somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চাঁদের আলোয় অধরা, মিহি বাতাসে মাধবী......!! (নো ম্যান্স ল্যান্ড-৮)

২৪ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অরণ্য একটি লজে রুম খুঁজে নিয়ে, একটু ফ্রেস হয়েই আবার বেরিয়ে পড়লো কিছু খাবারের খোঁজে। ফিরে এলো কিছু সময় পরে। রুমে এসেই বুঁদ হয়ে গেল ফেসবুকের মেসেঞ্জারে। এদিকে অধরা আর অন্যদিকে অরণ্যর বন্ধুরা। কথা বলছে... তিন তলার হোটেল রুমের পর্দা সরিয়ে জানালা খুলে দিল।

জানালার পর্দা সরাতেই এক মুঠো জ্যোৎস্না এসে পড়লো ভরা চাঁদের বুক থেকে! অরণ্যর ধবধবে সাদা বিছানায়। যা দেখে নিজের অজান্তেই হেসে ফেলল অরণ্য! আর মনে মনে ভাবলো এ যেন জ্যোৎস্না নয় অধরার হাসি, অধরার উপস্থিতি, এ যেন অধরারই আলো, চাঁদের আলো হয়ে এসে পড়েছে অরণ্যর বিছানায়! ভেসে উঠলো অধরার নির্মল আর নিস্পাস হাসির মুখখানি!

চাঁদের আলোয় অধরার সাথে এলোমেলো কথা বলছিল অরণ্য, হুট করে জানালা দিয়ে ঢুকে পড়লো এক মুঠো ঝিরঝিরেঠাণ্ডা মাতাল বাতাস, অরণ্যর গায়ে এসে ছুঁয়ে দিল, দিল এক চেনা আবেশে জড়িয়ে, যেন মাধবীর মায়াবী স্পর্শ! সারাদিন মাধবীর সাথে-সাথে থেকে, পাশে বসে, ছাদে বসে, ছুঁয়ে-ছুঁয়ে দিয়েছে অরণ্যকে! ভাগাভাগি করেছে সাতরঙা সকাল-দুপুর-বিকেল আর সন্ধা!

সারাদিন ছিল মাধবীর সাথে, সেই সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত, কিন্তু একটি বারের জন্যও তাকিয়ে দেখেনি মাধবীর মুখের দিকে! কারণ অরণ্য সারাদিন আচ্ছন্ন ছিল ওর অন্যরকম প্রেম নীল-সবুজ পাহাড়ে, রঙিন মেঘে, ঘন জঙ্গলে, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি ঝর্ণায় ভিজে যাওয়া উঁচুনিচু রাস্তায়, চা বাগানের সবুজ সমুদ্রে আর উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া বাতাসে! কিন্তুএই রাতের ছুটে এসে রুমে ঢুঁকে পড়া বাতাসের ছুঁয়ে যাওয়াতে মনে পড়লো মাধবীর কথা।

এই প্রথম ভেসে উঠলো মাধবীর মুখ, মাধবীর উড়ে যাওয়া, অরণ্যকে বারে-বারে ছুঁয়ে যাওয়া নরম কোমল চুল! মাধবীর ভীষণ-ভীষণ মিষ্টি আর আদুরে কণ্ঠ! দ্রুত কিন্তু আলতো পথ চলা, কোন আদেশ নয়, কিন্তু কেমন যেন মায়া জড়ানো কথা বলা! যা ফেলে দেয়া যায়না, এড়িয়ে যাওয়ার কারণ থাকেনা, শুনতে হয়, মানতে হয়, মেনে নিতেই হয়! একটা অদ্ভুত ক্ষমতা আছে মাধবীর ওর প্রতি শ্রদ্ধা জাগার, মুগ্ধ হবার আর খুব কাছের বন্ধু হবার...!

কতটা প্রাণবন্ত, কিন্তু কোন বাড়াবাড়ি নেই, অসাধারণ সামরথ সব কিছুর সাথে মানিয়ে নেবার, কিন্তু কোন অভিযোগ নেই। কোন প্রস্তুতি ছাড়াই কি পরিমাণ কষ্ট করতে পারে, কিন্তু কোন ক্লান্তি নেই। কত সহজেই মানুষকে আপন করতে পারে, কিন্তু কোন স্বার্থ নেই। কতটা বন্ধু পরায়ণ হলে, সারাটাদিন বন্ধুর-বন্ধুর জন্য ব্যায় করতে পারে, কিন্তু কোন চাওয়া নেই। কি সহজেই নিজেকে উৎসর্গ করতে পারে, কিন্তু কোন অভিমান নেই! অদ্ভুত একটা মেয়ে মাধবী!

মিষ্টি, শান্ত, ভদ্র আর ওর নামের সাথে একবারেই মানিয়ে যাওয়া নাম মাধবী! মনে-মনে অনেক-অনেক কৃতজ্ঞ হল মাধবীর প্রতি, একটা দারুণ ভালোলাগার অনুভূতি হল অরণ্যর, মাধবীর নিবেদন আর আন্তরিক বন্ধুত্তের প্রতি। অসম্ভব ভালো একটা মেয়ে মাধবী! অরণ্য অধরার জন্য একটা গিফট ভেবে রেখেছিল, ফিরে আসার সময় কিনে দেবে বলে। তেমন বাজেট রেখেছে নিজের কাছে, কিন্তু এখন তো একটা গিফট কিনলে আর হবেনা, এবার তো গিফট কিনতে হবে দুটি! একটি তো অধরার জন্য বরাদ্দ করাই আছে, আর একটি অবশ্যই মাধবীর জন্য! এবং একই গিফট হবে অধরা আর মাধবীর!

নিশ্চয়ই অধরা কিছু মনে করবেনা এতে? মনে মনে ভাবলো অরণ্য...! নাহ কিছুই মনে করবে বলে মনে হয়না, ওরা এমন নয়, হতেই পারেনা, এতোটা ছোট আর সংকুচিত মানসিকতার হবেনা বলেই অরণ্যর বিশ্বাস। তবুও দ্বিধা কাঁটাতে আবার মেসেঞ্জারে নক করলো অধরাকে। পেয়েও গেল একটু পরেই। কোন রকম দ্বিধা না নিয়েই সরাসরি জিজ্ঞাসা করলো অধরাকে, যে মাধবীকে যদি একটি গিফট দিতে চায় অরণ্য, ওর সারাদিনের নিখাদ বন্ধুত্তের জন্য, ওর অমায়িক উপকারের জন্য, ওর একান্ত আন্তরিকতার জন্য, কিছু মনে করবে কিনা অধরা?

প্রশ্নই আসেনা, কিসের আপত্তি, কেন আপত্তি, কি যৌক্তিকতা থাকতে পারে কোন রকম আপত্তির বা কিছু মনে করার? অরণ্য অবশ্যই দিতে পারে মাধবীকে একটা গিফট। যা খুশি তাই! এমনকি, যদি দিতে চাও খুব-খুব প্রিয় কিছুও!

ও এমনই মায়াবী আর মোহময়ী একটি মেয়ে যে ওকে তুমি যা খুশি দিতে পারো, আমার কখনো কোন আপত্তি থাকবেনা। যাক বেশ প্রশন্ন হল অরণ্যর মন। তাই ঠিক করে রাখলো কাল সকালে দুজনকে সাথে নিয়েই কিনবে দুটি গিফট, একই রকম, আর দুজনের জন্যই.....

ভালোলাগলো অরণ্যর খুব, অধরার উদারতা, মাধবীর জন্য মায়া-আন্তরিকতা আর অরণ্যর সাথে একাত্ততা। এরপর, অধরার চাঁদের আলো জড়িয়ে আর মাধবীর মায়া মেখে ঘুমিয়ে গেল অরণ্য। আগামীকাল এই যাত্রার শেষ দিনে, অধরা আর মাধবীর সাথে আরও একটা সকাল-দুপুর কাটানোর অপেক্ষায়......!

আর মাধবীর ভাবনাটা কিরকম? জানা যাবে

নানা রঙের মেঘের খেলায়.... (নো ম্যান্স ল্যান্ড-৯)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১৬ সকাল ১১:০৩
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×