ঘটনা-১:
জুন ২০১১, ডেভিড ক্যামেরুন তার ডেপুটি নিক ক্লেগ কে নিয়ে লন্ডনের গাইজ হাসপাতালে তার সরকারের স্বাস্থ্য সুবিধার উপর জনগনের আস্থা বা জনগণ কত টুকুন সন্তুষ্ট তা দেখতে যান। এমতাবস্থায় তিনি যখন এক রোগীর কাছে বসে তাঁকে প্রশ্ন করবেন বলে কথা শুরু করবেন সাথে সাথে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে ঐ হাসপাতালের একজন সিনিয়র সার্জন ডঃ নুন ডেভিড ক্যামেরুন কে ঐ মুহূর্তে সকলকে নিয়ে ঐ রুগীর ক্যাবিন পরিত্যাগ করতে বলেন। ক্যামেরুনের অপরাধ ছিল তাঁকে কাভারেজ দিতে আসা সাংবাদিক গন সঠিক হাইজেনিক পোশাক পরিধান করে নাই। এখানে দুইটি পয়েন্ট মনে রাখুন পরে আলোচনা তে প্রয়োজন হবে- প্রথমত, উনারা একটি নির্দিষ্ট ক্যাবিনে গিয়েছিলেন আর দ্বিতীয়ত, ক্যামেরুন এবং তার ডেপুটি সঠিক হাইজেনিক পোশাক পরলেও তার সাথে থাকা কিছু সাংবাদিক হাইজেনিক পোশাক না পরার কারনে তাদের রিতিমত ঘাড়ে ধরে বের করে দিলেন ডঃ নুন।
ঘটনা-২:
জুলাই-২০১৫, সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রকাশক অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম তার দু’জন সমর্থক শাহাদাত হোসেন ও বন্যা ইসলামকে (জমিসংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষের গুলিতে আহত হন)দেখতে তার সাথে লোকজন নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে বসার যায়গা না থাকাতে ওয়ার্ড বয় তাঁকে ডঃ নুনজিরুন মহসীনা মিম এর রুমে বসতে বলেন। সেখানে ডঃ মিম এর সাথে তার বাক বিতণ্ডা হয় এবং ডঃ মিম তাঁকে বের হয়ে যেতে বলেন। এই ঘটনার পরে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মিজানুর রহমানও ঘটনাস্থলে গিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ডঃ মিম কে ক্লোজ করে নেন। এতেও ক্ষোভের অবসান হয় নি কারন তিনি একজন প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি অনাদের কাছে আমরা সাধারন মানুষ হলাম দাস দাসী দের মত সেই সাধারন একজন ডিউটি ডাক্তার তাঁকে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে বলতে পারে না। ড. মিম আপনার সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আপনি হিরক রাজার দেশে জন্ম নিয়েছেন, যে দেশে রাজনীতি এবং রাজনইতিক নেতাদের পদলেহন সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হয়
এই ঘটনাকে রঙ মাখাতে তারা দাবি করে বসলেন ডঃ মিম রাজাকারের সন্তান! মোক্ষম হাতিয়ার, এই হাতিয়ার ব্যাবহার করলে সাতখুন মাফ। কারন একুশে টিভি তে বাংলাদেশের অন্যতম দুর্নীতির আখড়া বি সি আই সি এর সিবিএ নেতা সামসু তার দুর্নীতির অভয়ারণ্য সম্পর্কে জানতে চাইলে সেও বলে এগুলো জামাত শিবির এর ষড়যন্ত্র। লে বাবা একজন পিয়ন ঢাকা শহরে কয়েকটি বাড়ি, পঞ্চাশ বিঘা জমি এমনকি বাগান বাড়ির মালিক সৎ একজন মানুষকে কিভাবে জামাত শিবির ষড়যন্ত্র করে ফাঁসাতে চাচ্ছে! যদিও ১/১১ এর পূর্বে এই সামসু নাকি নিজেই চার দলীয় জোটের সমর্থক ছিলেন!। অর্থাৎ, দেশে অপকর্ম করে তার বৈধতা দানের একমাত্র সহজ এবং মোক্ষম হাতিয়ার খানাই ব্যাবহার করলেন অ্যাডভোকেট সালমা। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ডঃ মিম একজন সার্টিফিকেট ধারী মুক্তিযোদ্ধার কন্য ছিলেন। তা না হলে তাঁকে রাজাকার সন্তান হিসেবে দার করাতে এবং তাঁকে অপমান এমনকি নিজের কর্তব্য পালনের অপরাধে তার চাকুরী যাওয়াও কোন আশ্চর্যের ব্যাপার ছিল না।
ডেভিড ক্যামেরুন জরুরী বিভাগে যান নি এমন কি তিনি সঠিক ড্রেস পরেও ছিলেন তার পরেও তাঁকে বের করে দেয়া ডাক্তার কে একবার দুঃখিত বলার দরকার হয় নি উল্টো ডেভিড ক্যামেরন এই ঘতনাতে নিজের দোষ স্বীকার করে দুঃখিত হএছিলেন। এর জন্য কোন ডাক্তার দের ক্ষমতাবানদের পদলেহন কারি কোন সংগঠনকে ডঃ নুন এর পাশে দাড়াতে হয় নি। কিন্তু বাংলাদেশের একজন এম পি এর সাথে নিজের কর্তব্য কর্মের খাতিরে দায়িত্বশীলতা দেখাতে গিয়ে ডঃ মিম কে কত কিছুই না করা লাগছে? ড. মিম আপনার সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আপনি হিরক রাজার দেশে জন্ম নিয়েছেন, যে দেশে রাজনীতি এবং রাজনইতিক নেতাদের পদলেহন সবচেয়ে বড় যোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হয়।
আমি সর্বদা বলি আমরা আমাদের দেশে এমন এক শ্রেণী তৈরি করেছি যারা আইন, নিয়ম-নীতি, প্রচলিত রীতিনীতি সকল কিছুর উরদ্ধে। এদেরকে আমাদের এই পদলেহন কারি পেশাজীবী সংগঠন গুলো এমন এক উচ্চতাতে নিয়ে গেছে যেখানে আসীন একজনের সুধু প্রশংসা এবং জি হুজুর টাইপের কথা বাদে সব কিছুই অপরাধ। ডঃ মিম সেই অর্থে মৃত্যু দণ্ড পাওয়ার মত বড় অপরাধ করে ফেলেছেন। দেখি ওনার মৃত্যুদণ্ড কবে কার্যকর হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৭:০৮