এই লেখাটা তোমার জন্য।
তুমি মানে যার কাছে আমি সব সময় আড়ালে পড়ে থাকা মানুষ। কখনো হয়তো কাচের জানালার আড়ালে। কখনো আমাদের মাঝখানে বুকটান করে দাঁড়িয়ে যায় প্রকাণ্ড ফ্লাইওভার ব্রিজ। কখনো ছুটে যায় একেকটা সুদীর্ঘ ট্রেন। আমি তোমার চোখের আড়ালে পড়ে থাকি। তারপরও এই লেখাটা তোমার জন্য।
এই লেখাটা আমি তোমার জন্য লিখছি। কারণ তুমি লম্বা একটা সময় ধরে আমার ভাবনায় জড়িয়ে আছো। কিন্তু তোমার জড়িয়ে থাকা বড্ড অনৈতিক। তাই তোমাকে নিয়ে লিখতে আমার দ্বিধা হয়। সংকোচ এবং অস্বস্তি হয়।
তারপরও নানামাত্রিক দ্বিধা, চাপা সংকোচ ও নিদারুণ অস্বস্তি নিয়ে লেখাটা লিখছি। আমাকে তুমি চিনতে পারছো তো? আমি সেই ছেলেটা, যে তোমাকে নিয়ে একা সিএনজিতে উঠতে পেরেছিলো একবার। তোমার হাত ধরতে চাওয়ার সাহস দেখাতে পেরেছিলো, সেটাও ওই একবারই।
আমার আসলে বড়জোর হাত ধরতে চাওয়ারই সাহস ছিলো। এর বেশি সাহসী আমি কখনো হয়ে উঠতে পারিনি। আমার সিস্টেমে এর চেয়ে বেশি সাহস দেয়া হয়নি। কেনো দেয়া হয়নি, তা আমি জানি না।
যেমন এই মুহূর্তে আমি জানি না, লেখাটা তোমার নজরে পড়বে কিনা। পড়লেও আমি যে তোমাকে ‘তুমি তুমি’ করে সম্বোধন করছি, এটা তোমার পছন্দ হবে না। তুমি নিতান্তই অনিচ্ছায় এবং চরম অনীহা নিয়ে লেখাটা পড়বে কিনা, সেটাও আমি জানি না।
আমার না জানার তালিকাটা বেশ বড়। এই লেখায় সে তালিকা জুড়ে দিতে চাই না।
আজ পর্যন্ত বেশ কয়েকটা দিন গেলো, যে দিনগুলোতে আমি তোমাকে ভুলে থাকতে চেয়েছি। আমার একটা পুরোনো প্রেম আছে। নাছোড়বান্দা প্রেম। যা থেকে আমি বের হতে পারি না। সেটা তুমি জানো এবং জানো বলেই তোমার প্রেমে যে আমি পড়েছি বা পড়তে পারি, সেটা তুমি বিশ্বাস করো না।
আমি কখনো কারো বিশ্বাস ভাঙাতে পারি না। কারো বিশ্বাসের উপর কোনো রকম নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার শক্তি আমার নেই। খুব বেশি সাহস এবং অন্যের বিশ্বাসের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার শক্তি আমাকে দেয়া হয়নি। কেনো দেয়া হয়নি, তা আমি জানি না।
যা বলছিলাম, গত কয়েকটা দিন আমি তোমাকে ভুলে থাকতে চেয়েছি। কারণ তুমি বিশ্বাস করো না যে, আমি সারাদিনে বহুবার তোমার কথা মনে করি। অত্যন্ত সচেতন কল্পনায় তোমার সঙ্গে হাত ধরে হাঁটি এবং সে কথা তোমাকে মাঝে মাঝে বলেও দেই। কিন্তু তুমি এসব সহ্য করতে পারো না। অনভ্যস্ততার ভান করো।
‘ভান করো’ শব্দ দুটো পড়ে তোমার কপট অভিমান হলো। তাই না? তুমি এখন এই লেখাটা আর পড়তে চাইছো না। যেহেতু এতো দূর পড়েই ফেলেছো, অভিমানটা আপাতত করো না। আর কয়েকটা লাইন পড়ো। বড়জোর আর একশ শব্দ অন্তত পড়ো।
যা বলছিলাম, গত কয়েকটা দিন আমি তোমাকে ভুলে থাকতে চেয়েছি। পারিনি। প্রতিদিনই মনে পড়েছে। বারবার মনে পড়েছে। তবে আমি এবার, কিভাবে কিভাবে যেনো এই মনে পড়াকে দমন করতে পেরেছি এবং সামনেও এটা পারতে চাই। জানি না পারবো কিনা। আমি আসলে অনেক কিছুই জানি না।
যাও একশ শব্দের কমেই আজ ছেড়ে দিলাম!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১১