somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যারা আত্মহত্যা করতে ইচ্ছা পোষণ করে কিংবা সেরকম কিছু যদি কারো সম্পর্কে মনেহয় তাদের সাহায্য করুন

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমরা তো রক্ত মাংশের মানুষ। রক্ত মাংশের মানুষ বলেই বাইরে থেকে আঘাত পেলে, কোন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে কষ্ট পাই, ব্যাথা অনুভব করি এটা হচ্ছে শারীরিক ব্যাথা।
জীবন, নানা রকম রোগ ব্যাধি ব্যাথা বেদনা জড়া ইত্যাদির সমন্বয়।
এই ব্যাপারটাও সত্যি যে শরীরের যেমন ব্যাথা বেদনা আছে রোগ আছে তেমনি মনের ও ব্যাথা বেদনা রোগ শোক আছে।
শারীরিক রোগ যদি শরীর অকেজো করে দিতে পারে মনের রোগ ও মন অকেজো করে দিতে পারে আর এই অতিরিক্ত মনের ব্যাধির পরিণাম হল আত্মহত্যা এটা আমার নিজস্ব থিওরি।

প্রতিদিন প্রতিনিয়ত এই আত্মহত্যার ঘটনা বেড়েই চলেছে।
বিশ্বস্বাস্থ সংস্থার জরিপে বলা হয়েছে, বিশ্বে প্রতি ৩৩ সেকেন্ডে একজন এবং প্রতিদিন তিন হাজার মানুষ আত্মহত্যা করে। সেই হিসাবে বছরে আত্মহত্যা করে ১১ লাখ লোক। প্রতিদিন গড়ে ৬০ হাজার জন আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং প্রায় তিন হাজার মানুষ সফল হয়। এছাড়া প্রায় ৪০ লাখ টিনএজার প্রতিবছর আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং এক লাখ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। যুদ্ধ, টেরোরিস্ট বা সন্ত্রাসী আক্রমণ কিংবা খুনের শিকার হয়েও আত্মহত্যার সমপরিমাণ মানুষ মারা যায় না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০০০ থেকে ২০১২ পর্যন্ত ১৭০টি সদস্য রাষ্ট্রের উপর পরিচালিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে আত্মহত্যা প্রবণতার দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। বাংলাদেশে গত সাত বছরে ৭৩ হাজার তিনশ’ ৮৯ জন মানুষ আত্মহত্যা করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৮ সালে ১০ হাজার ৫৯০ জন, ২০০৯ সালে ১০ হাজার ১০ জন, ২০১০ সালে ১০ হাজার ৭৮৮ জন, ২০১১ সালে ১০ হাজার ৩২৩ জন, ২০১২ সালে ১০ হাজার ১৬৭ জন, ২০১৩ সালে ১০ হাজার ১২৯ জন এবং ২০১৪ সালে ১১ হাজার ৯৪ জন নারী পুরুষ দেশে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে।
ডব্লিউএইচও পরিসংখ্যান মতে প্রতিদিন গড়ে আত্মহত্যা করেছে ২৮ জন। আর বাংলাদেশ পুলিশ সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন গড়ে ২৮ জন আত্মহত্যা করছে। এদের বড় একটা অংশের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। প্রতিবছর গড়ে আত্মহত্যা করছে ১০ হাজার ৪শ’ ৮৪ জন। এ ছাড়া মাসে গড়ে ৪৭৪ জন আত্মহত্যা করছে। তথ্য সূত্র ইন্টারনেট।

ছোট বেলায় আমি প্রথম যে লাশ দেখেছিলাম সেটি ছিল আত্মহত্যার।
ব্যাপারটা ছিল অনেক দুঃখের অনেক অন্যরকম তীব্র ভয়ের অনেকটা ভয়ঙ্কর বিষাদের, এই ঘটনা আমাকে অনেক ভীতু করে দিয়েছিল অনেক অনেক বছর।
আমার জীবনের প্রথম স্কুল ছিল একটি সরকারী স্কুল, আমরা এলাকার লোকাল বাচ্চাসহ অতি নিম্নবিত্ত বাচ্চারাও সেই স্কুলে পড়তে আসতো এবং তাদের প্রায় সবাই আমার ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিলো।
তাদের মধ্যে একজন ছিল শিখা ওর গায়ের রঙ ছিল কালো, এত কালো মেয়ে সচরাচর দেখা যায় না কিন্তু আমি বলতে পারি ও আমার দেখা সব থেকে সুন্দরী মেয়েদের একজন, ও আসলে ছিল একটা সত্যিকারের নিস্পাপ পরী। সে শুকনা মতন ছোট একটা লক্ষ্মী মেয়ে, রোজ পলিথিনে বই পেঁচিয়ে খালি পায়ে একটা ছাই রঙের জামা পরে স্কুলে আসতো,
একদিন সেই পরী আমাকে জানায় স্কুলে আসার পথে সে গলায় ফাঁস দেয়া লাশ দেখে আসছে আমি দেখতে যেতে রাজি কিনা, স্কুলের কাছাকাছি টিফিনের সময় দৌড় দিয়া দেখে আসা যাবে।

তারপর টিফিনের সময় শিখা আমার হাত ধরে নিয়ে যেতে যেতে বলল বেডা গলায় দরি দিয়া মইরা গেছে সে একটা মাইয়ারে ভালবাসতো মাইয়াডার গতকাল রাইতে আরেকজনের সাথে বিয়া হইয়া গেছে তো তাই সে আত্মহত্যা করছে। আমি আত্মহত্যা জিনিশটা খুবই মজার কিছু ভাবতে ভাবতে শিখার হাত ধরে লাশ দেখতে গেলাম, লাশ মানে নিশ্চয়ই মজার কিছু!!
একটা সবুজ মাঠ পেরিয়ে খানিকটা রাস্তা দিয়ে হেঁটে যখন লাশের কাছে পৌছালাম তখন রোদ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।
শিখা কাছাকাছি যেতে যেতে বলল ওই তো লাশ আসো আসো দেখি, মুখের উপর তার চাদর ছিলনা, যে দুজন লোক কবর খুঁড়ছিল তারা ক্লান্ত হাঁপাচ্ছে রোদের তাপে।

দেখলাম সবুজ ঘাসের উপর ফেলে রাখা এক যুবকের লাশ, আমার জীবনে দেখা প্রথম লাশ, আমি এখনো মনে করতে পারি তার ঠোট ছিল কালচে, মুখে বসন্তের দাগ, উঁচু কপালে মাথা ভর্তি ঘনকালো চুল, গলায় কালো আর গভীর কালচে দা্‌গ, জিভ বেরিয়ে আছে সেটা চাদর দিয়ে পেঁচিয়ে গলায় জড়িয়ে দিয়েছে কেউ একজন।
এরকম দৃশ্য বেশিক্ষন সহ্য করতে যে পারবোনা সেটাই স্বাভাবিক, চিৎকার করে কেঁদে দেয়ায় এক মহিলা কোত্থেকে এসে আমাকে কোলে নিয়ে অন্য হাত দিয়ে আমার চোখ চেপে ধরে লোকগুলোকে লাশ অমন করে রাখার জন্য ধমক দেয়ায় তারা অতিরিক্ত বিরক্তি নিয়ে জানিয়েছিলো যে আত্মহত্যা করা লাশ এইভাবেই ফেলে রাখতে হয়! কবর দিচ্ছে এইটাই তো বেশি।

যারা বেঁচে থাকতে চায়না অবহেলিত বঞ্চিত ঠকানো হয়েছে বলে যারা এভাবে মরে যায় অথচ মরেও কি ওসব থেকে রক্ষা পায়! অনেককে সহ আমার মা কে পর্যন্ত দেখেছি কেউ আত্মহত্যা করে মরে গিয়েছে শুনলে গালাগালি করতে। মৃত্যুর অপারে গিয়ে কি তারা সেসব জানতে পারে!! তার থেকে বেঁচে থেকে আরও কিছুটা দিন আলো বাতাস দেখা ভালোনা??

যতক্ষন মানুষ জীবিত থাকে ততক্ষন অনেক অপশন ও থাকে মরে গেলে তো সকল অপশন বন্ধ হয়ে যায়।
যে মৃত্যু ইচ্ছা অনিচ্ছায় মাথার উপর ঝুলে আছে সেটা নিয়ে টানা টানির কি প্রয়োজন!?



যদিও জীবনে এমন কিছু দিন আসে এমন কিছু একাকিত্তের রাত আসে এমন কিছু ভয়ানক বিপদ আসে যেগুলো থেকে ওই সময় একটাই সমাধান মৃত্যুই মনেহয়, কিন্তু মরে তো একদিন যেতেই হবে ওটা হাতে রেখেই কি অন্য চেষ্টা করা উচিৎ নয়! কিংবা ওই রকম মানসিক দুর্যোগের সময় কেউ যদি পাশে থাকে কেউ যদি সাহায্যের হাত বাড়ায় তবে কি এরকম অনেক অঘটন থেকে অনেককে সেফ করা যায় না?।
আত্মহত্যা মনোভাবের সময় প্রায় প্রত্যেকে ভাবে ‘আমি এরকম না আমি ওরকম না আমি পারবোনা প্রতিশোধ প্রতিরোধ এত অপমান কিচ্ছুতেই মেনে নেয়া যায় না, নেভার কোনোদিনও না কেউ বুঝবেনা আমার জীবনে কি যাচ্ছে! আমার এই সমস্যা এটা এরকম, জগতের কেউ নেই আমার মতন! কোন যুক্তি কোন তর্কই টিকছেনা শুধু একটাই সমাধান মৃত্যু!’

ঠিকাছে রাইট কিন্তু তারপরও কিন্তু তোমার মন তোমার মনের রোগ আমি বুঝবোনা আমি স্বার্থপর আমি শুধু নিজেরটাই বুঝবো তোমারটা বলতে এলে নির্লজ্জের মত তোমায় তিরস্কার করবো বিশ্বাস করো তোমার প্রতিটি বিষাক্ত বেদনার দীর্ঘ একাকী রাত্রিতে তুমি কাউকে পাশে পাবেনা কাউকে না তবু তুমি বেঁচে থাকো। কেউ তোমার দুঃখ বুঝবেনা তবু তুমি বেঁচে থাকো। তোমার নিঃস্বার্থ ভালোবাসা অন্য কারো হয়ে গেছে তবু বেঁচে থাকো, তোমাকে কখনো কেউ বলেনি তোমার ভালো দিকগুলো সবাই তিরস্কার আর অপমানই করেছে তবু বেঁচে থাকো। তুমি পারছোনা শত চেষ্টায় ও পরাজিত তবু বেঁচে থাকো, বিশ্বাস করো ওই জিভ বের করা সবুজ ঘাসের উপর তরতাজা তরুন মৃত দেহের মত আরও শত শত আত্মহত্যায় মৃত মানুষদের মত তিরস্কৃত হওয়াটা আরও অপমানের, আরও বাজে।




বার বার চেষ্টা কর, হাল ছেড়োনা, বাঁচো, কতটুকু আর জীবন ঘুরে ঘুরে একসময় তো শেষ হবেই তাইনা। আফসোস করোনা হা হুতাশ ছাড়ো ওটাকেই সুন্দর জীবন বলে মেনে নাও ডিয়ার কেউ বুঝবেনা তোমার কষ্ট তোমার কান্না কার আছে এসব দেখার সময়! ছোট্ট এই জীবন নিয়ে সবার ছোটাছুটি, সামনে এগিয়ে যাওয়ার যুদ্ধ সবখানে, ওসবের ভেতর আমরা না ই যাই! আমরা প্রার্থনা না করি সুখি জীবনের! ওগুলো বিশাল ব্যাপার সেপার তুমি আমি তো বিশাল কেউ নই আমরা তো জানি জীবন মানে কি ভয়াবহ দুর্যোগ!! এসবের মাঝে কি আকাশ আমাদের একটু প্রশান্তি দেয়না? প্রশান্তি দেয় না মা এর মুখ? মাথায় অদৃশ্য অচেনা কারো সমব্যাধী পরশ বুলিয়ে যায় না বলো! আমরা কি মনের এই কঠিন রোগের সাথে চ্যালেঞ্জ করতে পারিনা তাড়িয়ে দেয়ার?
জীবন আনন্দ সুখ শান্তি, উন্নতি অর্থবিত্ত, যা চাই তাইই হাতের নাগালে পেয়ে যাব এসব নয় এরকম কখনো হয় না বুঝলে, যদি কারো বেলায় হতে দেখে ঈর্ষান্বিত হও বিশ্বাস কর ওর ভেতর মরিচীকা আছে যা আমাদের চোখে ধরা পড়ছে না জীবন মানেই ক্রমাগত লড়াই।
দুঃখের দিনে কেউ চোখের জল মুছে দিয়ে বলবেনা এত কেঁদোনাতো আমি আছি সাথে আছি সব ঠিক হয়ে যাবে।কার এত ঠ্যাকা!!



কিছু কিছু আত্মহত্যার ঘটনা শুনলে মনেহয় এটা বেশ শৌখিন কিছু। কেউ কেউ ফেইজবুকে সুইসাইড নোট লিখে স্ট্যাটাস দিয়ে মরে যাচ্ছে, কিছুদিন আগে তাস্মিয়া শান্তা নামের মেয়েটি মরে গেলো তার শেষ স্ট্যাটাস আপডেট করে, তার প্রোফাইল ঘেঁটে দেখলাম ছোট ছোট অভিমান প্রেমিকের সাথে টুকরো টুকরো কথা কাটাকাটি থেকে দীর্ঘ ডিপ্রেশনের কারনে সে এরকম করেছে। এক্ষেত্রে আমি মনে করি পরিবার দায়ী পরিবার পরিজনের মধ্যে থাকলে সে এত সহজে মরে যেতে পারতোনা, অন্তত পাশে যদি কেউ থাকতো।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আক্তার জাহান আত্মহত্যা করেছিলেন ওই একি কারনে স্বামীর অবহেলা, পরিবারের থেকে দূরে থাকা, তিনি তার সুইসাইড নোট লিখেছিলেন “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। শারীরিক মানসিক চাপের কারণে আত্মহত্যা করলাম। তবে আমাকে যেনো কোনোভাবেই আমার বাবার হেফাজতে দেয়া না হয়।” তার এক ছবিতে দেখলাম একজন কমেন্ট করেছে এরকম আর কতদিন, অর্থাৎ তার স্বামী অন্যত্র বিয়ে করেছে সেটা জানান দেয়া এবং তাকেও এই জাতীয় কিছু করা উচিৎ স্মরণ করিয়ে দেয়া জবাবে উনি বেশ আকুল রিপ্লে দিয়েছিলেন এভাবেই তোমাদের পাশে থাকতে দাও না। আহারে পরিবার পরিবেশ আশেপাশের মানুষ কি ভীষণ মানসিক চাপই না সৃষ্টি করেছিলো।



আত্মহত্যা কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় সেই বিষয়ে নেট ঘেঁটে একটি নিউজ পেলাম, খবরটি যদি সত্যি হয়ে থাকে তবে অবশ্যই এই সংস্থাকে সাধুবাদ জানাই নিউজটি হুবুহু তুলে দিলাম।

আত্মহত্যা প্রতিরোধে ভারতে অভিনব কৌশল!

কৌতুহলবসত অথবা সত্যি সত্যিই কেউ যদি আত্মহত্যা করার উপায় খুঁজতে সার্চ ইঞ্জিন গুগল ব্যবহার করে, তাহলে নিশ্চিতভাবেই একটা উপায় পাওয়া যাবে। আর এ জন্য সার্চবারে লিখতে হবে, ‘কী ভাবে আত্মহত্যা করব’?
এই লেখাটি লিখে সার্চ করার সাথে সাথে স্ক্রিনে ভেসে উঠবে একটা টেলিফোন নাম্বার। আর তার নিচে লেখা আছে, সপ্তাহে সাতদিনই, ২৪ ঘন্টাই ফোন দিতে পারার ইঙ্গিত। কিন্তু নাম্বারটি কার, কেনই বা এভাবে পাওয়া যাচ্ছে, তার উত্তর খুঁজতে নিচে লেখা ওয়েসাইট ঠিকানায় গিয়ে জানা গেল, এটা আছরা নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের জরুরি হেল্পলাইন নাম্বার।
এই ফোন নাম্বারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি আত্মহত্যাপ্রবণ ব্যক্তি বা আত্মহত্যার পরিকল্পনা করছে এমন ব্যক্তির খোঁজ পেলে তাকে বাঁচাতে সার্বক্ষণিক জরুরি সহায়তা দিয়ে থাকে। তার আত্মহত্যা করতে চাওয়ার কারণ খুঁজে বের করে পারিবারিক সহায়তা, মানসিক রোগ বিষেষজ্ঞ ডাক্তার বা কাউন্সেলর দিয়ে তার মধ্যের হতাশা, কষ্ট, রাগ, দু:খ বের করে তাকে সুস্থ্য জীবনে ফিরিয়ে আনতে কাজ করছে এই সংস্থা।
আন্তর্জাতিক সংগঠন বিফ্রেন্ডারস ওয়াল্ডওয়াইড এর ভারত শাখার নাম আসরা। ১৯৯৮ সালে যাত্রা শুরু করা এই সংস্থা মূলত মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করে। হিন্দি এবং ইংরেজি দুই ভাষা ব্যবহার করেই এখানে যোগাযোগ করা যাবে। তবে এই সুবিধা শুধুমাত্র ভারতেই মুম্বাইয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বর্তমানে।

যাই হোক আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রতিটি পরিবার, আত্মীয়স্বজন বন্ধু বান্ধব আশেপাশের মানুষ এবং সমাজ সবচাইতে প্রধান ভুমিকা রাখতে পারে। গতকাল নিউজে পড়েছি এক ছেলে তার প্রেমিকার সামনে গায়ে আগুন জ্বালিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে তার শরীরের ৩০ ভাগ পুড়ে গেছে, ছেলে ইঞ্জিনিয়ারিং কমপ্লিট করেছে চাকরী খুঁজছে, বোঝাই যাচ্ছে এক্ষেত্রে তার আত্মহত্যার চেষ্টার জন্য তার প্রেমিকা দায়ী। দুদিন আগে নিউজে পড়লাম এক মেয়ে স্কুলের বেতন চেয়ে বাবার কাছে না পেয়ে ওড়না গলায় বেঁধে ঝুলে পড়েছে। সে কেবল অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে অর্থাৎ সে তার কিশোরী বয়স অতিক্রম করছে কেবল, এক্ষেত্রে মেয়েটির বাবা মেয়েটির পরিবার পুরোপুরি দায়ী। একটা কিশোরী বয়সের ছেলে মেয়ের জগত এমনিতেই জটিল এবং আবেগপূর্ণ থাকে, তারা কিছু বোঝে কিছু বোঝে না মান অভিমান ছোট বড় এর মাঝামাঝি বয়স অতিক্রম করে, সেক্ষেত্রে তাকে বোঝার মত পরিবারের কেউই যে ছিল না বলার অপেক্ষা রাখেনা।
অনেকে সুইসাইড নোটে কার কারনে আত্মহত্যা করছে উল্লেখ করে রেখে যায় সে রকম ক্ষেত্রে আমি মনে করি সুইসাইড নোটে উল্লেখিত ব্যক্তিকে মার্ডারের চার্জে এরেস্ট এবং বিচারের আওতায় এনে আদালতের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া উচিৎ।

অনেকে ক্ষেত্রে দেখি আত্মহত্যা ব্যাপারটি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা না করে আত্মহত্যার নিউজ না ছাপাতে এতে নাকি অনেকে অনুপ্রাণিত হয় আত্মহত্যা করতে। হতে পারে কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য অনুপ্রেরনার জন্য ও তো আমরা কিছু করতে পারি। আমরা কি দুটো ভালো কথা বলতে পারিনা? ভালো কাজ করতে পারিনা? ভালো ব্যাবহার করতে পারিনা? উপকার কিংবা সাহায্য না করতে পারি একটু হাসি কি উপহার দিতে পারিনা? একটু পাশে দাঁড়াতে পারিনা? পাশে দাঁড়াতে না পারি অন্তত এটুকু আশ্বাস দিতে পারিনা যে তাকে পৃথিবীর প্রয়োজন আছে??
সেদিন আরেকটি আত্মহত্যার বর্ণনা শুনে শিউরে উঠেছিলাম লোকটি নাকি রাত ভর বউয়ের গালি খেয়ে সকালে রেললাইনের পাশে এক টঙের দোকানে বসেছিল, হাতে ছিল চা এর কাপ। হঠাৎ ট্রেনের শব্দে সে খুব সুন্দর ভাবে চা এর কাপ টুলের উপর রেখে কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক দৌড় দিয়ে ট্রেনের সামনে গিয়ে ঝাঁপ দিলো, পলকেই টুকরা টুকরা।

বাংলাদেশে বেড়ে যাওয়া আত্মহত্যার হার প্রতিটি পরিবারই পরিজন কাছের অথবা আশেপাশের মানুষই পারে কমাতে।

যারা আমার এত এত কথা শুনেও এই জাতীয় ডিপ্রেশনে আক্রান্ত তাদের উদ্দেশে--
প্রতিদিন কত মানুষ নানা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে পড়ে আছে জীবনের শেষ প্রহর গুনছে, অনেকেই আছে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ নষ্ট হয়ে গিয়েছে, কারো কিডনি কারো লাঞ্চ কারো চোখ, মরে যখন যাবেই এগুলো মরে যাওয়ার আগে দান খয়রাত করে যারা বাঁচতে চায় তাদের মরতে মরতে একটু সাহায্য সহযোগিতা করে গেলে ভালো হতোনা?

সবশেষে আত্মহত্যা করার আগে প্রিয়জনের কথা স্মরণ কর প্রত্যেকের জীবনেই কেউ তো আছে যে তোমার মৃত্যুর শোক সহ্য করতে পারবেনা কিংবা বাকী জীবন বেঁচে থাকবে পঙ্গুর মতন, কারো তো তোমাকে প্রয়োজন কেউ তো আছে যে তোমার উপর নির্ভর হয়ে বেঁচে আছে পরজীবীর মতন।
অথবা আমার মত অনেকেই যাদের প্রতিটি আত্মহত্যার সংবাদে অথৈ সাগর পরিমান দুঃখে ডুবিয়ে দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০৭
২০টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×