লেখাটি কিভাবে শুরু করবো জানিনা, কিন্তু বেশ অনেকদিন ধরে দেখছি কিছু কিছু ছেলে না রাঁধতে পারার গল্প গর্ব করে বলে যাচ্ছে।
কেও কেও অতীব মেয়েলী বলছে যারা টুকটাক রাঁধে।
কেও হয়তো নতুন বিবাহিত কাউকে পিঞ্ছ করছে বউ থাক্তেও তোর রাধতে হয়!! তোর মত কচু গাছে ফাঁস দেয়া উচিত.।.।।।
প্রথম দিকে অবাক হতাম এদের কমেন্টের বাহার দেখে, এখন হই না।
এতো শুনছি!! আমি বলছিনা এটা স্বাভাবিক, কিন্তু অস্বাভাবিকের তো কিছুনা।
মেস লাইফ কাটায় দেয়া এক্তা ছেলে বিপদে পড়ে একদিনেও রাঁধবেনা এটা বরং অদ্ভুত লাগতো।
বুয়া কি একদিন ও মিস হয়নি!! নাকি বাইরে খাবার মত প্রচুর টাকা সবার সমসময় থাকে!
আচ্ছা সময় অপচয় বলে এক ফ্রেন্ড মন্তব্য করলো, ক্ষুধার চেয়ে ইম্পোর্ট্যান্ট পৃথিবীতে আর কোন সত্য আছে?
আচ্ছা এরা বড় হতে হতে এগুলোই হয়তো দেখে দেখে স্বাভাবিক মনে করছে।
এই ভেবে নিজেকে স্বান্ত্বনা দিচ্ছি এরা এভাবেই বড় হয়েছে ,মা -দাদী বা বোন রা কাজ করছে দেখে এসেছে, তাই পরবর্তীতে নিজের বউ সহ (দুজনেই অফিস থেকে ফিরলেও) বাসায় ফেরার পর যত রাত-ই হোক বউকেই সব করতে হবে এমন একটা নিয়ম দাঁড়িয়েছে ।
কেও হয়তো মিখে জোর দিয়ে নিয়ম না বানালেও এমন ভাবে ক্ষুধা লাগছে লাগছে বলবে , মন খারাপ করে ঘাপ্টি মেরে বসে থাকবে, বউ এর যত খারাপ-ই লাগুক রান্না করে খাওয়াতে হবেই।
অগোছালো কিছু দেখলে এমন ভাবে চিৎকার করবে যেন অফিস না করে বা বাইরে কাজ না করে এগুলা পরিপাটি করে রাখা বউ হলেই বরং ভালো ছিলো।
হয়তো কেও কেও পরিপাটি সবসময় রাখলেও মাঝে এক দুইবার ব্যাস্ততা বা যেকোন কারনে কিছু সমস্যা হল, সেদিন খোঁচা মারতেও হয়তো দ্বিধা করবেনা।
আমার সাম্নেই একজন বলে ফেলেছে সেদিন তাঁর বউকে, " তুমি বউ হবার যোগ্য না, গার্ল ফ্রেন্ড হবার যোগ্য"
চুপচাপ ছিলাম শুধু মেয়েটির মানসিক অবস্থা ভেবে।
সেও সারাদিন কাজের চাপে থাকে, কত শত প্ল্যান তার মাথায় ঘুরপাক খায়, কোন কোন সময় বড় প্ল্যান গুলোর জন্য ফিন্যান্সিয়েল অবস্থা নিয়ে মনে মনে চিন্তিত থাকে, কখনও বা মাস শেষের ব্যাংক লোন, অন্যান্য অফিস রেন্ট, এমপ্লোয়ীদের বেতনের পর বিজনেসের প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্টের টাকা নিয়ে চিন্তা করতে থাকে, এই সময়ে এমন কথা বাসায় এসে শুনে কতটুকু ভালো লাগে কার!!
আচ্ছা মেয়েটি ভার্সিটিতে পড়াকালীন কি তার বাবা বা মা খরচ দেয়ার সময় বলতো "তুমি মেয়ে তাই খরচ অর্ধেক"
মীনা কার্টুনের সময় পেরিয়ে কি আসিনি ?
অনেক পরিবর্তন ,জানি অনেক অনেক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু এখন ও কত কত যে নিরব লাঞ্চনা ঘরের মধ্যে হচ্ছে, কেও কি জানেন?
কেও হয়তো ভাবতে পারেন আমি চরম নারীবাদী ?
নারে ভাই, আমি শুধু বলতে চাইছিলাম রান্না বা বাসার কাজ গুলো মাঝে মাঝে চাপিয়ে দেয়া না হয়ে মন থেকে হলেই বেশ ভালো হয়।
একজন একজনের মুড বোঝা না হোক, সহমর্মী কি হউয়া যায়না?
খুব আনন্দ লাগছে এক্তা ব্যাপারে , এই প্রথম একজন ছোট ভাই পেলাম (দুইমাস আগে জয়েন দিয়েছে আমার শোরুমে) যে সকালে নিজের হাতে রান্না করে, আসার সময় লাঞ্চ ও নিজেই করে আনে, এতা সে নির্দ্বিধায় বলতে একটুও সংকোচ অনুভব করছেনা, কি যে ভালো লাগছে!!
অন্য কয়েকজন তার খাবার খেয়ে প্রসংসা করার ছলে পিঞ্চ করলেও সে দারুন সাহসী জবাব দেয়।
সাব্বাস আমার এই ছোট ভাইকে।
ধন্যবাদ, সবাই খুব ভালো থাকুন।