somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডাবল চোখের রানী (ছবি ব্লগ)

১৫ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি দেখলে মাথা ঘুরতে পারে, সেক্ষেত্রে ছবি avoid করে লেখাটি পড়ুন। :) :)

আমি প্রথম নিউরো ডাক্তারের পঞ্চমবারের মতন মেডিসিন পরিবর্তন করার পর, আমি আরও অসুস্থ হয়ে পড়ায়, সেই ডাক্তার পরিবর্তন করে, অফিসে এক্সিডেন্ট করে মৃত্যুর কাছাকাছি গিয়ে জীবিত হয়ে আসা কলিগের, যার কিনা মাথার বিভিন্ন অংশ থেতলে গিয়েছিলো এবং কয়েক দফায় তার অপারেশন এবং সার্জারি হয়েছিলো, তার পরামর্শে তার ট্রিটমেন্ট করে সফল হওয়া তার মতে বাংলাদেশের নিউরোর সেরা ডাক্তারের কাছে গেলাম।

এবং পুরানো মেডিসিন পরিবর্তন করে দফায় দফায় নতুন মেডিসিন প্রেস্ক্রাইব এবং টাইমলি তা সেবন করতে হবে, এই অর্ডারের উপর ভিত্তি করে বাসায় যেয়ে নতুন মেডিসিন খেয়ে রাত নয়টার মধ্যে ঘুমালাম।

কাটায় কাটায় রাত আড়াইটা তিনটার দিকে ঘুমের মধ্যে আমি টের পেলাম, আমার শরীরের ভেতর ঠিক স্কিনের তলায় পায়ের পাতা থেকে পুড়তে পুড়তে কি যেন মাথা পর্যন্ত উঠে, মাথার প্রতিটা বিন্দু ও অলিগলিতে ছড়িয়ে যাচ্ছে। আমি আতংকিত হয়ে
উঠে বসে আরও আতংকিত হলাম।

চারপাশে গাঢ়ো সবুজ রং।
মাছের মতন চোখ আর ঝাঁকড়া চুলের ছেলে সুরমা অথবা কাজল দেয়া আমার পায়ের কাছে বসে আছে আমার বুকশেলফ এর মতনই নির্বাক জড় পদার্থের মত।

আমি এক লাফে খাট থেকে নেমে আলোর গতিতে রুমের দরজা খুলে আম্মুর কাছে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। ততক্ষনে ঠক ঠক করে কাঁপছি। শরীর জ্বলে পুড়ে ছাড়খার! কাপুনি থামছে না, পানির পিপাশা বমি ভাব এই অবস্থায় আমি আরও তিন ঘণ্টা কাটিয়ে দিলাম।

আম্মু ঘুমের ঘোরে কপালে হাত রেখে বললেন কি হইছে মা! আমি তাকে আরও ঝাপটে ধরলাম কিচ্ছু বললাম না। কাপুনি থামছে না! সবুজ রং চোখ থেকে সরছেনা! ভাবলাম আমার কি ব্রেন স্ট্রোক হচ্ছে! আমার কি আপুর মতন মাথার রগ ছিঁড়ে গেছে! আমি কি মরে যাচ্ছি!
আব্বু স্ট্রোকের পর থেমে থেমে একটু একটু হাঁটতে পারেন, আম্মুর ও হাঁটু ব্যথা কাজেই যা করার আমাকেই করতে হবে।সকাল হতেই
রাস্তায় এসে সি এন জি না পেয়ে বাসে চড়ে বসলাম। জ্বলুনি সবুজ রং দুইটাই আছে জড়পদার্থের ছেলেটা নাই।

হেল্পার যখন ভাড়া নিতে এলো চিৎকার করতে গিয়ে নিজেকে সংযত করলাম! হেল্পারের মাথা কই!!? অনেক চেষ্টার পর ধোয়া ধোয়া মাথা দেখতে সক্ষম হলাম।

হাসপাতালে ঢুকে সরাসরি নিউরো জোনের রিসিপশনে গিয়া বললাম আমি হয়তো মরে যাইতেছি গতকালের দেখানো আমার নিউরো ডাক্তার কই!! ডাক্তার ওটিতে যাবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সে আমাকে দেখে দ্রুত প্রেশার মেপে কয়টা আঙ্গুল দেখতে পাচ্ছি এইটা সেইটা টেস্ট করে আমার কাধে ঝাকুনি দিয়া বললেন you are absolutely fine my dear তোমারে বাসা থেকে বের হইতে বলছে কে??

নতুন কিছু শরীরে মানাতে তো একটু সময় লাগে। আমি ক্ষীণ কণ্ঠে বললাম আমি আসলেই ঠিক আছি? মাথার রগ ছিঁড়ে নাই? স্ট্রোক হয় নাই? উল্টাপাল্টা দেখছি কেন আমি কি তবে পাগল হয়ে গেছি? ডাক্তার অত্যন্ত যত্ন করে বোঝালেন আমাকে যে ড্রাগ দেয়া হইছে ওটার কারনেই এই সাইড এফেক্ট আর হেলুসিনেশন হচ্ছে এবং আরও সাতদিন পর্যন্ত হবে। এতে আমি যেন আতংকিত হয়ে না পড়ি।
যাক এই হল আমার অল্প কিছুদিন আগের এক্সপেরিয়েন্স।

অ্যালেক্স গ্র্যান্ড নামে এক চিত্রশিল্পী ২০১২ সালে হার্ট অ্যাটাক করে মানুষের মুখচ্ছবি এই রকম অদ্ভুত কিছু ডাবল চোখ visualize করেছেন এবং নিশ্চিত মৃত্যু থেকে বেঁচে ফিরে তিনি পূর্ণ জন্ম পাইলেন এই রকম খুশি হয়ে, পরবর্তীতে বেশ কিছু ডাবল চোখের রানী শিরোনামে পোট্রেট ছবি আঁকেন এবং এক্সিবেশন করেন যা দেখে মানুষ অবাক যেমন হয়েছেন, তেমনি চিন্তিত ও হয়েছেন।।

শিল্পীর আঁকা ডাবল চোখের রানীরা---

প্রতিটি ছবির ভেতর অদ্ভুত বিষণ্ণতা

























শিল্পী অসুস্থ অবস্থায় দেখা মুখচ্ছবি কাজে লাগিয়ে অদ্ভুত সুন্দর এই ছবিগুলো এঁকেছেন। যাই হোক হার্ট স্ট্রোক কিংবা ব্রেইন স্ট্রোক আজকাল এই অসুখটি যখন তখন যে কোন বয়সের মানুষের হচ্ছে। দুটাই অনেক ভয়ঙ্কর বেশির ভাগ বাঁচার সময়ই দেয় না। সবাই ভালো থাকুন।


ছবি শিল্পীর প্রতিবেদন; পাণ্ডা থেকে সংগৃহীত ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১১
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×