আমরা যারা ভার্চুয়াল জগতে নাওয়া খাওয়া বাদ দিয়া সারাদিন পড়ে থাকি, যাদের কাছে ভার্চুয়াল জগত ছাড়া দুনিয়ায় আর কিছু নাই! তাদের জন্যই পদার্থ বিজ্ঞানী বিশেষ ভাবে চিন্তিত হয়ে এইরকম আশার বানী শুনাইতেছেন যে, আমাদের ব্রেনের বায়োলজিক্যাল চিন্তা চেতনা উপাদান ব্যক্তিত্ত সমস্ত কিছু যান্ত্রিক উপাদানে ট্রান্সফার করে কম্পিউটারে ঢুকিয়ে দেয়া হবে।।
আমাদের দেশের আনাচে কানাচে থাকা বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী(রাজনীতিবিদ) যারা হাটে, ঘাঁটে , মাঠে, ট্রেনে, তরকারি বেঁচতে বেঁচতে, বাসে ঝুলতে ঝুলতে, রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে, অনলাইন পত্রিকার কমেন্টে মহান মহান মতামত দিতে দিতে, যখন তখন ঝগড়া লাগিয়ে ফেলেন! তখন তারা ঝগড়া করবেন এই ভার্চুয়াল জগতে।
সে এক অন্য রকম অনুভূতি হবে!! তারা বুঝতে পারবেন না তারা কোথায় আছেন, কেন আছেন, কিন্তু তারা ঝগড়া ঠিকই করতে পারবেন। ভাবতেই খুশি খুশি লাগছে ঝগড়াটেদের ধরে ধরে ভার্চুয়ালে দিয়ে দেয়া হলে পৃথিবী হবে শান্তিময়।
আমার ভাগ্নি একদিন গাল ফুলিয়ে, মন মরা হয়ে, মুখ ভার করে, আমার কাছে এসে বললেন, আচ্ছা একটা সত্যি কথা বলবা? আমি বললাম কি? সে অত্যন্ত সলজ্জ এবং অভিমানের কণ্ঠরোধ করে, আবেগকে প্রশ্রয় না দিয়ে বললেন, তুমি আমারে ফেইসবুকে ব্লক করছো কেন??
বললাম, অ! তুই আমারে লাইক দিছোস কেন?
ভাগ্নি আশ্চর্য হইয়া কপালে দুইবার ঠোকা দিয়া বলে হায় কপাল!! খালামনি তুমি এমন কেন! এই ইহ জামানায় তোমার মতন কেউ নাই যে লাইক দেয়ার জন্য ব্লক করে! আসলে আমি জাস্ট সোশ্যাল সাইট থেকে ভাগ্নিদের হাইট করতে চেয়েছি কত রকম লোক সেখানে আছে অনেক পোস্ট পাবলিকে দেই এইসব ব্যাপার আছে। যাকগে আমার ব্রেন যখন ভার্চুয়াল জগতে থাকবে তখন এই সমস্যা হলে কি হবে!! তখন নিজে গিয়া নিজের স্ট্যাটাসের লাইক মুছে দেয়া ডাল ভাতের ব্যাপার!!
কম্পিউটারে মস্তিষ্ক আপলোড প্রক্রিয়া দ্রুত বাস্তবে পরিণত হতে যাচ্ছে।
একটি সাক্ষাৎকারে পদার্থবিদ ব্রায়ান কক্স বলেন, ‘টেকনোলজিক্যাল সিঙ্গুলারিটি’ পদ্ধতি খুব দ্রুতই সহজলভ্য হবে, তিনি আরও বলেন, মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে সিমুলেট করতে না পারার মত কোনো কারণ আমি খুঁজে পাইনি।
এই পদ্ধতি চিন্তাভাবনাকে ডিজিটাল ডাটায় রূপান্তর করতে ব্যবহৃত হবে। এর মাধ্যমে অত্যন্ত শক্তিশালী কম্পিউটারে মানুষের বুদ্ধিমত্তাকে আপলোড করা সম্ভব।তখন মানুষ ভার্চুয়াল জগতে বসবাস করবে ফলে মানুষ অমরত্ব লাভ করবে।
গুগল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিরেক্টর রে কার্জওয়েল মনে করেন ত্রিশ বছরের মধ্যেই মানুষের পুরো বুদ্ধিমত্তাকে আপলোড করা সম্ভব হবে এবং মানুষ ডিজিটালি অমর হয়ে উঠবে। ধারণা করা হয় এটি ২১০০ সালের আগেই এটি ঘটবে।
এই কৃত্রিম সুপারিনটেনশানটি প্রযুক্তিগত বৃদ্ধি পৃথিবীতে একটি বিশাল পরিবর্তন সৃষ্টি করবে, যা আমাদের নিজস্ব প্রজাতিকে অতিক্রম করবে এবং আমাদের সভ্যতারও ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে।
তবে আমি মনে করি অমরত্ব একটি বিভ্রান্তিকর শব্দ কারণ এটি চিরকালের জীবন যাপন বোঝায়, যা অসম্ভব ।
যেহেতু আমাদের মহাবিশ্বের কিছুই চিরস্থায়ী নয়। হতে পারে এটি এই ভিন্ন প্রক্রিয়ায় মানুষের মনকে একটি দীর্ঘমেয়াদ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৩