somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

জীবন সহজ হয়েছে মেশিনের কাছে আবার জীবন হারিয়ে যাচ্ছে কি মেশিনের মাঝে

২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষের জীবন দখল করে নিচ্ছে মেশিন। রোবট রোবট রব।। রোবট মানুষের কাজ করে দিবে। রোবট মানে একটা ধারনা মানুষের মতন দেখতে যন্ত্র। কিন্তু দেখা যায় না এমন রোবটের সাহায্য পাচ্ছি এখন অহরোহ। লিফট আমাদের উপর নিচ করে যাচ্ছে অনেক দিন যাবত। একটি মাত্র বাটনে চাপ দিলেই হলো। সাইসাই করে উপরে উঠবে আর নামবে। মাঝে কেউ ডাকলে থামবে।
গোনাগুনি, নামতা পড়া দিন কবে হারিয়ে গেছে। সব হিসাব এখন ক্যালকুলেটর সারছে। বিদেশে পরীক্ষা হলে এই হিসাব যন্ত্র
নিয়ে যাওয়া যায়। নমতা গুনে সময় কেউ নষ্ট করে না।
দরজার কাছে দাঁড়ানোর সাথে সাথে দরজা হাঁট হয়ে খুলে যাচ্ছে। নিজে থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আবার। রোড বাসে উঠা নামার সুবিধার জন্য পাটাতন সমান হয়ে যাচ্ছে রাস্তার। বয়স্ক মানুষের হাঁটুর ব্যাথা নিয়ে কষ্ট করে পা উঁচু করতে হয় না। অথবা কেউ হুইল চেয়ারে বসা থাকলেও উঠতে পারেন বাসে আরম করে। স্টেপ ভাঙ্গার প্রয়োজন নেই। অনেক লাইট সুইচ টিপে আর জ্বালাতে হয় না। ঘরে ঢুকার সাথে সাথে অটমেটিক জ্বলে উঠছে বা সময়ের পরে নিভে যাচ্ছে।
ইদানিং পানির ট্যাপ চালাতে হয় না পাবলিক প্লেসে। ট্যাপের নিচে হাত রাখলেই হাত ধোয়ার পরিমান মতন পানি চলে আসে। এতে পানির অপচয়ও বাঁচে। তেমনি সাবান হাত শুকানোর এয়ার ব্লোয়িং মেশিন সেন্সশনে কাজ করে যাচ্ছে। তবে একদিন একটু অসুবিধায় পরেছিলাম। শীত কালে মোটা কোট পরে আছি। সাবান মেশিন থেকে সাবান নিয়ে পানিতে হাত ধুচ্ছি। অন্য দিকে কোটের হাতা সাবান ট্যাপের কাছে চলে যাওয়ায় লিকুইড সাবান পরতে থাকে। কয়েক বার হয় ব্যাপারটা। মেশিন বুঝতে পারেনি এটা হাত না । এত্ত কাছে ট্যাপ স্থাপন করাটা মেশিনের দােষ না মানব মস্তিস্কের ভুল হয়েছে।
হাজার একর জমি চাষ করে ফসল উঠানোর জন্য প্রয়োজন ছিল কত জনশক্তি এখন একজন মানুষ একদিনে চাষের কাজ করে ফেলতে পারে মেশিনের সাহায্যে। ফসল তুলতে পারে এক দিনে। খুব বেশী হলে দুজন হলেই চলে।
কারখানাগুলোতে মানুষের কাজ কমে গেছে। যে কাজ অনেক মানুষ মিলে অনেক সময়ে করে। মেশিন সে কাজ অনেক তাড়াতাড়ি করে ফেলে বেশি সংখ্যায়।
মেশিনের জন্য অনেক বিলিয়ন খরচ হয় মানুষ বঞ্চিত হয় কাজ থেকে। কারখানার সমুদয় মানুষ আগে যেখানে কয়েক হাজার ছিল এখন সর্ব সাকুল্যে কয়েক শ বা আরো কম। শুধু সুইচ টেপার জন্য এবং পর্যবেক্ষনের জন্য প্রয়োজন এখনও কয়েকজন মানুষের।



বাড়ছে চাকরি চ্যুত বেকারের সংখ্যা। মানুষের জায়গা দখল করে নিচ্ছে মানুষের আবিস্কৃত মেশিন। এখন শরীর থেকে দালান কোঠা ফসলের মাঠ জুড়ে মেশিন কাজ করে আর মানুষের সংখ্যা কমছে। বাজার করে নিজে দাম দিয়ে চলে আসা যায় মেশিনের মাধ্যমে। কি করতে হবে না হবে সব নিয়মাবলিও বলে দেয় তাকে চালানোর।
গাড়িও চলছে নিজে। একবার একটা গাড়ি কিনেছিলাম। কাছে দাঁড়ালেই ট্রাঙ্কটা খুলে যাচ্ছে। কি মজা হাত ভর্তি ব্যাগ নিয়ে ট্রাঙ্ক খুলার জন্য টানাটানি করতে হচ্ছে না। তবে একটা মজার ঘটনা ঘটেছিল সে গাড়ি কেনার প্রথম দিন।
নতুন গাড়ি কিনে বাসায় এসে পার্কিং এ রেখে দরজা বন্ধ করে টেনে যখনই দেখছি দরজাটা ঠিক মতন বন্ধ হলো কিনা। দেখি দরজা খোলা। কিছুতেই লক হচ্ছে না। নতুন গাড়ি পার্কিংয়ে দরজা খোলা রেখে আসি কি ভাবে। সমস্যায় পরলাম। গাড়ি নিয়ে সোজা আবার দোকানে হাজির হলাম। তারা দেখিয়ে দিল গাড়ি আসলে লক হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গাড়ি আমাকে চিনে ফেলেছে তাই কাছে যাওয়ার সাথে সাথে দরজা খোলে যাচ্ছে। কিন্তু আমি যখন দূরে তখন গাড়ি আসলে লক অন্য কেউ খুলতে পারবে না। নিশ্চিন্ত হয়ে বাড়ি ফিরলাম। আরেকবার হ্যাইজাকার ব্যাগ গাড়ির চাবি সব নিয়ে নিল। কিন্তু মজার ব্যাপার গাড়িটা র্স্টাট করার নতুন সিস্টেম থাকায় গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি।
ঐ গাড়িটা এত নিবর থাকত অনেক সময় র্স্টাট করে সাথে সাথে না রওনা হলে অনেক সময় মনেই থাকত না গাড়ি আসলে চালু আছে। আবার চালাতে গিয়ে বন্ধ করে ফেলতাম।
এখন অফিসে কথা বলতে হলে শোনা যায় মেশিন কণ্ঠ। মেশিন ঠিকঠাক ভাবে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেয়। অাদিকালের কিছু অফিসে মানুষ কথা বললেও তারা যেন মেশিনের ভাষায় কথা বলে । যত প্রশ্ন করা হোক তারা এক ভাববে এক উত্তর রিপিট করতে থাকে। মানবিক আবগেটা হারিয়ে গেছে যেন।
গাড়ি চলছে ড্রাইভার ছাড়া এক সময় ড্রাইভারের আর প্রয়োজন হবে না। ড্রাইভিং শেখানোর প্রশিক্ষক থেকে পরীক্ষা নেয়ার অফিসার লাইসেন্স প্রদানের এবং রিনিউ করার সিস্টেম পুরোই উঠে যাবে হয়তো। ট্রাফিক পুলিশ জোড়ে চলার জন্য কোন টিকেট আর দিতে পারবে না। কারণ মেশিন তো আর নিয়মের বাইরে কাজ করবে না। এ্যাক্সিডেন্ট ল ইয়ার মানুষকে গিনিপিগ করে আর পয়সা কামাতে পারবে না।
এখন সার্ভিং ও করছে রোবট রেস্তুরায়।
ট্রেন চলছে ড্রাইভার ছাড়া জাপানে। চালকবিহীন গাড়ি চলছে কিছু বিভিন্ন শহরে । ভবিষ্যতে প্লেনও চলবে আশাকরি। বাড়ির পাহারাদার মেশিন রোবট ক্যামেরায় ছবি ধরে রাখছে চোরের। বাজনা বাজিয়ে চোর আসার খবর পৌঁছে দিচ্ছে দ্রুত মালিক বা সংস্থার কাছে। হাতের মুঠোয় পৃথিবী এনে দিয়েছে স্মার্টফোন। রাস্তা ঘাটের পরিচিতি। ঘুম থেকে উঠা। কোন এ্যাপয়নমেন্টে ,জন্মদিন, গাছে পানি দেয়া বন্ধুকে উইস করা। ওষুধ খাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে ক্লান্তীহীন ভাবে নিজস্ব সেক্রেটারি। এমন কি বিপদে পরলে পুলিশও ডেকে দিচ্ছে সাহায্যের জন্য।
সব কিছুই মেশিন রোবটের অধিনে চলে যাচ্ছে। মানুষ কাজহীন বেকার বসে তখন কি করবে।
বোট নিয়ন্ত্রন করেছে আমেরিকার ভোট প্রচার থেকে ভোটের ফলাফল। মেশিনের কাছে এক সময় আমরা অসহায় হয়ে যাবো। কম্পিউটার বিশেষেজ্ঞ ছেলেটা অনেক আগে বলেছিল সেদিন অবাক হয়ে ভাবছিলাম কি বলে এসব। তবে প্রমাণ দেখছি দিনদিন বাড়ছে। প্রতিদিন হাতের কাজের সহযোগী যে রোবটগুলোর সহযোগিতা নিচ্ছি তাকে রোবট ভাবিনি আগে। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে তাই তো। ঘর ঝাড়ু থেকে মসলা পিষা বা আটা ময়দা মাখানো রুটি কেক পেস্ট্রে তৈরি করার জন্য। না ভুল হলো শুধু খামির তৈরি নয় পুরো রুটি বানিয়ে প্লেটে তুলে দেয়ার রোবট এসে গেছে। সবজী কাটাকুটির কাজগুলো কী সুন্দর ভাবে নিখুঁত পালন করে দেয় রোবট ভাষাহীন শব্দ তুলে ক্লান্তিহীন ভাবে। এছাড়া বাইরের পৃথিবীর কত কাজ মেশিনের হস্তগত হচ্ছে মানুষের কাছ থেকে। মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের আবিস্কৃত মেশিনের কাছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১:২৬
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×