ইদানীং ভুতের মুভিগুলা একই ধাঁচে তৈরি হচ্ছে, জেমস বন্ড সিরিজ দেখতে বসার আগেই যেমন দর্শকগন বুঝতে পারেন এই মুভির শেষে হিরো সমস্ত মাফিয়া চক্রের সাথে মারামারি এবং অতি উন্নত অস্ত্র সস্ত্রের ফাঁক ফোঁকরের ভেতরেও, ঠিকই বেঁচে থাকবেন আর মাফিয়া গ্রুপের সবাইরে মেরে ক্রাইমের অবশান ঘটাবেন। সেইরকম আজকালকার হরর মুভির বেহাল অবস্থা। দেখার আগেই পাঁচ বছরের বাচ্চা কাচ্চাও বলতে পারেন যে ভুতেরা যত শক্তিশালী হোক এরা নায়ক নায়িকার সাথে সুবিধা করতে পারবেন না।
হরর মুভির শুরুতেই দুই একজন বীভৎস ভাবে মরে গিয়ে দর্শকের মনে একটা বিচ্ছিরি রকম আতঙ্ক তৈরি করে দিয়ে, এরপর কেন ঐ মৃত্যু হলো কি জন্য হলো জানা দরকার, জানতে হলে ঐ জায়গায় যেতে হবে, ওইখানে অন্ধকার ঘরে খুব বেশি হলে ক্যান্ডেল লাইটের আলো থাকবে, তারপরই শুরু হবে ভুতের মাতম, একটু পর পর উনাদের একটিভিটি, ধুম ধাম আওয়াজ আর অন্ধকারে কিছু দেখা যাবে কিছু দেখা যাবে না, তার ভেতর চলবে আক্রমণের উপর আক্রমণ, জীবিতদের বাঁচবার লড়াই, অশরীরীদের নানান কিম্ভুত রুপ ধারন, এই হল ভুতের ছবির মাজেজা, মাজেজা শব্দটার সমার্থক শব্দ কি এই মুহূর্তে জানিনা, মাজেজা মানে মুল ভাব হতে পারে।
নান ছবির শুরুতে দেখা যায় দুই নান একজন অতি রূপবতী, আরেকজন খিটখিটে সাহসী বয়স্ক নান কোন অদৃশ্য খারাপ শক্তির হাত থেকে বাঁচবার জন্য একটা টানেলের মদ্ধ দিয়া এগিয়ে যাচ্ছেন।
তারা কিছু একটা পাবার জন্য কিংবা কিছু একটা থেকে বাঁচার আশায় কিংবা ঠিক কি কারনে তারা নিজেরাও জানেননা এইরকম নানান প্রশ্ন উনাদের নিজেদের এবং সকলের মাথায় রেখে টানেলের শেষ মাথায় আরেকটা টানেলের সামনে দাঁড়িয়ে কম বয়সী নানকে অপর নান বলেন, তুমি এইখানে দাড়াও আমি যদি ফিরে না আসি তাইলে তুমি কি করবা? আমার মনেহয় খারাপ শক্তির হাতে মরার থেকে আত্মহত্যা করলে ভালো হবে।
ক্রুশ শক্ত হাতে চেপে ধরে অপেক্ষা করতে করতে কম বয়সী নান উনাদের ধর্মের দোয়া দুরুদ পড়তে পড়তে খানিক পর চিৎকার এবং টানেলের ভেতরে যাওয়া নান এর আহত কিংবা মৃত্যু দৃশ্য দেখে উনি আত্মহত্যা করবার জন্য গলায় দড়ি পড়েন,
তখনি আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে সেই দুর্গে অদৃশ্য শক্তি এসে, আত্মহত্যা করতে ইচ্ছুক গলায় দড়ি পড়া নান এর ঘাড় মটকে মরতে সাহায্য করেন।
তার লাশ দুর্গের দরজায় ঝুলিয়ে রাখেন, গ্রামের ফেন্সি নামের একজন যুবক ধরা যায় ছবির হিরো, সেই হিরোকে ভয় দেখাতে। তারপর পুরা ছবি জুড়ে চলে সেই নানের মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যা ভুত নান এবং অদৃশ্য সেই শক্তির সাথে লড়াই, এক্সরসিজম এবং তদন্তের সময় নানান ধরনের বিপদ আপদের পর ও উনারা তিনজন গ্রামের সহজ সরল ছেলে, নান নায়িকা এবং ফাদারের জয়।
মুভিঃ দি নান
পরিচালকঃ করিন হার্ডি
কাস্টঃ
ডেমিয়ান ফাদারঃ বুরকে
তিস্তা ফার্মিগাঃ আইরিন
মরিস জোনাসঃ ব্লকেট
মুভিতে কিছু কিছু দৃশ্যায়ন ভালোই ছিল, গ্রামের গরীব ছেলে ফেন্সির দরিদ্র বাড়িঘর, জঙ্গল, কবরস্থান এইসব,
এছাড়া ক্রুশ উল্টে যাওয়া উল্টে গিয়ে আগুন ধরা, কিংবা ফাদারকে কবরে ফেলে জ্যান্ত মাটি চাপা দেয়া, কিংবা ঘুম থেকে জেগে রুমের ভেতর অন্য কাউকে দেখা, এগুলো পুরানো হরর মুভিগুলাতেও বহুবার দেখা গেছে। নতুনত্ব বলতে গেলে তেমন কিছুই নাই ছবিটাতে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৮