somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

স্মৃতির ঝাপি থেকেঃ বোরখা সমাচার

২৩ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময়টা জুলাই। অনেক বছর আগে রোজার মাস। ঈদের কেনাকাটা শুরু হয়েছে, বেশ ভীড় ভাট্টা ঢাকার বাজার গুলোতে। আমি কত বছর আর ঈদের বাজার করিনা! কিন্তু সে সময় কয়েকদিন আমাকে ঈদের বাজার করার জন্য ভীড়ে হাঁটতে হতো এ বাজার সে বাজার। শুরু হতো কেনা কাটা কাজের লোকের কাপড় কেনা দিয়ে। আত্মিয় স্বজন আর বাচ্চাদের কাপড় কেনার পর নিজের জন্য প্রায় সময়ই কেনা হতো না কিছু । সে বছর ভাবলাম, অনেক দিনের উপহার পাওয়া টাকা জমেছে তা দিয়ে শাড়ী না কিনে পাথর বসানো একটা সোনার লকেট আর কানের দুলের সেট কিনব। দুপুরের দিকে নিউমার্কেটে গেলাম। আমরা তিনবোন মিলে। সবগুলো সোনার দোকান ঘুরে কিছুই পছন্দ হলো না। নিউমার্কেট থেকে নূর ম্যানসনের উপর তলায় ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। ওদের হলে ফিরে যেতে হবে। গেট বন্ধ হওয়ার আগে।
আজ আর গহনা কিনা হলো না। পরে অন্য কোথাও দেখব। এভাবে পছন্দ না হওয়ার জন্য বেশীর ভাগ সময় আমার কিছু কেনা হয় না। ওরা চলে গেলে আমি গাউসিয়ায় শাড়ির দোকানগুলোতে ঘুরব। পছন্দ হলে কিছু শাড়ি কিনব আত্মিয় স্বজনদের জন্য।
একটা শাড়ী পছন্দ হয়েছে। দাম ঠিক করে টাকা দিতে গিয়ে ব্যাগে হাত ঢুকিয়ে একটি টাশকি খেলাম; টাকা পাচ্ছিনা। আমার খুব ভালো মনে আছে আমি টাকা নিয়ে এসেছি। কিন্তু এখন টাকা পাচ্ছি না। ব্যাগের ভিতর তেমন কিছু নাই। প্রতিদিন যে ব্যাগটা ব্যবহার করি, আসার আগ মূহুর্তে সে ব্যাগটা বদল করে নতুন পাওয়া শান্তি নিকেতনি ঝুলা ব্যাগটা নিয়ে ছিলাম, টুকটাক কিছু কিনলে নিতে সুবিধা হবে বলে। যার মধ্যে তেমন কিছু ছিল না। এক পাশে ছোট একটা চেইন বন্ধ পকেট। তার মাধ্যে কিছু টাকা রেখেছি। বাকি কিছু নিয়েছিলাম খুব ছোট একটা ব্যাগের মধ্যে। চেইনের পকেটটা এত ছোট যে তার মধ্যে টাকাসহ ব্যাগটা আটছিলনা। তাই সেটা ঝুলার মাঝেই রাখতে হয়ে ছিল। প্রায় দু ঘন্টা ঘুরাফেরায় কিছুই কেনা হয়নি পছন্দ হয়নি বলে। আর এখন পছন্দ হয়ে কিনতে গিয়ে দেখলাম টাকা নাই।
এতক্ষণ সাথে সঙ্গী ছিল এখন একা একসাথে হাজার চার টাকা না পাওয়ার ধাক্কাটা সামলানোর চেষ্টা করছিলাম। শরীর ঘামছিল, অস্থির লাগছিল, মন খারাপ হয়ে গেলো অনেক। এতগুলো টাকা নাই হয়ে যাওয়া সোজা কথা না। চেইনের পকেটের মধ্যে অন্য টাকাটা আছে। শাড়ীর দাম মিটিয়ে। বাড়ি ফিরে এলাম। ব্যাগ আবারও ভালো করে ঝেড়ে দেখলাম। টাকাসহ ছোট ব্যাগটা লা পাত্তা। প্রথম থেকে পুরো সময়টা রিউন করলাম ব্রেনের মধ্যে। কোথায় টাকাটা হারাতে পারে তার সম্ভাব্য সময় এবং অবস্থা বের করার জন্য। নিউমার্কেটে বেশ ফাঁকা ঘুরে বেড়িয়েছি। নূরম্যানসনের দোতালায় কয়েকটি দোকানে বসে শাড়ী দেখেছি। কোথাও ব্যাগ খোলা হয়নি। ঠিক যখন বোনরা যাওয়ার জন্য তাড়াহুরা করছিল আমরা, নূর ম্যানসনের সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামছিলাম তখন কয়েক ধাপ নামার পর এক দল বোরখাওয়ালী খুব দ্রুত উপর থেকে নেমে এসে আমাদের সামনে কয়েকজন গিয়ে রাস্তা আটকে দিয়েছিল, একটা ভীড় তৈরি করেছিল। আমাদের দাঁড়িয়ে পরতে হয়েছিল হাঁটতে না পেরে। কয়েকজন আমাদের সাথে এবং পিছনে দাঁড়িয়ে পরেছিল। এই বোরখাওলি একজন ঠিক আমার ডানপাশে পিছনে কাছাকাছি দাঁড়িয়েছিল এবং খানিক পরে খুব দ্রুত প্রায় আমাকে ধাক্কা দিয়ে পাশ কাটিয়ে নীচে চলে গিয়েছিল দ্রুত। যদিও সামনের মানুষগুলো তখনও চলছিল না। ব্যাগটা আমার ডান কাঁধে ঝুলানো ছিল। সে আমার ঝোলা ব্যাগের ভিতর হাত ঢুকিয়ে ছোট ব্যাগটা তুলে নিয়েছে অনায়াসে এবং তারপর তাড়াতাড়ি পালিয়েছে। অথচ আমি বুঝতেই পারি নাই তখন। তাছাড়া কেউ চুরির মতলবে আছে পাশে, এমন ভাবনাও মাথায় আসে নাই। গা ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায়, হাত নাড়িয়ে ব্যাগ ধরার ফাঁকা জায়গাটুকুও ছিল না। এছাড়া বাকি সময় সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। কাজেই বোরখাওলি যে চুরি করেছে এটা পরিস্কার।
বোরখার নীচে খেমটা নাচে কথাটা জানাছিল প্রত্যক্ষ প্রমাণ হলো। আরো কিছু মানুষের অভিজ্ঞতা শুনেছিলাম তখন বোরখাওলিদের নিয়ে এরকম। সোনার দোকান থেকে প্রায় সময় গহনা চুরি করত বোরখাওলিরা। বিদেশেও বোরখাওলিদের এই কাজটা চলছে। সেদিন নিজে তাদের খপ্পরে পরলাম। ইসলামি লেবাসের কি সুন্দর ব্যবহার। বোরখা পরে চুরি করলে কি পাপ হয় না। অনেক ভয়ংকর অপরাধী বোরখা পরে নিজেকে গোপন করে পালায়।
অনেক রক্ষনশীল পরিবারের মেয়েরা বোরখার নীচে মর্ডান পোষাক পরে বাড়ি থেকে বের হয়। বাড়ির বাইরে এসে বোরখা খুলে ঘুরে বেড়ায়। বাড়ি ফিরে যাবার সময় আবার নিজেকে বোরখার আড়ালে ঢাকে। বোরখা পরে তারা কী আড়াল করে? নিজের অভিবাবক কে ফাঁকি দেয় নাকি পাপ থেকে বাঁচে নাকি নিজেকেই ফাঁকি দেয়? বোরখার কত রকম বিচিত্র ব্যবহার!

৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×