মুয়াজ্জিনের প্রাত আওভানে যখন আমি ভুলে যেতাম আমার সমস্ত বাসনা,
তখনো সব আধার চলে যায়নি রাত্রিকে একা রেখে,
হুতুমপেচা অপেক্ষায় শেষ শিকারের।
আর মৃত মাঠে নিস্পাপ শিশির মাড়িয়ে ছুটে চলা ব্যস্ত পরকালপ্রেমিদের দল।
ভীত নাটকের এই অধ্যায় জীবনেরা গিলে খায় অতিকাল্পনিক ভূমিষ্ঠ ফসল।
রক্ত প্রবাহ এখানে হিংস্র অনেক !
চেতনা এখানে অবিনাশী আর ভয়ানক,তাই
(প্রেম হল এক মাংসের দলা চেটে নেয়া
আর সিন্দুকে পুরে আমৃত্যু তারে গিলে ফেলা।)
বীরেরা এসে ঘুমিয়ে পড়ে হাত ধোয়ার গন্ধে,
ফিরে যায় পৃথিবীর ব্যাগে আরেক পৃথিবী নিয়ে।
সেখানে তাদের যেন দুইচারটাতেই চলে।
সেখানে সবাই পালাক্রমে ভালবাসে
নুরানি দাড়ির ঘ্রানে বিবিদের দিল,
স্বপ্নের মাঝে উত্থিত অঙ্গে টানে।
হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে যায় তাদের কাচের চুড়ির শব্দে।
এমন দুঃস্বপ্নরা প্রসব করে যায় হাজারো মৃত নদীর উপত্যকা,
কোটি কোটি বালুর উপরে নিরবে হেটে যাওয়া ক্ষুদাতুর সজারুর পদচিহ্নে
লেগে থাকা জোস্নার ঘ্রান।
সেখানে আমি চিৎকার খুজি, 'হাড় মাংসের চিৎকার,
থমকে থাকা যৌবনের নিস্তেজ চিৎকার। জীবন্ত মহাকালের পরাস্ত নদীর মত থেমে যাওয়ার চিৎকার।
অসংখ্য মুয়াজ্জিনের সকালকে না ডাকতে পারার চিৎকার। '
পতঙ্গের মত দৃষ্টি নিয়ে যদি মহাকাশ দেখা যায়,
যদি শত আলোকবর্ষ দুরের নিহারিকার দর্শনে জ্ঞান ফুলে ওঠে তাহলে,
হৃদয়ের এত প্রসবজ্বালা কেন ?
কেন গোপন কথা পাপ হয়ে চলে যেতে চায়, মৃত নদীগর্ভে !
কোটি কোটি বালুকণার ভিড়ে যে চোখ খুজে পায় চাদের গন্ধ
তার কাছে আজ আমি বড় আচানক।
রুপালি ছায়ার মোহে সে ফিরিয়ে দেয়
জোস্নার ওপাশে দাঁড়ানো আমিকে !
তার কাছে আজ আমি কে ?
নিজের কাছেই আজ বড় অচেনা লাগে নিজেকে !
ভয়ঙ্কর অতিতের কাছ থেকে আজ যারা পালিয়ে যেতে চায়,
আমিতো তাদেরই দলে ছিলাম।
বিনিদ্র লৌকিকতাকে যতটুক প্রশ্রয় দিতে হয়
তারচেয়ে বেশিই গোপন করেছি।
তাকে মৃত নদী অথবা দুঃস্বপ্নের ফ্রেমে
অনন্তকালের জন্য বাধিয়ে রেখেছি,
সাদা রঙের পাপ বলে যদি কিছু থাকে,
তাহলে তা বেচে থাকুক।
স্থির সময় বলে যদি কোন নদী থাকে
তাহলে তার বালুচরে অনেক জোস্না পড়ুক।
কথা দিলাম, আর ক্ষুদার্ত সজারুর পায়ের চিহ্নে
জমে থাকা আলোয় নিজেকে খুঁজবোনা,
নির্জন কাশবনের গভির দর্শন যদি বাতাসে উড়ে চলে আসে
তাহলে কথা দিলাম,
দরজা জানালা ছাড়া কোন এক বাশবাগানের নিচে শুয়ে থাকব,
কথা দিলাম, সেদিন দুঃসপ্নেও দেখা হবেনা আর,
সেদিন পৃথিবীর ব্যাগে আরেক পৃথিবী নিয়ে থাকব অন্য পাড়।