আমার বোন মাদরাসার একজন ছাত্রী।সেই সকাল ৭ টায় আমি উঠার আগেই চলে যায় মাদরাসায়।আর বাসায় ফিরে ৪ টায়।মুলত ৭ থেকে ৯.৩০ পর্যন্ত প্রাইভেট কোচিং এবং পরে ক্লাস ১০ টা থেকে ৪ টা।
.
এবারে মুল কথায় আসি।আমার ফ্যামিলির প্রত্যেকটা মানুষকে আমি নামাজের জন্য বলি সবসময়।বোন স্কুল থেকে ফিরলেই তাকে জিজ্ঞেস করি যোহরের নামাজ পরেছে কিনা।সে না বলে।তাকে ক্লান্ত দেখে আমি এড়িয়ে যাই প্রশ্নটা।এভাবে প্রায় ৩দিন তার মুখে না না শব্দটা শুনলাম। আমি একপ্রকার বিরক্ত।আজ বাসায় ফিরলেই নামাজ না পরার জন্য বকা দিব।ফ্রেস হতে না হতেই তাকে ডেকে পাঠালাম।
.
সে আমাকে বললো-"ভাইয়া আমাকে দোষ দিচ্ছ কেন? স্যারদেরকে গিয়ে বলো"...আমি তো রেগেছি অনেক।দোষটা তার। সেই নামাজ পরেনি অথচ স্যারদেরকে বলতে বলছে।সে বললো-"আমাদের মোট ক্লাস ৮ টা।মাঝে মাঝে কমও হয়।গ্যাপ ১২ টার দিকে তাও মাত্র ৩০ মিনিট।১২.৩০ এ আবার ক্লাস শুরু।অথচ স্যাররা বলেছেন ক্লাস রেখে কোনদিকে যাওয়া যাবেনা।পানি খেতেও না।নামাজের কথা বললে বলে এই ক্লাসটা শেষে।পরের মেডাম ক্লাসে ঢুকলে সেও সেইম বলে।এই ক্লাস শেষে।এভাবে করতে করতে যখন ক্লাস শেষ হয় মানে ছুটি হয় তখন আসরের টাইম হয়ে যায়।মাদরাসায় নামাজের জন্য তাগিদ নেই আমারো ভাল লাগেনা".....আমি ওকে যেতে বললাম।
.
আমাদের দেশের মাদরাসাগুলোতে এরকম করা হলে নামকরা মাদরাসা আর মডেল স্কুল কলেজগুলোর মধ্যে আর পার্থক্য কি রইলো? মাদরাসায় যদি ওরা ইসলাম সম্পর্কে হালকা কিছুও না পারে তাহলে কিভাবে হবে? মাদরাসার নিয়ম হচ্ছে নামাজের তাগিদ দেয়া।আরবী সম্পর্কে শিখানো।আমার বোন প্রাইভেট আর ক্লাস করেও আমার কাছে আসে আরবী পড়তে, ম্যাথ করতে।এর কারন হিসেবে শুনেছি মাদরাসা কতৃপক্ষের দেয়া সম্মানিত টিচারেরা আরবী সম্পর্কে যথাযথ ধারনা দেয় না।সিরিয়াস না এতটা।
.
বেশি কিছুই বলার নেই।শুধু এতটুকুই বলার মাদরাসা যদি মাদরাসার মতন না হয়,ইসলাম শিক্ষার যদি ছিটেফোঁটাও না থাকে তাহলে মাদরাসা নামটাকে কলঙ্কিত করার কোন মানেই হয়না।মাদরাসায় শিখানো হবে পবিত্রতা।মাদরাসায় শিখানো হবে ইসলাম,নামাজ কিভাবে আদায় করতে হয়,কখন আদায় করবে এবং প্রয়োজনে প্রত্যেকটা ছাত্রছাত্রীকেই নামাজের সুযোগ করে দেয়া উচিত।টুপি পড়ে,পাঞ্জাবি পাজামা হাকিয়ে ঘুরলেই হুজুর হয়া যায়না বা হিজাব পরলেই শুদ্ধ মুসলিম হয়া যায়না। এসব বেশে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে এসে তাদেরকে নামাজ থেকে দূরে রাখাটা অন্যায় ছাড়া আর কিছুই নয়।
.
আমরা বেঁচে আছি আল্লাহর ইবাদতের জন্য।পৃথিবীতে এসেছি আল্লাহর ইবাদাতের জন্য।আমলনামাই শুধু কবরে আমাদের সাথে যাবে,বিজ্ঞান বইয়ের নিউটনের ৩টি সুত্র নয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:০৯