এক সহজ সরল বড় ভাই গতবার পহেলা ফাল্গুনে তার বউ বাচ্চা নিয়া হাতিরঝিল ঘুরে এসে খুবই কনফিউস্ড হয়ে বললেন, আসলে এই সব ডে ফে কিছুই না, কি কারনে মানুষ এই রকম করে কিছুই মাথায় আসেনা, যেমন এই যে হাতির ঝিল বেড়াইতে গেলাম, গিয়া দেখলাম কি? কিছুই না, দূর থেকে দেখা যায় হাজারে হাজারে মানুষ ঈদের মতন নতুন পোশাক পড়ে ভীর করে আছে, মনেহয় কি জানি কি হইতেছে, আসলে কাছে গিয়া দেখা যায় খালি মানুষ আর মানুষ, দেখার মতন কিছু নাই এমনেই দাঁড়াইয়া আছে , সেলফি তুলতেছে, এই হইছে দেশের অবস্থা।।
আজ অফিসে আসতে আসতে দেখলাম প্রায় প্রতিটি মেয়ে হলুদ ড্রেস অথবা শাড়ি পড়ে বের হয়েছে প্রায় সবাইকে রূপবতী লাগছে। এই রূপবতী লাগাবার জন্য কমপক্ষে গত দুই মাস ধরে ছিল তাদের প্লান, কমছে কম এক মাস ধরে ছিল শপিং এবং পার্লার গমন। আর পার্লারে যে এই কাণ্ড কীর্তি শুধু মেয়েরা গিয়ে করে তাই ই নয় ছেলেরাও সেই একই পথের পথিক।
ইদানীং মেয়েদের মতন ছেলেরা ভ্রু প্লাগ আর ফেসিয়াল করতে করতে তাদের কারো কারো চেহারা মেয়ে মেয়ে হয়ে গেছে। পোশাক ছেলেদের কিন্তু মুখের দিকে তাকালে কনফিউস্ড হতে হয় এই ভেবে! আচ্ছা ছেলেটি কি মেয়ে!!!
কাজেই এসবের মানে কি আমিও সেই বড় ভাইয়ের মতন ভেবে পাইনা।
হতে পারে আমার জীবনের বসন্ত ফিঁকে হয়ে শেষ হয়ে গেছে।
হতে পারে আমাদের দেশের মানুষ অনেক বেশি আনন্দ প্রিয় হয়ে গেছে,
হতে পারে বেকারত্ব ও একটি কারন,
হতে পারে মানুষ নিজেকে ক্রমাগত মোটিভেট করার চেষ্টা করছে,
হতে পারে বর্তমানে মানুষ অনেক বেশি বিভ্রান্তিতে আক্রান্ত, কি করছে না করছে কিছুই বুঝতে পারছেনা,
হতে পারে তাদের জীবনে আনন্দ নাই বলে তারা মাথা খারাপের মতন আনন্দ খুঁজে বেড়াচ্ছে,
হতে পারে সবাই আধুনিক।
হতে পারে পারিবারিক কলহ থেকে বের হয়ে বাইরের এই ঘোরাঘুরির চেষ্টা।
তবু এত সব কিছু হতে পারের ভেতরেও সবার বসন্ত উৎসব এপ্রিসিয়েট করি, ভালো থাকাটাই বড় কথা, কারো ক্ষতি না করে যদি কেউ এইভাবে আনন্দিত থাকে তবে তাই ভালো।।
সবশেষে প্রিয় কবি ফররুখ আহমেদের কবিতার কিছু পংক্তিমালা--
একঝাক পাখি এসে ঐকতানে ,
গান গায় এক সাথে ভোর বিহনে,
অাচানক দুনিয়াটা আজব লাগে,
আড়মোড়া দিয়ে সব গাছেরা জাগে,
লাল নয় কালো নয় সবুজ পাতা,
জেগে ওঠে একরাশ সবুজ পাতা
সবাইকে বসন্তের শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:১৪