somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

~~~বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি~~~

২০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সৃষ্টির আদিকাল থেকেই মানুষ চায় অর্থ-সম্মান। সে-সঙ্গে ক্ষমতা। আর ক্ষমতা থাকলে অর্থ আর সম্মান দুটোই পাওয়া যায়।
মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্ত পরিবারের তরুণদের মধ্যে এক ধরনের মূল্যবোধ থাকে। তারা চায় অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সমাজে বা গোষ্ঠীতে প্রভাব বিস্তার করতে। নিজেকে বাবার সীমাবদ্ধ গতি থেকে উচ্চতর জায়গায় নিয়ে যেতে চায়। বাংলাদেশের মতো একটা দেশে বেশ কঠিন এই কাজ। অধিকাংশই পড়াশোনা করে কোনোরকম একটা চাকরি নেয়। ফলে জীবনে কিছুটা সচ্ছলতা এলেও সমাজে তারা তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। আর এই সমস্যার সমাধান নিয়ে এসেছে ছাত্ররাজনীতি। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের অধিকাংশ তরুণই তাদের মেধার বলে ভার্সিটিতে আসে। স্বপ্ন দেখে নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে। কিন্তু তারা এসে এখানে এক ভয়ঙ্কর নেশার স্বাদ পায়। সেটা হলো ক্ষমতা। নিরীহ ছেলেটাও কোথাও সুযোগ পেলেই জোর গলায় আওয়াজ তোলে। কারণ অধিকাংশই নিজ নিজ সমাজে তেমন জায়গা পায়নি নিজেকে প্রকাশের বা প্রভাব বিস্তারের। দেখেছে তার বড়দেরও একই অবস্থা। অথচ ছাত্ররাজনীতি করলে ব্যাপক ক্ষমতা পাওয়া যায়। শত মানুষ পিছনে ছুটছে, হ্যান্ডশ্যাক করছে অর্থাৎ অন্যরা তাদের কুর্নিশ করছে। আর একজন মানুষ চায় অন্যরা তাকে ভয় পাক আর সম্মান দেখাক। টাকা নাই, সমাজসেবা নাই, শিক্ষা নাই অথচ সবাই ছাত্রনেতাকে সমীহ করছে, এ তো ম্যাজিকই!
টাকার বিষয়টা বলার দরকার নেই। কেউ বিনা লাভে তুলাও বহন করে না। টাকাই যদি না থাকে তাহলে কিছু বাঙালি মধ্যবিত্ত কেন শ্রম দেবে রাজনীতিতে সব বাদ দিয়ে! টাকা অবশ্যই আছে। নয়তো অসচ্ছল পরিবারের সন্তানও রাতারাতি লাট সাব বনে যায় কীভাবে? আর এসব দেখেই অনেক সাধারণ ছাত্র বুঝে যায়, লক্ষ্য অর্জনের জন্য এর চেয়ে সহজ উপায় আর কী আছে। চারদিকে তাই ছাত্ররাজনীতির জয়জয়কার। দুদিন আগের বোকারাম এখন গলাবাজ, চিকন আলি এখন কুস্তিবাজ। যার না আছে সমাজের জন্য কোনো দায়িত্ব, না আছে সুশিক্ষা, সেও নেতা হতে চায়। রাজনীতি কী করে ক্যারিয়ার হয়? পেটে যার ভাত জোটে না রাজনীতি কী করে তার ক্যারিয়ার হয়? হয়, কারণ দোকানে-ক্যান্টিনে অনেকেই ফ্রি খায় বা নামমাত্র টাকা দেয়। হকারদের ঠকায়। এটাই ক্যারিয়ার। আর বড় নেতা হলে টেন্ডারসহ অনেক বিবিধ সুবিধার দরজা খুলে যায়। ফলে কিছু ছাত্র অবৈধভাবে সফল হলেও বাকিদের স্থান হয় গার্বেজে। তাদের শিক্ষাজীবনের শেষে হতাশা। কারণ রাজনীতির মাঠে যে ওপরে ওঠে সেই টিকে থাকে, বাকিদের সরে যেতে হয়। আর তাদের অনেকেই যেহেতু নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের, ৪-৫ বছর শেষে নিজেকে আবিষ্কার করে ধ্বংসস্তূূপের ভেতরে।
পরবর্তী প্রজন্ম শিখছে, সামহোয়্যার ইন ব্লগ - বাঁধ ভাঙার আওয়াজ । বাংলা ব্লগ | না করলে ক্ষমতা থাকবে না। এইভাবেই একটি প্রজন্ম তার পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বার্তা স্থাপন করে যাচ্ছে, রাজনীতি করো, বাকি সব পেয়ে যাবে। তাই রাজনৈতিক পদ লাভের জন্য তেলবাজ হচ্ছে। এর থেকে উত্তরণের উপায় কী? যারা দেশ ও সমাজের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করতে চায়, ছাত্ররাজনীতিতে তাদের সংখ্যা কম। কিন্তু রাজনীতির সঙ্গে ভালো মানুষদের সম্পৃক্ত হতে হবে। কারণ দুষ্টের ক্ষমতা হ্রাস করতে হলে ভালোকেও ক্ষমতাশীল হতে হবে। একটি ভালো ছাত্র কেন রাজনীতির জায়গাটা সুবিধাবাদী ও চরিত্রহীনদের কাছে ছেড়ে দেবে?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৭
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×