একদিন বাড়ি ফেরার জন্য বাসে ওঠার পর দেখি আমার সাথে সাথে হুড়মুড় করে চারজন বেদের মেয়ে জোছনা উঠেছেন।উনাদের পথে ঘাটে বহুবার দেখেছি , কিন্তু এরকম গায়ে গা লাগিয়ে কখনো বসা হয়নি তাই এদের সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান থেকে শুধু এইটুকুই জানতাম যে তারা নৌকায় বসবাস করেন এবং তাদের জীবন বিচিত্র।
সেই বিচিত্র জীবনের প্রতি আগ্রহ অনুভব করতে করতে দেখলাম প্রায় প্রত্যেকের নাকে খান্দানি বেশর, গলায় সোনার রঙে দানা দানা মালা, খোপা উঁচু করে বাঁধা, সুতির ছাপখোপ কাপড় অদ্ভুত ভাবে পেঁচিয়ে পড়া, হাতে পোটলা, মনে মনে ভাবছি পোঁটলায় কি হতে পারে সাপ! ঠিক সেই সময় একটা পোটলা আমার গায়ে লেগে যাওয়ায় আঁতকে উঠতেই চার বেদে সুন্দরীর ভেতর শ্রেষ্ঠ সুন্দরী বলে ওঠেন কি হইছে? ভয় পান ক্যান? কিছু নাই তো! এমন মিষ্টি সুন্দর মোলায়েম মায়া পূর্ণ কণ্ঠ শুনে অভিভুত হয়ে, ইন্টারনেটে এদের জীবন যাপন সম্পর্কে ঘাঁটাঘাটি করতে গিয়ে এই ভাসমান শহরের খবর পাই।
বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এবং আর্কিটেক্টরা নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা, আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং মেধা খরচ করে এই শহর বানাচ্ছেন, আমাদের দেশে এই ভাসমান শহরের মতন জেলে পরিবারের জীবনযাপন চলছে যুগ যুগ ধরে! তবে কি উনারা আমাদের দেশের নিরক্ষর বেদে কিংবা জেলে পরিবারের কনসেপ্ট চুরি করেছেন! হতেও তো পারে!!
যাই হোক পৃথিবীর উন্নত এই ভাসমান শহরটি গঠিত হবে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে,ফ্রেঞ্চ পলিনেশিয়া রাষ্ট্র এবং সান ফ্রান্সিসকোর সিস্টিডিং ইন্সটিটিউট যৌথভাবে মহাসাগরের শান্ত নীল জলের মধ্যেই।
শহরটির নকশা করেছেন সিস্টিডিং ইন্সটিটিউটের প্রযুক্তিবিদ পিটার থেল। দুই’বছরের মধ্যেই শুরু হবে এই শহরের নির্মাণকাজ। এর নকশা প্রস্তুতে সময় লেগেছে পাঁচ বছর। ২০২০ সালের মধ্যেই নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শেষ হওয়ার কথা।
অন্য শহরগুলোর মতোই মানুষ এইখানে বাস করবেন। থাকবে নিজস্ব সরকার ব্যবস্থা। ফলে এটি ফ্রেঞ্চ রিপাবলিকের অধীনে থাকবে না। শহরটি গড়ে তুলতে অন্তত ১৬ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ হবে বলে মনে করা হচ্ছে। শুরুতে এখানে ২৫০-৩০০ জনের মতো মানুষকে মালিকানা দেয়া হবে। পরে বাড়ানো হবে এর ধারণক্ষমতা। ২০৫০ সালের মধ্যে প্রায় ৬৮ কোটি মানুষ এই ভাসমান শহরে বাস করতে পারবেন।
ঘর, হোটেল, অফিস, এবং রেস্টুরেন্ট সহ প্রায় সবই এইখানে তৈরি হবে।
ভাবছি ফ্লোটিং শহরের জীবনযাপন কেমন হবে, তারা কাজ করতে করতে হাঁটতে হাঁটতে পানি মধ্যে টুপ করে পড়ে যাবেন না?? ঐ শহরে বসবাসের জন্য কি সাঁতার জানা আবশ্যক!? ঘুমাতে ঘুমাতে হঠাৎ যদি দেখে তার ঘর পানির মধ্যে অর্ধেক কাঁত হয়ে গেছে তখন?
ঝড় এলে কি ছোট নৌকার মত দুলবে শহরটি?
টাইটানিকের মত বরফের চাইয়ের আঘাতে এই বিখ্যাত ভাসমান শহর সমুদ্রে তলিয়ে যাবে নাতো???
সবশেষে আশীর্বাদ রইলো এই ভাসমান শহরে সবার একটি করে প্রোপার্টি হোক। শুভেচ্ছা।।
যে সব ওয়েব থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছিঃ-
World’s First Floating City To Emerge In The Pacific Ocean By 2020, And Here’s How The Life Will Look On It
Footage Of World’s First ‘Floating City’ Has Been Released
Plans For World’s First "Floating City" To Be Built In The Pacific In Two Years' Time
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:০৪