ফেইসবুকে একটা ফটোগ্রাফি গ্রুপ আছে যেইখানে সারা দুনিয়ার ফটোগ্রাফাররা তাদের বেস্ট বেস্ট ছবি শেয়ার করেন কেননা সেখানে মেন্টোরস চয়েজ নামে বেস্ট ফটোগ্রাফি নমিনেশন এওয়ার্ড দেয়া হয়, পরবর্তীতে নমিনেট করা লোকজন নিজে একটি বাৎসরিক অনুষ্ঠান করে বিজয়ীকে পুরস্কার প্রদান করেন যার মূল্য এক লক্ষ টাকা।
এই রকম একজন মেন্টোরস চয়েজ বেস্ট ফটোগ্রাফি এওয়ার্ড প্রাপ্ত ফটোগ্রাফারের প্রোফাইলে যেয়ে দেখলাম তিনি তার একেকটি ফটোগ্রাফিকে ফিল্মের রুপ দিয়েছেন, একটা ছবির মাধ্যমে যে এত কিছু বলা যায় প্রকাশ করা যায় ব্যাপারটা দেখে অবাক।।
তার কিছু ওয়েডিং ফটোগ্রাফি দেখলাম হেলিকপ্টারে চড়ে রশিতে ঝুলে ক্যাপচার করেছেন, এক কথায় একেই বলা হয়ে থাকে ফটোগ্রাফির পেশাদারিত্ব।।
একটি ভালো ছবি তুলতে প্রত্যেক ফটোগ্রাফাররা জানেন তাদের প্রচুর কষ্ট করতে হয়, প্রথমেই দক্ষতা, কল্পনা শক্তি, পছন্দের মাধমে সেরা কনসেপ্ট এর পাশাপাশি একটি ভালো লেন্স, ক্যামেরা, ভালো জায়গা এবং প্রাকৃতিক অবস্থান। যেমন আলোর একটু এদিক সেদিকের জন্য ছবিটির রঙ কিংবা কনসেপ্ট সম্পূর্ণ পাল্টে যায়।।
আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে আমাদের আশেপাশের আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব এই ফটোগ্রাফি ব্যাপারটি কোন হিসেবের ভেতরই ধরেননা, আমি যখন ক্যামেরা হাতে বের হই এলাকার কারো কই যাও এর উত্তরে যদি বলি ছবি তুলতে তাহলে তারা বেশির ভাগ আশ্চর্য হয়ে জানতে চান ছবি তুলতে আবার বাইরে যেতে হয়? এইভাবে যাইতেছ কেন ? একটু ও সাজো নাই, কারে দিয়ে ছবি তোলাবা? আমি তুইলা দেবো??
এই সকল নানা বাঁধা বিপদ অতিক্রম করে তবেই ফটোগ্রাফি করতে হয়, আপনি ক্যামেরা হাতে দাড়াইছেন কারন ছাড়াই মানুষজন আপনার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকবেন। সাথের জন যদি ছবি তোলার পাগল হয় সে কারনে অকারনে শুধু এইখানে ওইখানে পোজ দিয়া দাঁড়াইবেন, ছবি তুলতে বলবেন, না শুনলে ধমক দিয়া বলবেন ছবি তোলো ছবি তোলো এইখানে তোলো ওইখানে তোলো।
ছবি তোলা যে আর্ট কিংবা শিল্প কিংবা এটাও যে একটা শারীরিক মানসিক পরিশ্রমের কাজ তেমন কাউকে খুব একটা বুঝতে দেখিনি অন্তত আমার আশেপাশের মানুষকে। ক্যামেরা হাতে থাকলে প্রত্যেকের ছবি আপনাকে বিনা বাক্য ব্যয়ে সময় অপচয় করে তুলে দিতে হবে এটা যেন প্রত্যেকের দাবি।
আমি গতবার সমুদ্র ভ্রমনে গিয়া আমাদের গ্রুপের প্রায় পাঁচশোটার মত ছবি এবং ৩ মিনিটের একটা ভিডিও মেক করে দিয়ে তার বদলে একটা শুকনা ধন্যবাদ ও পাই নাই, আমার যেহেতু ক্যামেরা ছিল কাজেই আমার ক্যামেরায় তাদের সমুদ্রে ঝাপাঝাপির ছবি পাওনা ছিল, আমি তাদের ছবি তুলে দিয়া ছোয়াবের কাজ করেছি।।
বন্ধুবান্ধবদের মধ্যেও অনেকে আছে যারা ফটোগ্রাফি কি সেইটাই বোঝেই না এবং নিরানব্বই ভাগ ছবি তোলার কাজে প্রচুর ব্যাঘাত ঘটায়। তাদের ধারণা ক্যামেরা হাতে থাকলেই আর লেন্স বরাবর ইস্ত্রি করা ভাজ ভাঙ্গা শার্ট পড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালেই বেস্ট একটা ছবি হয়ে যায়। শুধু শুধু বাঁকা চোখা হয়ে দাঁড়িয়ে লাভ কি!! আর যার হাতে ক্যামেরা থাকে সে মানুষ রেখে কেন আকাশ বাতাস ঘাস লতা পাতার ছবি তুলবে!! মাথা নষ্ট পাগল ছাড়া আর কিছু!! এরকম যারা ভাবে তারা কিন্তু বেশ আধুনিক ইয়ো টাইপ পোলাপাইন।।
কিছু রিস্কি ফটোগ্রাফি
এত সব বাঁধা অতিক্রম করেও যখন আপনি দুই একটা ভালো ছবি তুলে ফেলবেন দেখবেন সেই ছবিটায় সবার অধিকার, সেই ছবি না বলেই অনেকে কভার অথবা পিসি স্ক্রিন সেভারে ব্যাবহার করবে বলার প্রয়োজনই মনে করবে না।
কেউ কেউ আবার মাই ফটোগ্রাফি এ্যালবাম বানিয়ে তাতে সেভ করবে। বললে বলবে ভাললাগছে তাই দিছি এটা কি এমন বিগ ডিল।।
ওয়েল এত সব বৈরী পরিবেশেও আমাদের দেশে ভালো ভালো ফটোগ্রাফার তৈরি হচ্ছে, ভালো ছবি তুলছে। প্রত্যেক ফটোগ্রাফারের জন্য শুভকামনা।।
সবশেষে একটা লিঙ্ক দিলাম যেইখানে আমার ফটোগ্রাফি পোস্ট কপি করেছেন একজন অচেনা নারী। যদিও উনি আমার নাম ম্যানশন করে আমাকে উদ্ধার করেছেন।
Fisheye Effect My Photography
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৫