#প্রাইমারি স্কুলের পাশেই ছিল ছোট খাল (স্থানীয় ভাষায় চড়ি বলে)বর্ষাকালে পাহাড়ি পানির স্রোতে কিছুটা গর্ত হতো,রাস্তা হতে উচ্চতা ছিল প্রায় দশফুটের মতো,ওখানে স্কুল ছুটি হলেই জামা-কাপড় খুলেই লাফ!
হঠাৎ একদিন আমাদের গ্রামের বাহির থেকে একদল ছেলে পাখি ধরতে এসে সেখানে লাফ দেয়..তিনজনের মধ্যে একজন আর ওঠে আসে না।সাহস করে কেউ তাকে তুলতে পারেনা,,শেষে সাহসী আক্রাম ভাই তার তিনবারে ডুবে সফল হয়ে এক ব্যর্থতার ইতিহাস রচনা করলেন,
ছেলেটার সাদা দেহটাই নিথর হয়ে উঠলো,নাক দিয়ে ফেনা ঝরছিল সাদা আর লালে মিশেল।স্থানীয় পাহাড়ি বাঙ্গালী অনেক কবিরাজ-বৈদ্য এসে জানালো-সেখানে খারাপ কিছু আছে,যেটা তাকে টেনে নিয়ে গেছে..।
পরের সপ্তাহ খানেক আমরা লাফ দিইনি,তারপর,সবকিছু ভুলে আবারও,এমন শীতল পানিতে এতটা উচ্ছাস কেও ভয়ে ত্যাগ করতে পারে?
#প্রাইমারি স্কুলের আঙ্গিনায় একটা কাঁঠাল গাছ ছিল,জানা-শোনা মতে আমাদের পূর্বসুরীরা লাগিয়েছেন।প্রাইমারী ছেড়ে যাবার আগ মুহূর্তেই আমাদের প্রধান শিক্ষক ইন্তেকাল করলেন,তিনি অনেক ভাল মানুষ ছিলেন। ওনার পদ শুন্যতায় নতুন একজন পদ দখল করার সাথে সাথে স্কুলে যাবতীয় সব দখলে নিল,,আমাদের সাধের আম কাঁঠাল কিংবা ফুলের গাছ,খেলার মাঠ অবধি।কাঁঠালের মৌসুম,গাছে পাকা আছে,কিন্তু ছেলেদের দিবে না।তো একদিন আমার উদ্দ্যেগে কাঁঠাল গাছে অভিযান চললো,আমরা পাঁচজন ছিলাম,পরের দিন স্কুল জুড়ে হই-হই কান্ড রই-রই ব্যাপার! স্কুলের পাশের বাড়ির একজন নাকি আমাকে গাছে উঠতে দেখছে..।
জীবনে প্রথমবারের মতো কোন অভিযানে ব্যর্থতা,তার ওপর চুরির প্রধান আসামীর বিরল খেতাব অর্জন করলাম।
#প্রাইমারি শেষ,,,হাই স্কুলের প্রথম দিনে আমার পরনে হাফ-প্যান্ট আর গায়ে গেঞ্জি।প্রথম ক্লাসটা কোনভাবে পার করার পর,২য় ক্লাসে একটা ম্যাডাম এসেই আমাকে দাঁড় করালো,গণিত করান ওনি।আগের দিন কি যেন পড়া ছিল-‘এসেই আমার হাতে কষ করে দুই-ঘা বেতের বারি বসিয়ে বল্লেন- “স্কয়ার চিনিস বেটা?” আর কি পরে আসচিস! এইটা কি??! বলে আরো দুই বারি।সবাই আমার দিকে ফ্যাল-ফ্যাল নজরে তাকিয়ে রইল।
সেদিন বুঝলাম,আমার হাফ প্যান্ট পরার বয়স ‘কাল’ নামের কিছু একটা নিয়ে চলে গেছে।
#সপ্তম শ্রেনির কোন একদিন,এখন মোটামুটি সবার কাছেই আমি ভাল ছেলে।ক্লাস শুরুর আগে আমরা জোড়া জোড়া হয়ে স্কুলের বারান্দায় পাঁচ গুটি খেলা (স্থানীয় ভাষায় কুত্তা খেলা) খেলতাম।আমি আর হাসিনা খেলছিলাম।কিছুক্ষন পর হাসিনা খেলে আর হাসে।আমি ওরে জিগায় ‘হাসোস কেনো?’ সে কিছুই বলে না,শুধু বলে ‘খেল’।এক গেইম শেষ হবার পর আমাদের এসেম্বেলীর জন্য ডাকা হলো।এসেম্বেলী শেষ করে টয়লেটে গিয়ে হাসিনা হাসির কারণ আবিষ্কার করলাম : আমার প্যান্টের ঠিক মাঝ বরাবর সেলাইটা খোলা ছিল!
#তখন ক্লাস এইট,বয়স-সন্ধী ফন্দি ওসব বুঝতাম না,বিকেল বেলা আমাদের বাড়ির সামনে বিশাল পাহাড় ছিল,ওটাতে ছোট বড় সবাই মিলে খেলতে যেতাম,আমাদের কয়েক ব্যাচ সিনিয়র ভাইরা কতগুলা সাদাকালো বই খুব মনোযোগ সহকারে পড়তো,অথচ পড়া লেখা প্রাইমারি শেষ করেনি।খুব আগ্রহ জাগলো দেখি ওনারা কি পড়েন এত্ত মনোযোগ দিয়া(?)।
একদিন বিকেলে আমি আর আরেক বাল্য বন্ধু জঙ্গলের একটু ভিতরে আবিষ্কার করিলাম তাহাদের সেই পাঠ্যবই! একটা বইয়ে অনেকগুলা গল্প আর কিছু খোলামেলা সাদাকালো ছবি! বোধয় বয়স সন্ধীর সুড়সুড়ি টের পেলাম সেদিন!!
#অতটা স্টাইলের চিন্তা মাথায় আমার কখনোই আসেনি,কালচার দেইনি বল্লে হয়।হঠাৎ চমক নিয়ে চুমকি’ এলো। পুলিশের মেয়ে,প্রাইমারিতে ভর্তি হইছে,তাও সম্ভবত ক্লাস ফাইভে, আর আমি এইট!ওরে দেখতেই ভাল লাগতো।তখনকার দিনে কখনো প্যান্ট আইরন দেবার চিন্তা মাথায় আসত না,আমি স্টিলের টিপিন বাটিতে গরম কয়লা নিয়ে প্যান্ট আইরন দিলাম,তার সামনে একটু স্মার্ট
হয়ে যাওয়া লাগবে না! (?) ওকে শুধু দেখতাম,ওরে দেখার জন্যই টিপিন পিরিয়ডে স্কুল পালিয়েছি পেট ব্যাথা বলে, কিন্তু কি আজব কখনো কথাও হয়নি ওর সাথে!
ছবি: ইন্টারনেট হতে সংগৃহীত।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:২২