somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি সমুদ্র সৈকত ফিরে পাওয়ার ঘটনা

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বেশ কয়জন মেয়ের সাথে গল্প করতে করতে নিজের অভিজ্ঞতার কথা বললাম যে একবার ইউনিভার্সিটি ভাইভায় এক বৃদ্ধ হই হই ধরনের এবং হুজুর হই হই ধরনের এক শিক্ষক আমায় প্রথম দর্শনে বলেছিলেন আপনার ইহ জিন্দেগীতে চাকরী হবে না। চেহারা দেখেই না করে দিবেন কারন আমার চুল খোলা রেখেছিলাম।

ওয়েল লিসেনাররা উৎসুক হয়ে টিচারের এই মন্তব্বের জবাবে আমি কি বলেছিলাম জানতে চাইলেন, আমি বেশ কমেডি ভয়েস করে বললাম আমি বলছি আমি তো চাকরী করি স্যার। ফেডএক্স এ এসিস্টেন্ট একাউন্টেন্ট হিসেবে চাকরি করি। এছাড়া একটা পত্রিকায় এডিটরের কাজ ও করি, বাড়ির পাশের কয়েকটা গরীব বাচ্চাদেরকে ও পড়াই।
টিচার ভাইভা শেষে আমার ভিজিটিং কার্ড রেখে ধন্য হলেন। অনুরোধ করলেন ইউনিভার্সিটির ব্যাপারে কোন নিউজ ছাপাতে হলে আমি যেন পত্রিকায় ব্যাবস্থা করে দেই। বলেছি করে দেবো।
সাথের আরেকজন জানালো যে তার নাকি statistics প্রাক্টিকাল পরীক্ষায় এক টিচার ঘুরে ঘুরে সব মেয়েকে এই প্রশ্ন করতে থাকলেন যে মেয়েরা রান্না করতে পারেন কিনা আর যদি রান্না করতে না পারেন তবে তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। একটায় ও চাকরী পাবে না। রান্না করতে পারার সাথে চাকরীর কি সম্পর্ক আল্লাহ্‌ মালুম।

ঘটনা হচ্ছে চাকরীর বাজার দেশে ভালো না, তার উপর আমাদের সমাজের অনেক পুরুষ মেয়েদের মেয়ে মানুষ এবং এরা অকেজো ভিন্ন প্রজাতির নিকৃষ্ট জাতি এবং এদের দিয়ে কিচ্ছু হবে না, এই রকম চিন্তাধারা থেকেই এই রকম অহরহ কমেন্ট করে থাকেন।

কথা হচ্ছে কাউকেই দুর্বল ভাবতে নেই, একটা মানুষকে এক নজর দেখেই তার সম্পর্কে ভালো মন্দ মন্তব্য ছুঁড়ে দেয়া (বেশির ভাগ খারাপ)আমাদের সমাজে সর্বজনগ্রাহ্য ব্যাপার।
তবে এইখানেই সব থেকে বোকামি এবং ভুল মানসিকতা। এতে করে তারা নিজেরা জীবনে যেমন কিছু করতে পারেনা তেমনি কাউকে করতে দিতেও চায় না।




মুম্বাইয়ের এই ছেলেটির (আফরোজ শাহ) সম্পর্কে জেনেছিলাম সনি টিভির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান কন বানেগা ক্রোরপতি প্রোগ্রাম থেকে, সেখানে সে জানিয়েছিলেন সে দেশের বাইরে পড়াশুনা ও চাকরীর কারনে বিশ বছর কাটিয়ে দিয়ে দেশে ফিরে তার প্রিয় সমুদ্র সৈকত মুম্বাইয়ের ভার্সোভা সৈকত দেখে দুঃখ ভারাক্রান্ত হলেন, এবং কেঁদে দিলেন এই কারনে যে সেখানে ময়লা আবর্জনার স্তুপের আড়ালে তার প্রিয় সমুদ্র ঢাকা পড়েছে। যেখানে তার ছেলেবেলা কেটেছে।



এবং তিনি নিজ উদ্যোগে সমুদ্র সৈকত পরিষ্কার অভিযানে নামেন। প্রথমে তাকে কম বেশি সবাই এই বলে বাঁধা দেন যে সে যা করতে যাচ্ছে তা কোন ভাবেই সম্ভব না। এই রকম ময়লার স্তুপ সরাবে কি করে, সে কিছুতেই পারবে না, স্থানীয় লোকজন কেউ কেউ এই বলেও তাকে বাঁধা দিয়েছিলেন যে তারা শহরের ময়লা তাহলে ফেলবেন কোথায়? কাজেই এই ধরনের চিন্তা এবং উদ্যোগ বন্ধ কর।

সে সবার কথা হাসি মুখে শুনলেন এবং বোঝালেন সে সব কিছুর সমাধান করবেন এবং সে তা করতে পারবেন।
প্রথমে তিনি একা থাকলেও ধীরে ধীরে তাকে বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় লোকজন সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন।


জাতিসংঘ এটিকে "বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত পরিষ্কারকরণ প্রকল্প" বলে ঘোষণা করেছেন। যেখানে স্বেচ্ছাসেবীরা 85 সপ্তাহের মধ্যে 5 মিলিয়ন কিলোগ্রাম প্লাস্টিককে সরিয়ে দেয়।

কথা হচ্ছে গিয়ে মানুষকে নিরুৎসাহিত করা,ছোট করা, কাজ সম্পর্কে বিরুপ ধারণা দেয়া, কিছু হলেই দেশ খারাপ দেশের দোষ বলে দেশের বিশাল অংশের মানুষকে হতাশায় ফেলা সহজ। খারাপ একটা মন্তব্য কারো সম্পর্কে না জেনে না বুঝে করাই যায়,কিন্তু কত জন যে এই দেশেই আফরোজ শাহ আছে সেই কথা কেউ বলেনা কেন, কতজন তো আছে কত ভালো ভালো কাজ করছে, শুধু খারাপ ব্যাপার গুলোই কেন হাইলাইট করতে হবে, এতে কি দেশের মানুষ হতাশাগ্রস্থ হয়না, খারাপের সাথে দেশ সম্পর্কে দুটা ভালো কথা কি বলা যায় না? গত কতদিন ধরে ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের জন্য ট্রাফিক পুলিশের সাথে কাজ করছে, কত মানুষ চলতে ফিরতে কতজন কে সাহায্য করছে। এরকম ভালো ব্যাপার অল্প হলেও তো হচ্ছে না?একটু উৎসাহ উদ্দীপনা মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে অনেক উর্ধে।


তথ্য সুত্রঃ টিভি প্রোগ্রাম এবং ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৭
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×