somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাইফ ফ্যাক্ট

২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




কাউরে হাসির পাত্র বানাতে অথবা নীচে নামানোর জন্য দশজনের সামনে যদি কেউ বলে যে উনি পাগল। কথা সত্যি হোক কিংবা মিথ্যা ১০ জনের মধ্যে ৯জনই সেই কথা বিশ্বাস করবে। তাদের ভেতর কেউ কেউ দেখবে যে কথা ঠিক না তবু বিশ্বাস করবে। মানুষকে ছোট করে ঠাট্টা তামাশার মধ্যে যে আনন্দ তা এই জগত সংসারে আর কিছুতে নাই।।

প্রায় প্রতিটি মানুষ নিজের ব্যাপারে অন্ধ, নিজের যা কিছু স্বভাব চরিত্র আচার আচরণ কথাবার্তা সব, সব কিছুই তার নিজের কাছে অপরজনের থেকে সেরা মনে হয়, সেরা এবং নিখুঁত, নিখুঁত এবং সঠিক, এই ধরনের মানুষ চায় তার প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে আশেপাশের মানুষগুলো তার মতন হয়ে উঠুক। তার মত হয়ে উঠছে না!! তারমানে তারা খারাপ।।

মন খারাপ হলে কেঁদে কেটে হাল্কা হওয়া উচিৎ। কিন্তু আফসোসের ব্যাপার হচ্ছে এই যে, বড় হবার সাথে সাথে কেঁদে কেটে বুক ভাসিয়ে দেয়ার জায়গাও দিনে দিনে সংকীর্ণ হতে হতে একসময় নাই হয়ে যায়।

যে সময়গুলো জীবন থেকে চলে যায়, চলে যাওয়ার মুহূর্তে তা বোঝা যায় না, সাদামাটাই লাগে, পরবর্তীতে সেই সময়ের কোন কোনটি অতি মূল্যবান হয়ে, চির অধরা হয়ে, তাড়কা হয়ে হৃদয়ের আকাশে জ্বল জ্বল করে জ্বলতে থাকে আজীবন।।

জীবনে এমন কিছু মানুষ থাকবেই যারা নিজের দুর্ভাগ্যের জন্য অন্যদের দোষারোপ করেন, হাঁটতে হাঁটতে হোঁচট খেয়ে পাশেরজনকে ধমকাতে ধমকাতে বলবে; আপনে আমার পাশে হাটতেছেন ক্যানো?? আপনের জন্য হোঁচট খাইছি। জ্যামে আটকে আছে সংগীকে বলবে; কোনদিন তো এত জ্যাম পড়তে দেখিনাই আজকে তুমি আমার সাথে আসছো আর আজকেই এই অবস্থা! বুঝছি তুমি মিয়া কুফা।
কোন কাজ করতে পারছে না, তার জন্য আশেপাশের কাউকে না কাউকে দোষারোপ করবেই। এমন তো হওয়ার কথা ছিল না! নিশ্চয়ই অমুকের ষড়যন্ত্র।পরীক্ষা খারাপ হয়েছে পাশেরজনের জন্য শান্তিতে লিখতেই পারে নাই।। চাকরী পায়নি? কাজ পারিনা বলবে না; বলবে মামার জোড় নাই। জ্বর হইছে! অমুকের জন্য তিন বছর আগে যে বৃষ্টিতে ভিজছিল ঐ ঠান্ডা জমে এই জ্বর। সকল খারাপ অন্যের! সকল ভূল অন্যের! সকল বোকামী অন্যের! পাশাপাশি সকল ভালো, সকল বিদ্যা, সকল বুদ্ধি, সকল জ্ঞান অবশ্যই অবশ্যই তার।।
যদিও এর বিপরীত একজন মানুষ ও সবার জীবনে থাকেন, যে সকল ভূল নিজের বলে মেনে নেন। রোগ শোক চিন্তা সবকিছুর দায়ভার মাথা পেতে নিয়ে অপরাধী হয়ে থাকেন বিনা অপরাধেও।
কিন্তু কৃতিত্ব কখনোই নিজের বলেন না, সেই কৃতিত্ব নিজের না হলেও সব মানুষের কাছে বুক ফুলিয়ে বলে বেড়ান।
এই স্পেশাল মানুষটি হলো মা।
মা হলো প্রতিটি সন্তানের জীবনে সুপার ওম্যান। যেখানে সমস্ত পৃথিবী ধূলোময়লা রোগ শোক জড়া দিয়ে আপনাকে ধ্বংস করার চেষ্টায় মেতে থাকে; সেখানে মা সকল খারাপের সাথে লড়ে আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। আমাকে একজন গল্পে গল্পে বললেন, যখন আমি তোমার মত আনম্যাড়িড ছিলাম তখন তোমার মতই মনে হতো; মা বাবাই বুঝি পৃথিবী। কিন্তু বিয়ের পড়ে আমি রিয়ালাইজ করলাম আসলে আমার স্বামীই আমার সব, তারপর যখন সন্তান হলো তখন বুঝলাম আমার স্বামী আর সন্তান নিয়েই পৃথিবী।।
আসলে, শুধু স্বামী সন্তান নিয়ে যেমন পৃথিবী হতে পারেনা;তেমনি শুধু মা বাবা ভাই বোন নিয়ে ও পৃথিবী হতে পারেনা।
পৃথিবী তো পৃথিবীই। পৃথিবী বিশাল, ব্যাপক, বিস্তৃত।এই বিস্তৃত পৃথিবীতে যেমন স্বামী সন্তান থাকবে, তেমনি মা বাবা ভাইবোন থাকবে, আক্তীয় থাকবে, পাড়া প্রতিবেশী, থাকবে সহকর্মী, থাকবে বন্ধুবান্ধব, থাকবে রাস্তায় পথ চলতে চলতে পাশে থাকা অচেনা মানুষগুলোও।
শুধু নিজেকে ভালোবেসে,নিজস্ব পরিবারের গন্ডীর মধ্যে বেঁচে থাকার মধ্যে কোন শান্তি কিংবা আনন্দ নেই। শুধু নিজে, নিজেরটা করে করে, অপরকে দোষ দিয়ে ছোট করে, নিজেকে নির্ভূল ভেবে, নিজেকে নিয়ে থেকে, একটি তুচ্ছ আর খারাপ আর একাকী অস্থায়ী অসুখী একাকী জীবনই শুধু লাভ করা সম্ভব।।

আপনার আশেপাশেরর যে সকল পুরুষ মহিলা আপনাকে পছন্দ করেন কীভাবে বুঝবেন? এরা গায়ে পড়ে কথা বলবে, কথা বলার জন্য আপনি কখন কাজ শেষ করে ফ্রি হবেন সেই অপেক্ষায় থাকবে এবং কাজ শেষ হবার সাথে সাথে উড়তে উড়তে আপনার কাছে চলে এসে কথা বলবে, মুখের দিকে চেয়ে কথা বলবে, হেসে হেসে কথা বলবে, আপনার চেয়ার পেছন থেকে টেনে ধরে কথা বলবে, অর্থহীন কথা বলবে, সেধে সেধে কথা বলবে, ঘুরঘুর করতে করতে কথা বলবে, যে কোন টপিকে আপনার নাম ঘন ঘন বলবে। আপনি তাকে বাদ দিয়ে অন্যদের সাথে কথা বললে এরা দূর থেকে হিংসা করতে করতে কথা বলবে। মোট কথা এদের দুনিয়া হলো আপনাকে ঘিরে।।


মুখে মধু আর অন্তরে বিষ নিয়ে আমরা সামনে থাকা মানুষটিকে ফাঁকি দিতে পারি কিন্তু উপড়ে যে একজন আছেন তাকে কি ফাকি দেয়া সম্ভব?? ঐ সকল মানুষ সবথেকে নিকৃষ্ট যারা নিজেকে মুখোশের আড়ালে রেখে মানুষকে বিপদে এবং বিভ্রান্তিতে ফেলে।।

কাজ করে খেটে খাওয়া মানুষের ধারনা সে একাই কাজ করে আর পুরো দুনিয়ার মানুষ বসে বসে সময় কাটায়, যত্তসব বেকার লোকজন।
আবার কাজ না করে বসে খাওয়া মানুষের ধারনা, সবাই তার মত বেকার আর হাতে অঢেল সময়! কিশের কি! কিশের এত কাজ! বেহুদা ব্যস্ত একটা ভাব নিয়া লোকজন শো অফ করে।

ব্যক্তিজীবনে যে যত ছোট, সে ততই অপরকে ছোট করে একধরনের কুরুচিপূর্ণ আনন্দ পায়।।

আপনজন,পরজন, পরিচিতজন, সকল জনদের প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে নানা ধরনের বর্নের ভালো ব্যবহার ভালো উপকার করার পর ও তারা বিভিন্ন রকম আঘাত করে কথা বলবে, পায়ে পায়ে দোষ খুঁজবে, মোট কথা একজন উপকারির উপকারের বিনিময়ে তার অপমানে কষ্টে ক্ষতিতেই সেই সকল মানুষের ব্যাপক আনন্দ।
ব্যাপারটা ভীষন কষ্টের -তারপরও এই সকল চারপাশে গিজগিজ করা মানুষকে ক্ষমা করা নিজের শান্তির জন্যই প্রয়োজন, কেননা প্রতিশোধ কখনো শান্তি বয়ে আনেনা আবার এদের ক্ষমা করতে না পারলে রাতে শান্তিতে ঘুমানোও যাবেনা।কাজেই নিজের শান্তির জন্য, সুস্থতার জন্য, ভালো থাকার জন্য ক্ষমা করতেই হবে। ক্ষমা করার মন্ত্র হচ্ছে " তারা মানুষ; ফেরেশতা তো নয়, মানুষই ভুল করে।

সবশেষে, এইসব মানবজীবন নিয়ে আমার নিজস্ব চিন্তাধারা্র ফলাফল কিংবা মতামত। চিন্তাধারায় ভুল থাকতেই পারে, কেননা সকলের দৃষ্টিভঙ্গি তো এক নয়।।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৪
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×