ছিলো, আমি তোমাকে ভালোবাসতাম। অভিমান করে ভালোবাসতাম। রাগ করে ভালোবাসতাম। ভালো বাসতে বাসতে ভালোবাসতাম। তোমার সাথে সাথে গানের দুর্নিবার ভালোবাসাও জন্ম নেয় মনে। তুমি আর গান এই ছিলো জীবন। জীবনের বাইরেও কিন্তু কিছু মুহূর্ত থাকে। সেই মুহূর্তদের বেঁচে দিতাম বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের কাছে। ভালোই চলছিলো সব। সব ভালো পরে মন্দ থাকে, সব মন্দের পর ভালো থাকে। আমার ছিলো প্রথমটা। হঠাৎ করে ভালোরা শেষ হয়ে শুরু হলো মন্দের চোরাস্রোত।
যে স্রোত এখনো আছে। যে স্রোত আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মহাকালের অন্তীম সীমান্তে। আর আমার কানের গুজে রাখা মাইকে বাজছে.... যদি এক মুহূর্তের জন্যও আমায় চাও, সেটাই সত্যি...
আমি জানি তুমি আমায় চেয়েছিলে। তুমি চেয়েছিলে বলেই তুমি চলে যাওয়ার কষ্টটাকে বুকে কবর দিয়ে ফেলেছি। তুমি আমায় চেয়েছিলে বলেই আমার আর কিছু চাওয়ার নেই। আমার আর বলার নেই যে, এখন কেনো আমাকে চাও না?