- বাবু তুমি বড় হয়ে কী হবা?
- ডাক্তার।
- ডাক্তার হয়ে কী করবা?
- সয়ূজ দাদার বউয়ের পেট কেটে বাবু বের করবো।
এটা ছিল আমার ৬ বছর বয়সী মামাতো ভাইয়ের জীবনের লক্ষ্য। তার Aim in life এর সুবাদে আমি তাদের এলাকায় রীতিমত সেলিব্রেটি বনে গিয়েছিলাম।
রংপুরে মামার বাসায় বেড়াতে গেলে আশেপাশের ফ্ল্যাটের আন্টি, ভাবি আর আপুরা সয়ূজ দাদাকে দেখতে হাজির।
আমার ভয়ডরহীন জীবনে এই বিচ্ছু ছিল মূর্তিমান আতঙ্ক। যতই তাকে এড়িয়ে চলি সে ততই আঠার মত আমার পেছনে লেগে থাকে।
মামারা দিনাজপুর বেড়াতে এসেছে। আমি তখন ক্লাশ নাইনের ছাত্র। আমার রুমে বসে পেপার পড়ছি। হঠাৎ কোথ্থেকে যেন উদয় হলো ল্যাঞ্জাবিহীন বানর। এসেই তারস্বরে চিৎকার- দাদা তুমি ন্যাংটু মেয়ের ছবি দেখছো কেন?
ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতম্ভব। খাট থেকে লাফ দিয়ে নামতেই সে ভো দৌড়। কিন্তু তার চিৎকার আর থামেনা।
পত্রিকাওয়ালারা বিনোদন পাতায় বলিউডি নায়িকাদের রগরগে ছবি ছাপালে তার দোষ কী আমার? ৬ বছরের ইঁচড়ে পাকাকে আমি এটা কী করে বোঝাই।
ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শেষ এখানেই নয়। এবারের বাচ্চা আমার টিউশন জীবনের এক ছাত্রীর ছোটবোন। বয়স ৫। সবে স্কুলে ভর্তি হয়েছে। তাদের বাসায় উপস্থিত হবার পর থেকে ছাত্রীর আবির্ভাব ঘটার আগ পর্যন্ত সে বাসার এ টু জেড সংবাদ আমায় জানান দেয়।
এমনই এক ভয়ানক দিনে ছাত্রীর মা এসে জানালো উনার ছোটবোন অনার্স পড়ছে। বিসিএস এবং চাকরি বিষয়ে তাকে নাকি কিছু টিপস্ দিতে হবে।
আমি তো মহানন্দে রাজি। কিছুক্ষণের মাঝেই সেই পিচ্চির হাত ধরে এক রূপসী তরুণী হাজির। ওড়না দিয়ে পুরো শরীর আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা।
হাই-হ্যালো পর্ব সমাধা করে আমরা সবে জ্ঞানগর্ভ আলোচনায় প্রবেশ করেছি। হঠাৎ পিচ্চি বলে উঠলো-স্যার জানো আমি আর খাম্মি (খালামণি) না ড্যান্স করি।
আমি না শোনার ভান করে খাম্মিকে জ্ঞান দিচ্ছি। কিন্তু পিচ্চি এবার আগের চেয়েও গলার স্বর চড়িয়ে- ও স্যার, ও স্যার শুনোনা, খাম্মি আর আমি না ড্যান্স করি।
বিপদ দেখে আমি বলি, 'তাই। কী ড্যান্স করো?'
পিচ্চি উত্তর দেবার আগেই খাম্মি চোখ বড়বড় করে বলে- বাবু, তুমি ভেতরে যাও। আমরা কথা বলছি না?
- না, আমি যাবোনা।
- যাও সোনা। নাহলে কিন্তু পিট্টি দেব।
- পিট্টি দিলে আমিও স্যারকে বলে দিব তুমি স্যারকে ভ্যাবদা বলছো আর বিয়ের পর তুমি স্যারকে ড্যান্স করাবা...
কার বিয়ে, কিসের বিয়ে শোনার আগেই খাম্মি পিচ্চিকে নিয়ে উধাও। ...
ওহে শিশু তুমি এত সত্যবাদি কেন???