বেশ কিছুদিন আগে একটি দুর্দান্ত এবং অদ্ভুত শর্ট ফিল্ম দেখেছিলাম, কাহিনীটা ছিল এইরকম, এক অতি সুন্দরী মেয়ে তার হাজবেন্ড বা পার্টনারের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তে আসেন যে, সে পানি ভর্তি বাথটাবে মুখমণ্ডলসহ সারা শরীর ডুবিয়ে শুয়ে পড়বেন এবং তার পার্টনার তার গায়ের উপর ভারী পাথর কিংবা এই জাতীয় কিছু দিয়ে দেবেন, যেন ছয় মিনিট কিংবা আরও বেশি(এখন মনে পরছেনা)সময়ের আগে সে চাইলেও পানি থেকে উঠে আসতে না পারেন। এইটাই প্র্যাকটিস,
মেয়েটি কথা মতন নাক মুখ শরীর ডুবিয়ে বাথটাবে শুয়ে পড়ার পর, তার বুকের উপর ভারী পাথর দিয়ে মুখমণ্ডল পানির বাইরে আনার পথ বন্ধ করে দেবার পরে, দুই তিন মিনিটের মাথায় শুরু হয় মেয়েটির নিঃশ্বাস নেয়ার চেষ্টার তোলপাড় চিত্র, সেই চিত্র ছিল সত্যিকার অর্থেই ভয়াবহ। একটা মানুষ দম বন্ধ হয়ে মরবার সময় সাধারণত কি কি আচরণ করেন তাই পরিচালক অত্যন্ত নিখুঁত ভাবে ফুটিয়ে তোলেন।
পার্টনার তাকে কথা দিয়েছেন যে নির্দিষ্ট সময় পার না হওয়া পর্যন্ত সে যত পাগলামি করুক তাকে যেন না তোলেন, কাজেই ছেলেটি দাঁত মুখ খিঁচিয়ে তার বউ কিংবা পার্টনারের মৃত্যু যন্ত্রণা ধরনের আর্ত চিৎকার সহ্য করেন এবং সহ্য করতে থাকেন।একসময় ঘড়ির কাঁটা লক্ষ্য বিন্দুতে পৌঁছালে মেয়েটার বুক থেকে পাথর সরিয়ে পানির বাইরে নিয়ে আসার পর আবিষ্কার করেন যে মেয়েটি মরে গেছে।
আমি তখন এই ভেবে শিউরে উঠি যে, এইরকম ঝুঁকিপূর্ণ কত শত প্র্যাকটিস করে না জানি কত মানুষ প্রান হারাইছেন, তাই এই সম্পর্কে আরও নিউজ পড়তে গিয়ে এইরকম অনেক সত্যি কাহিনীর সাথে বসনিয়ায়েকের সত্য কাহিনী আবিষ্কার করি।
শ্রীলংকার জনাক বসনিয়ায়েকের মরণ হয়েছে ইচ্ছাকৃত সময় বেঁধে গিনেস বুকে মাটির নীচে দীর্ঘ সময় থাকার রেকর্ড করার আকাঙ্ক্ষা থেকে। মানুষের জীবনে কত রকম ইচ্ছে হয়, বিচিত্র মানুষ।
২৪ বছর বয়সী এই শ্রীলংকান ছেলে, তার পরিবার এবং বন্ধুদের জানিয়েই এই রেকর্ড গড়তে চেয়েছিলেন, সে সময় শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোর স্থানীয় কাগজপত্রগুলিতে তার এই চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে খবর ছাপানো হয়েছিলো সেখানে জানানো হয় ছেলেটি দশ ফুট মাটির গভীরে টানা ৭ঘণ্টা থাকার রেকর্ড গড়বেন।
বসনিয়ায়েক যখন দশ ফিট গভীরের গর্তে নামেন তখন পুরাপুরি সে সুস্থ, তার কথা মত ৭ ঘণ্টা পর তাকে মাটির নীচ থেকে তোলা হলে দেখা যায় তিনি অচেতন, হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানের ডাক্তার পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালে ডাক্তাররা বসনিয়ায়েকের ময়নাতদন্ত করেছিলেন, তারা মৃত্যুর কারণ কি ছিল তা নির্ধারণ করতে পারেননি।
ছেলেটির মা বলেছিলেন যে তার ছেলে শৈশব থেকেই যে জিনিসগুলি অস্বাভাবিক ছিল সেগুলি পছন্দ করতেন।
এর আগে বসনিয়ায়েককে অল্প সময়ের জন্য দুইবার জীবন্ত কবর দেওয়া হয়েছিল। প্রথমবার দুই আড়াই ঘন্টা ছিল। দ্বিতীয়বার ছিল ছয় ঘন্টা।
এটি বর্তমানে অজানা যে দীর্ঘতম সময়ের জন্য মাটির নীচে থাকা বিশ্ব রেকর্ডটি আনুষ্ঠানিকভাবে কার।
আমি মনে করি নিজেকে শেষ করে ফেলতে হয় এমন কোন কিছুতে বিশ্ব রেকর্ড জয় করার চেষ্টা করার অনুমতি সরকারি ভাবে নিষিদ্ধ হোক। অন্তত এই ধরনের রেকর্ড করবার সময় যখন শ্বাস কষ্ট শুরু হয়েছিলো তৎক্ষণাৎ তা জানিয়ে দেবার সিস্টেম করা উচিৎ ছিল।
তথ্য লিংকঃ Man Dies While Trying to Set Record for Longest Time Buried AliveSri Lankan man dies trying to set record for longest time buried alive