ঘুরে বেড়াবার জন্য ঢাকার কাছাকাছি দিয়াবাড়ি ভালো জায়গা security আছে, নদী আছে, খোলা আকাশ আছে, কাশফুল গাছের ঝাড় আর শরত ঋতুতে কাশফুল আছে, হাতের কাছে এরকম জায়গা থাকাটা অবশ্যই ভাল ব্যাপার। জায়গাটা বড় এবং খোলা, আকাশটার অনেকখানিই দেখা যায়। এটা জরুরী ব্যাপার অনেকের কাছেই হয়তো না, আবার অনেকের কাছেই জরুরী ব্যাপার। প্রকৃতি মানুষের মন কে রিফ্রেস করে এটা তো ভুল নয়। একবার আমি মন খারাপ করে একা একটি হই চই পূর্ণ স্থানে দাঁড়িয়ে আছি, আমার বেখেয়ালে এক ইন্টার প্রথম বর্ষ পড়ুয়া মেয়ে আমায় লক্ষ্য করে কথা বলতে এগিয়ে এলো এবং আমারই মতন পরিচিত মিশুক ভঙ্গি নিয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললো, আপু আপনার মন খারাপ? মন অতিরিক্ত খারাপ হলে যা হয় আর কি! কিছুই লুকানো যায় না, পরিচিত অপরিচিত ঘরের না বাইরের মানুষ কিছুই খেয়াল থাকেনা, মনের দুঃখ সব উজার করে বলে দিতে মন চায়। আমি তাকে অতি দুঃখিত কণ্ঠে বললাম আর বোলোনা আমি কেন মরে যাচ্ছি না বুঝতে পারছিনা, এই ধরো এখুনি, এই মুহূর্তে, একদম মাটির নীচে একটা গর্ত করে পারলে ঢুকে পড়তাম এখুনি।
খুবই উল্টা পাল্টা ভড়কে যাওয়া কথা, মেয়েটির বয়স কম হলেও অতিরিক্ত বুদ্ধিমতি কিংবা সে তার ছোট্ট জীবনে পুড়ে পুড়ে খাঁটি হয়েছে সে আমার কথায় বিন্দু মাত্র প্রতিক্রিয়া দেখালো না, আমার উপর থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে সামনের দিকে ফিরলো সেখানে বৈশাখ উপলক্ষে নানান ধরনের জিনিষপত্রের মেলা বসেছে, ক্রেতাদের ভিড়।
সে বলল সে আমার সাথে এমনি এমনি কথা বলতে আসে নাই, আমাকে চেনে, এবং আমি তার আইডল, সে যখন কষ্ট পায় তখন দূর থেকে আমাকে দেখে সাহস সঞ্চয় করে,কারন তার মতে আমি সেই লক্ষে পৌঁছে গেছি যে স্থানটা তার টার্গেট।
আমি তার কথা শুনে বললাম তাইলে তোমার আইডলের জন্য একটা গর্ত খুড়ো আমি ঢুকে পড়ি। তখন সে আমাকে বুদ্ধি দিলো যখন মন খারাপ হবে তখন একা থাকতে না, এবং বাইরে অথবা ছাদে গিয়া আকাশ দেখতে, কিছুনা শুধু আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে, এতে করে আকাশ এত বিশাল যে সে মানুষের ক্ষুদ্র কষ্ট নিমিষেই শুষে নিতে বাধ্য ফলে মন ঠিক হয়ে যায় আর উল্টাপাল্টা চিন্তা মাথায় আসে না।পরবর্তীতে আমি আকাশ দেখে দেখে অনেকবার মন ভালো করেছি।
কাজেই হতাশা থেকে বের হবার জন্য, কষ্ট ভুলে যাওয়ার জন্য, অভিমান ভুলে যাওয়ার জন্য, নিজেকে নিজের মনের ভিতর প্রাণশক্তি সঞ্চারের জন্য, প্রকৃতি আবশ্যক।
ভালো ব্যাপার হচ্ছে দিয়াবাড়ি সন্ধ্যার পর কাউকে থাকতে দেওয়া হয় না, সিকিউরিটির জন্য এটা তারা করে, ভালই তো।
এখন বর্ষার আকাশ ঝকঝকে নীল, কাশফুল গাছগুলো সবুজ রঙে রঙ ধারন করেছে, খুব শীঘ্রই আসবে শরৎ কাশফুলে ভরে যাবে চারপাশ, এরকম সুন্দর প্রকৃতির কাছে থাকা আনন্দের ব্যাপার।
সবুজের সমারোহ প্রকৃতি
বেশকিছু অর্ধনির্মিত বাড়িঘর উঁকি দিচ্ছে আজকাল দিয়াবাড়িতে।
ছুটির দিনগুলোতে সবখানে থাকে উপচে পড়া ভিড়, তারপরও জায়গাটা এত বিশাল যে খোলা আকাশ পাওয়া যায় ঠিকই।
সে ভালোবাসে নাই, এইরকম একটি কথা, এরকম একটু স্মৃতি মাথায় নিয়ে ঘুরলে শুধু মনের অশান্তি বাড়বে বরং এভাবেই ভাবা উচিত যে, সে ভালোবেসেছে, মন প্রাণ উজাড় করে ভালবেসেছে এবং সাথে আছে সাথেই থাকে সবসময়। এমনি একটু ফিলোসফি করলাম।
চাইলে প্রকৃতি দেখতে দেখতে চটপটি ও ফুচকা খাওয়া যেতে পারে। টেস্ট চলে (সত্যিটা হলো ভালো না)
এই ছেলেটাকে একবার আমি টাকা দিয়েছি আবার ঘুরে ঘুরে আসছে ছবির মধ্যে, এখানে ভিক্ষুক এবং টোকাইরা মাঝে মাঝে বিরক্ত করে, তবে মানা করে দিলে চলে যায়।
শেষ কথা হলো কাশফুলের দিন দিয়া বাড়ি একটা সামু ব্লগার গেট টুগেদার করলে ভালো হতো না? ব্লগাররা নিশ্চয়ই আজীবন অধরা থাকবে সেই প্রতিজ্ঞা করে নেই?? বেশিসংখ্ক ব্লগার ইচ্ছা পোষণ করলে একটা ইভেন্ট হয়ে যেতে পারে কিন্তু।।