গাফফার চাচা অর্থাৎ আবদুল গাফফার চৌধুরীর লেখা পড়ি ক্লাস নাইন থেকে । তখন তিনি দৈনিক ইত্তেফাকে লিখতেন । নিউইয়র্ক বসে তিনি লিখতেন ইত্তেফাকে তা ছাপাত এবং আমি মূর্খ সেগুলো পড়তাম । ভাবতাম লোকটা কতো না জ্ঞানী । বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার কি অগাধ বিশ্বাস, কি ভক্তি ! দেশের প্রতি কি তার টান । টানটান উত্তেজনা নিয়ে তার কলাম পড়তাম ।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছু পরিবর্তন হয় । মানুষের শরীরে পরিবর্তন আসে পরিবর্তন আসে মনে ও মগজে । কাদামাটির মনটা শক্ত হতে হতে ইটপাথরের মতো শক্ত হয়ে যায় । পরিপক্বতা আসে চিন্তা চেতনায় । আমারও সেইসব পরিবর্তনের ঋতু অতিক্রম করার পর গাফফার চৌধুরীর লেখাগুলো একসময় মনে হয়েছে খড়কুটা কিংবা ভুষি । একই প্যাঁচাল একই টাইপের গান একই বস্তাপচা সংলাপ আলাপ । যেখানে একটু খেয়াল করলেই দোদুল্যমান লেজুড় দেখা যায় । এরপর গাফফার চৌধুরীর লেখা আর পড়া হয়নি । সেটা ও বছর ১৫ হবে । আমার প্রিয় মানুষের তালিকা খুব দীর্ঘ নয় সেই তালিকাটা ছোট হতে হতে এক সময় খুবই ছোট হয়ে যায় । এখন সেখানে টিকে আছেন শুধু মুকুল ভাই ।
যা বলতে চাইছিলাম, একসময়ের প্রিয় গাফফার চাচার কিছু বক্তব্য প্রকাশ পাওয়ার পর বারবারই ভাবছিলাম এমন কথা উনি বললেন কি ভাবে ? একজন জ্ঞানী মানুষের পক্ষে এভাবে মূর্খের মতো বক্তব্য দেওয়া কিছুতেই সম্ভব নয় । লোকটা নিজেকে আর লুকিয়ে রাখতে পারলো না । নিজের জ্ঞানের পরিচয় দিয়েই দিল । আল্লাহ্ নাম নিয়ে উনি যা বলেছেন, তাতে বোঝা যায় ইসলাম সম্পর্কে ওনার জ্ঞান শূন্যের কোঠায় । কোরআনে বনিত আল্লাহর নামগুলো সম্পর্কে উনি বলেছেন , এগুলো নাকি কাফেরদের দেবতাদের নাম । কাবাকে রক্ষিত দেব দেবীদের নাকি এইসব নামগুলো ছিল । গাফফার চাচা আপনাকে বলছি - সেসময় কাবাতে যে সব মূর্তিগুলো ছিল সেগুলোর নাম ছিল, লাত , মানাত, হুবাল, অবগাল ,দুল খালসা,এল্লাহ, উজ্জা, মালা কবেল, নেব, নের্গাল,সিন সুয়া, নুহা, সুয়া, রুভা ইত্যাদি । এই দেবদেবীদের নামের সঙ্গে কি আল্লাহর কোন নামের মিল খুজে পাওয়া যায় ? যায় না । অর্থাৎ আপনি মিথ্যা বলেছেন । ভাল মতো পড়াগুনা করে কিছু বলেননি । মুখে যা এসেছে বলে দিয়েছেন । আপনি মানুসিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছেন । ভেবেছিলেন এদেশের মানুষজন সব ক্লাস নাইনের ছাত্র । তারা আপনার সব কথা মেনে নিবে । লতিফ সিদ্দিকির কথায় তো কিছুটা লজিক ছিল আপনার কথা বার্তা বা বক্তব্যগুলো হয়েছে হিংসুটে মূর্খ রমণীর মতো যে ঝগড়ার সময় কি বলে তা নিজেও জানে না ।
আমি আপনাকে মূর্খদের সর্দার বলতে বাধ্য হচ্ছি । মহান আল্লাহকে সেই সময়কার কাফের মুশরিকরাও আল্লাহ্ই বলে ডাকতো । তারা ও বিশ্বাস করতো আল্লাহ্ একজন । শুধু মুসলমানদের সঙ্গে তাদের পার্থক্য ছিল তারা শুধু আল্লাহ্ পাশাপাশি আরো দেবতাদের পূজা অর্চনা করতো । কিন্তু মুহাম্মদ স : বলেছেন আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কোন ইল্লাহ নাই । আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কেউ ইবাদতের যোগ্য নয় । আল্লাহর এই গুণবাচক নামগুলো এসেছে কোরআনে ।
আপনি মুসলমান নারীদের পর্দা নিয়ে কথা বলেছেন, আমি আপনার মানস দৃষ্টি উন্মোচনের জন্য বলছি - পর্দা শুধু মুসলমান নারী বা পুরুষের জন্য নয় । এটা অন্যান্য ধর্মের নারীরাও পালন করে । যেমন আহলে কিতাব ইহুদি রমণী, পেনসিলভানিয়ার আমিষ গোত্রের মেয়েরা, ক্রিস্টিন নান এরা সবাই বোরখা পরে পর্দা দিয়ে চলে । অথচ আপনি শুধু মুসলমান নারীদের বোরখা বা পর্দা নিয়ে কথা বলেছেন । ইসলামে পর্দার কথা বলা হয়েছে, আল্লাহ কুরআনে রমনীদের চাদর দিয়ে মুখে ঢেকে বাহিরে যেতে বলেছেন । সেটা নারীদের নিরাপত্তার জন্যই বলা হয়েছে । ( অন্য ধর্মের কিছু নারীর ছবি দিলাম আশা করি এরপর আর বললেন না পর্দা শুধু মসুলমান নারীদের জন্য )
আরো অনেক কিছু বলতে বা লিখতে পারি কিন্তু ইচ্ছে করছে না , কেননা পাগলের কথার প্রতিবাদ করে কি করবো । আপনার বয়স হয়েছে, মাথা এলোমেলো হয়ে গেছে হয়তো । চিন্তা চেতনা নষ্ট হয়ে গেছে । সবই বয়সের দোষ । আপনার হয়তো চিকিৎসার দরকার । চিকিৎসা নিন সুস্থ হয়ে উঠুন । এই বয়সে রসূল হবার স্বপ্ন দেখবেন না । আসমানি কিতাব ছাড়া রসূল হওয়া যায় না । এটা বোধ হয় আপনি জানেন । আপন এখন যা লিখেন সেগুলো দিয়ে কেউ তাদের বাচ্চাদের টয়লেটও পরিষ্কার করবে না । সূতরাং বিশ্রাম নিন, চিকিৎসা নিন সুস্থ হয়ে উঠুন । ফেসবুকে আপনার সর্ম্পকে কি একটা লেখা খুব গুরছে । মুকুল ভাই বেচে থাকলে যাচাই করে নিতাম ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:০৯