যেকোনো রাষ্ট্রের উন্নয়নের পূর্বশর্ত হচ্ছে তার দক্ষ জনশক্তি। এই দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে তার শিক্ষাব্যবস্থা। এরই ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্র তার নাগরিকদের সম্পদ হিসেবে তৈরি করার জন্য গড়ে তোলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যার সর্বশেষ অঙ্গ হলো দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ তথা বিশ্ববিদ্যালয়। তো, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে গিয়ে সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়িয়েই যাচ্ছে দিন দিন।
কিন্তু এগুলোর পড়ালেখা আর গবেষণার মান বাড়ানোর ব্যাপারে থাকছে বেখেয়াল। এখন প্রশ্ন হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা পড়বে, কি জন্য পড়বে? পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে তারা গবেষক হওয়ার জন্য পড়ে। তাদের এই গবেষণা সরাসরি স্টেট পলিসিকে প্রভাবিত করে। রাষ্ট্র সে মোতাবেক তার অর্থনীতি, সমাজ, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি প্রভৃতি বিষয়ে যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যাদের পড়াশোনা ততটা ভালো লাগে না তারা তাদের আগ্রহী বিষয়ের উপর ডিপ্লোমা করে জীবিকার্জন করে।
আমাদের দেশে আমরা ছোটবেলা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কথা ভাবি চাকরির জন্য। যেখানে নতুন কোনো কিছু শেখা, করা বা উদ্যোগ নয়, বরং চাকরিই থাকছে মুখ্য বিষয়। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পড়ায় প্রোডাক্টিভ হবার জন্য আর আমরা হয়ে যাই প্রোডাক্ট। তাই আমাদের শিক্ষা কাঠামো চেঞ্জ করা দরকার যাতে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি চেঞ্জ হয়। এর দায় বর্তায় রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারকদের উপর। কেননা রাষ্ট্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিষয়ে পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের একাডেমিক বিষয়ে গবেষণা ফিল্ড দিতে পারে না। ফলে টেক্সটাইল, পদার্থবিদ্যা, কেমেস্ট্রি, ত্রিপোলি, মাইক্রোবায়োলজি, অর্থনীতি, ফার্মেসি, পরিবেশ বিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞান, জিওলজিক্যাল সায়েন্স এর মতো বিশেষায়িত সাবজেক্টে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বস্ত্র প্রকৌশলী, প্রশাসন, ব্যাংক বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাবৃদ্ধি নয়, বরং মানসম্মত ও পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ই রাষ্ট্রের জন্য জরুরি।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১:৩৪