somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইবাদতরে গুরুত্ব

০৬ ই মে, ২০১২ বিকাল ৪:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইবাদতের গুরুত্ব
বিসমিল্লাহহির রহমানির রহীম
নাহমাদুহু ও নুসাল্লী আলা রাসূলিহিল কারীম
মানব জীবনের লক্ষ্য কী এবং এ পথিবীতে আগমনের উদ্দেশ্য কী, তা না জানা পর্যন্ত মানব জীবনে ইবাদতের গুরুত্ব কতটুকু তা আসলে সঠিকভাবে অনুধাবন করা সম্ভব নয়। এ বিশ্ব চরাচরে মানবের রয়েছে এক অসাধারণ অবস্থান। মানুষ সৃষ্টিগতভাবে দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও আকাশ ও পৃথিবীর সবকিছুর উপর সে রাজত্ব করে। এ বিশাল-বিস্তৃত সৃষ্টিজগতের প্রতিটি কণা তার সেবায় নিয়োজিত। মানুষের উদরপূর্তির জন্যে শস্য উৎপাদনের প্রয়োজন হলে সৃষ্টিজগতের মেশিনারির প্রত্যেকটি যন্ত্রাংশ তার সাহায্যের জন্যে গতিশীল হয়ে ওঠে। মানুষের চেয়ে অনেকগুণ বেশি শক্তির অধিকারী পশু তার অনুগত হয়ে জমি চাষ করে। কিশলয় চারা এবং চারা বৃক্ষে পরিণত হতে তাপের প্রয়োজন। সূর্য তখন রশ্মি বিস্তার করে । পানির প্রয়োজন হলে মেঘমালা তার পুঁজি বিলিয়ে দেয়। বাতাসের প্রয়োজন হলে বায়ু দোলা দিয়ে তার বৃদ্ধি ঘটায় । মোটকথা, বিশ্বব্রম্মান্ডের যাবতীয় শক্তি মানুষের ক্ষুধা নিবারণ এবং তার জীবনের উপাদান সরবরাহের জন্য নিজের সম্পূর্ন ক্ষমতা ব্যয় করে ।
এটিতো একটি উদাহরণ ছিলো মাত্র। আপনি আপনার চতুর্দিকে চোখ বুলালে দেখতে পাবেন আসমান থেকে নিয়ে জমিন পর্যন্ত নিয়ে আল্লাহর নিয়োজিত সমস্ত কর্মী আপনার সেবায় রত আছে।
এখন প্রশ্ন জাগে যে, এমনটি হলো কেন? আপনার মধ্যে এমন কি বৈশিষ্ঠ রয়েছে যে কারনে এ বিশ্ব আপনার খেদমত করে থাকে। অথচ আপনার থেকে সে কোন খেদমত নেয় না।
একথার উপর যদি আপনার ঈমান থেকে থাকে যে, সৃষ্টি জগতের প্রতিটি কনার সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতাআলা। তিনিই এ জগতকে আপনার সেবায় নিয়োজিত করেছেন। তাহলে এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর অনুধাবন করতে আপনার বিলম্ব হবে না। সমগ্র বিশ্বকে আপনার সেবায় নিয়োজিত করা হয়েছে যে, আপনি অনেক উচু ও অতি মহান প্রতিটি কাজে আদিষ্ট। আর সেই মহান কাজটিই হলো ইবাদত ও বন্দেগী। এ কাজটি আমাদের জীবণের লক্ষ। এ উদ্দেশ্যে আমাদেরকে প্রেরণ করা হয়েছে। কুরআন কারীমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন - “আমি জ্বীন ও ইনসানকে শুধু আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি ” ।
কুরআনে কারিমের এ বাণী ও তার উপরোল্লেখিত এ ব্যখ্যা দ্বরা ইবাদতের গুরুত্ব সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে। ইবাদত যেহেতু আমাদের জীবনের লক্ষ্য তাই তা গুরুত্বপূর্ন । ইবাদত এজন্য গুরুত্বপূর্ন যে, এ উদ্দেশ্যে আমাদের দুনিয়াতে আসা। ইবাদত এজন্য গুরুত্বপূর্ন যে, তা আমাদের আশরাফুল মাখলুকাত হওয়ার মূল উপাদান । এ শক্তিবলেই আমরা বিশ্ব ব্রম্মান্ডের সবকিছু থেকেই খেদমত নিয়ে থাকি। ইবাদতের এই দায়িত্ব যদি আমরা পুরো না করি তাহলে আমাদের দৃষ্টান্ত সেই চাকরের ন্যয় যে তার মালিক থেকে পুরো বেতন উসূল করে, তার দেওয়া সুযোগ সুবিধা পুরোটাই ভোগ করে কিন্তু যে মনিবই যখন তাকে কোন কাজে হুকুম দেয় সে তা স্পষ্ট ভাষায় পালন করতে অস্বীকার করে। এ চাকর যেমন শাস্তিযোগ্য, তেমনিভাবে সে ব্যক্তিও শাস্তির উপযুক্ত । যে জগতের সমস্ত নিয়ামত ভোগ করে কিন্তু ইবাদতের দ্বায়িত্ব পালন করেনা। অপরদিকে যে ব্যক্তি সবগুলো ইবাদত সঠিকভাবে করে তার দৃষ্টান্ত সেই অনুগত চাকরের ন্যয় যার অরাম বিরামেও মালিক খুশী হয়ে থাকে। যেমন অবসর সময়ে চাকরের কাজ না করার এবং তার আরাম ও বিশ্রাম ও চাকরির মধ্যে পরিগনিত হয়। এমনিভাবে একজন অনুগত বান্দার ইবাদত শুধুমাত্র নামায রোযা হয়ে হ্জ্ব যাকাতের মধ্যে সীমাŸদ্ধ থাকেনা । বরং তার জীবনের প্রতিটি পরিক্ষা ইবাদত বলে পরিগনিত হয়। হাদীস শরীফে এসেছে যে এমন ব্যক্তি তার বউ-বাচ্চার জন্য যে উপার্যন করে এজন্যও সে সওয়াব পেয়ে থাকে। তার ঘুমানো জাগ্রত হওয়া এমনকি হাসি তামাশা বন্দেগী বলে গণ্য হয়। প্রকৃত পক্ষে বন্দেগীর উদ্দেশ্য হলো মানুষ নিজেকে আল্লাহর আজ্ঞাধীন মনে করে নিজের পুরো জীবনকে তার বিধান মোতাবেক চালাবে। তাই ইবাদত বিশেষ কোন জায়গা , বিশেষ কোন সময় বা বিশেষ কোন বিশেষ কোন কাজের সাথে নির্ধারিত নয়। আপনি নিজের জীবনকে যদি আল্লাহর হুকুমের অধীন বানান, তাহলে আপনার জীবনের প্রত্যেকটি কাজ ইবাদত বলে গন্য হয়। আপনার ব্যবসা চাকরি এমনকি বৈধ বিনোদনও ইবাদত। তবে শর্ত হলো তা আল্লাহর হুকুম মত ও সৎ নিয়তে হতে হবে।
কোন জাতির বেশির ভাগ সদস্য যখন তাদের সামগ্রিক জীবনকে এভাবে ইবাদত বানিয়ে নেয় তখন জীবনের সকল সফলতা তাদের পদচুম্বন করে। ফলে আল্লাহর সে ওয়াদা পরিপূর্ন হয়, কুরআন কারিম যার ঘোষনা দিয়েছে -“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে ও সৎ কর্ম করেছে, আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদেরকে পৃথিবীতে নিজ খলিফা বানাবেন , যেমন খলিফা বানিয়েছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তাদের জন্য তিনি সেই দ্বীনকে অবশ্যই প্রতিষ্ঠা দান করবেন, তার পরিবর্তে তাদেরকে অবশ্যই নিরাপত্তা দান করবেন। তারা আমার ইবাদত করবে, আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না, এরপরও যারা অকৃতজ্ঞ, তারাই অবাধ্য সাব্যস্ত হবে।” ইবাদতে আবেগ উদ্দীপনা উদ্দেশ্য নয়। ইসলাহী মাজালিশ (৩৩৯-৩৫০)
আমলের পার্থিব ফলাফল (৪০৭-৪১৬)
((বিদ্রঃ হযরত মাওলনা জালালউদ্দীন সাহেবের বই "ইসলামী আকিদা-বিশ্বাস ২য় খন্ড http://www.maktabatulashraf.net" থেকে নেয়া।Please visit http://www.thevoiceof islam.weebly.com )
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ২:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×