বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ খালেদা জিয়াকে ফোন করেছেন কিনা তা নিয়ে এখন দেশে পাল্টা পল্টি রাজনীতি চলছে। বিএনপির দাবি অমিত শাহ ফোন করেছেন আর আওয়ামীলীগ ও তাদের মিডিয়ার দাবি তিনি খালেদা জিয়াকে ফোন করেননি। আওয়ামীলীগ তাদের মালিকানাধীন টেলিভিশন নিয়ে বিরোধীদলের বিরুদ্ধে এক প্রকার প্রকাশ্য যুদ্ধে নেমেছে।
শেখ হাসিনা ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর মেয়েদের মুসলমানির উপর একটি কনফারেন্সে যোগ দিতে যুক্তরাজ্যে সফর করেন। সেই সময় বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনার নামে টুইস্ট করেছেন জাতির সাথে তিনি। এরপর জাতিসংঘের মহাসচিবের সাথেও আলোচনার বিষয় নিয়েও টুইস্ট করেছেন হাসিনা। এটা পরে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও জাতিসংঘের মহাসচিবের দফতর বাংলাদেশ সরকারের মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করে তাদের ওয়েভ সাইটে তথ্য প্রকাশ করেন। এবং দুটি দফতর বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে ডেকে সর্তক করে দেন। তখন টেলিভিশনগুলো কি ফোনালাপ বা ঐ দফতরের প্রতিবাদ নিউজে প্রকাশ করেছিলো? করেনি...!
এর আগে হাসিনার সাউথ সাউথ পুরস্কার নিয়ে যখন সন্দেহ তৈরি হলো এবং সংবাদ মাধ্যমে বিষয়টি উঠে আসলো যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ঐ প্রতিষ্ঠান কোনো পুরস্কার দেয়নি তখন কিন্তু এই টেলিভিশনগুলো সত্য উতঘাটনে এমন করে মাঠে নামেনি। সাউথ সাউথ পুরস্কারের আয়োজকরা যখন তাদের ওয়েভ সাইটে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিলো যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে তারা কোনো পুরস্কার দেয়নি তখন এই সংবাদটি প্রচারেরও প্রয়োজন মনে করেনি আজকে খালেদা জিয়া- অমিত শাহ ফোনালাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামা মিডিয়াগুলো। কিন্তু কেনো?
ফোনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় এসএ টিভির এনসিএ কর্মকর্তার কাছে। তিনি বলেন আমরা বহু চেষ্টা করেও বিজেপি সভাপতির সাথে কথা বলতে পারিনি। টানা ২ দিন চেষ্টার পর বিজেপির এক অফিস কর্মকর্তা জানান, স্যার অনেক ব্যস্ত আছেন। তাহলে ৭১ ও টুয়েন্টিফোর টিভি কি করে কথা বললো? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন বুলশিট। বাংলাদেশের মত একটি দেশের টিভি রিপোর্টার ফোন দিবেন আর তিনি সরাসরি ফোন ধরবেন এটা পাগলও বিশ্বাস করবে না? তার কী কোনো পিএস নেই। যে দলটি ক্ষমতায় তার প্রধানের নাম্বার একজন রিপোর্টারের কাছে দিয়ে দিবে একজন রাষ্ট্রদূত? এটাও বিশ্বাস করতে হবে?
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের সিনিয়র এক সাংবাদিক জানান দুটি টিভিতে প্রচারের পর আমাদের উপরও চাপ আসে অমিত শাহর বক্তব্য প্রচারের জন্য। আমরা বহু চেষ্টা করে তার সাথে কথা বলতে পারিনি। তাহলে ঐ দুটি টিভি কী করে কথা বললো অমিত শাহর সাথে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন বিষয়টি আমার বোধগম্য্য নয়। অফ দ্যা রেকোর্ডে বলতে পারি এটা ফেইক অমিত হতে পারে। কারণ এই টিভিগুলোর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করার মত আর কেউ নেই। এটা হয়তো সরকারের শায় আছে বলেই সম্ভব।
বিজেপি প্রেসিডেন্ট এর সাথে খালেদা জিয়ার কথোপকথনে আওয়ামীলীগের অস্বস্তি প্রমাণ করছে দলটি ভারতের উপর কতটা নির্ভরশীল। আর এ কারণে যেভাবেই হোক অমিত শাহের সাথে খালেদা জিয়ার কোন কথা হয়নি এরকমটি প্রমাণ করতে এমবেডেড সাংবাদিকদের দিয়ে একটি নির্জলা মিথ্যা নাটক সাজিয়েছে সরকার।
বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও জাতিসংঘের মহাসচিবের দফতর বাংলাদেশ সরকারের মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করে তাদের ওয়েভ সাইটে তথ্য প্রকাশ করতে পারে, সাউথ সাউথ পুরস্কারের আয়োজকরা তাদের ওয়েভ সাইটে মিথ্যাচারের প্রতিবাদ করতে পারে, মার্কিন কংগ্রেস থেকে অফিসিয়ালি প্রতিবাদ করতে পারে, আর ভারতের ক্ষমতাসীন দলের প্রধানের নাম ভাঙ্গিয়ে এতবর মিথ্যাচার করা হলো তারপরও ভারতের ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে অফিসিয়ালি প্রতিবাদ করা হলো না...? আমি বিস্মিত হলাম...!