আমার ভাগ্য হল হিমু ভাগ্য; আশেপাশে কোটিপতির ছড়াছড়ি হিমু তাদের নানান নখরামি দেখতে দেখতে সহ্য করতে করতে খালি পায়ে হেঁটে বেড়ায়, তাদের যে ছেড়ে যাবে সেই উপায় ও নেই বেচারার। আমার সাথে হিমুর পার্থক্য বলতে আমি খালি পায়ে হাটিনা শখ করে তো একদমই না।
আমার এক বেস্ট ফ্রেন্ড সব সময় তার জন্য বরাদ্ধ গাড়ি নিয়ে ঘুরতো তার ফুটপাতে হাঁটতে ও কষ্ট হতো এমনি ঢঙ্গী সে।
আমরা দুইজন এবং তার গাড়ি নিয়া কতদিন কত ঘুরে বেড়াইছি শপিং করছি, রোজার সময় শখ করে রেডিশন সহ ঢাকার ভালো ভালো রেস্তোরায় ইফতার করে তাদের ইফতারের কত কত বদনাম করে কতদিন যে বাড়ি ফিরেছি।
আবার আমরা ঝগড়া ও করতাম অনেক, এরকম একটা ঝগড়া হল একদিন সে আমি বাসায় ফিরছি (সে আমায় সব সময় বাসায় নামিয়ে দিত বিশেষ করে রাত হলে) আমরা নানান গল্প করছিলাম, সে আমার কথা শুনতে শুনতে আমার কাঁধের উপর হেলান দিয়া হঠাৎই বলে বসলো, সামিয়া তোমার যে গাড়ি নাই এইটা কিন্তু বেস্ট একটা ব্যাপার। তার কথা শুনে সাথে সাথে আমি রেগে গেলাম কিন্তু কিছু বললাম না আর কি বলে শোনার জন্য, বললেনও, তোমার গাড়ি নেই বলেই তুমি সাধারণদের সাথে মিশতে পারছো তাদের লাইফ স্টাইল হাতে কলমে দেখতে পাচ্ছো আর সে সব থেকে কত কিছু ভাবতে পারছো লিখতে পারছো এটা কিন্তু তোমার অনেক কাজে লাগবে।।
ওয়েল
সেই সময় এই কথার জন্য তাকে প্রচণ্ড ধমকাধমকি করে আজ অনেকদিন পর মনে হচ্ছে তার কথা একশোতে একশো ভাগ ঠিক ছিল।
আমার প্রথম উপন্যাস লেখার কনসেপ্ট মাথায় এসেছিলো অচেনা মানুষের থেকেই।।
একদিন রাস্তায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি, গাড়ি আর আসেনা, কি কারনে যেন রামপুরায় গাড়ি ভাঙচুর হচ্ছে ফলে কোন গাড়িই আসতে পারছেনা, আমি দাঁড়িয়ে আছি বসুন্ধরা যমুনা ফিউচার পার্কের উল্টা দিকে, এভাবে ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে ছিলাম কোন গাড়ি কোন সি,এন,জি কিছুই ম্যানেজ করতে পারছিলাম না, একটু অদূরেই আমার মতনই একটি মেয়ে দাঁড়িয়ে, অতিরিক্ত শুকনা শ্যামলা মেয়েটিকে সোডিয়ামের আলোয়ও বেশ বোঝা যাচ্ছিলো অস্বাভাবিক, সে রাস্তার অনেক সামনে এগিয়ে দাঁড়ানো হুস হাস করে কিছু কিছু প্রাইভেট কার তাকে পাস কাটিয়ে যাওয়ার সময় ধমক ধামক দিচ্ছে, সে নির্লিপ্ত।
আমি এক পর্যায়ে একটি সি,এন,জি যোগাড় করতে সক্ষম হই, সেটায় উঠতে উঠতে মেয়েটিকে ডাকলাম।
কেউ তাকে সাহায্য করতে চাইছে ব্যাপারটা উপলব্ধি করে সে অবিশ্বাস চোখ মুখ নিয়ে এগিয়ে এলো, বললাম কই যাবেন? ঘোর থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করতে করতে বলল উত্ত উত্ত উত্তরা। ছোট একটা নিঃশ্বাস ফেলে হাত বাড়িয়ে দিলাম বললাম আসেন আমি নামিয়ে দেব, এইটুকু মমতায় সে কেঁদে দিলো জানালো আজ তার প্রেমিকের সাথে বিয়ে হবার কথা ছিল, প্রেমিক আসেনাই নাটকের কাহিনীর মতই ধোঁকা দিয়েছে, সে লজ্জায় ঘৃণায় রাগে ক্ষোভে প্রতিজ্ঞা করতে করতে বলে, তার প্রেমিকের দেয়া সমস্ত উপহার থেকে শুরু করে সকল ধার দেনা শোধ করে দেবার জন্য সে তার কিডনি বেঁচে টাকা জোগাড় করবে।
ঐ দিনের পর তার সাথে আর দেখা হয়নি, কিন্তু আমার মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে কথাগুলো, অন্বেষা উপন্যাস এরকম কিছু ইচ্ছার উপর ভিত্তি করেই রচিত হয়েছে। জানিনা সেই মেয়েটি কোথায় আছে কেমন আছে, জীবনে চলার পথে কত মানুষ আসে যায়। পাখি উড়ে যায় রেখে যায় পালক।।
বইটি পাওয়া যাবে
প্রকাশনীঃএক রঙ্গা এক ঘুড়ি প্রকাশনী
স্টল নাম্বার ৬৫৪সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
মেঘফুল স্টল নাম্বার ৪৩ লিটল ম্যাগ চত্ত্বর বাংলা একডেমী
মূল্য ঃ ১৫০ টাকা
এবার আসছি আমার আরেকটি বই শঙ্কিত শহরে প্রসঙ্গে ,
শঙ্কিত শহরের গল্পগুলো একটু ভিন্ন ধারায় রহস্য আকারে লেখার চেষ্টা করেছি। রহস্য আমার ভালোলাগে। এত বড় পৃথিবীতে কত রহস্যই না আছে, তার কতটুকুই বা আমরা জানতে পারি। আবার একেকটি মানুষ একেকটি রহস্য নিয়ে তার সমগ্র জীবন পাড়ি দিচ্ছে, কত ঘটনা; কত স্মৃতি; তার হৃদয়ের গহীনে জমা হচ্ছে, জমা হচ্ছে রহস্য, সে কথা হয়তো নিজেরাও কোনদিন জানতে পারেনা। বইটিতে থাকবে আমার লেখা বারোটি গল্প।
বইটি পাওয়া যাবে
প্রকাশনীঃএক রঙ্গা এক ঘুড়ি প্রকাশনী
স্টল নাম্বার ৬৫৪সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
মেঘফুল স্টল নাম্বার ৪৩ লিটল ম্যাগ চত্ত্বর বাংলা একডেমী
মূল্যঃ১৯০ টাকা
এক রঙ্গা এক ঘুড়ি প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা নীল সাধু সম্পাদিত গল্পগ্রন্থ মাতাল হাওয়া। বইটিতে থাকছে আমার লেখা একটি গল্প। বইটি আমার নিজের জন্যই সংগ্রহ করার আশা রাখি ।।
বইটি পাওয়া যাবে
প্রকাশনীঃএক রঙ্গা এক ঘুড়ি প্রকাশনী
স্টল নাম্বার ৬৫৪সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
মেঘফুল স্টল নাম্বার ৪৩ লিটল ম্যাগ চত্ত্বর বাংলা একডেমী
সবকয়টি বই মেলায় প্রথম দিন থেকেই পাওয়া যাবে।।
সবশেষে পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে। আমি একজন পিপীলিকা ।। পিপীলিকার বই কি আপনারা সংগ্রহ করিবেন??
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৫