আহারে বেচারা মার্ক জুকারবার্গ! নিজের বন্ধুদের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম তৈরি করে বেচারা ভাবেও নাই তখন, এমন একটা বিশাল ব্যবসা হয়ে যাবে ফেসবুক যোগাযোগ মাধ্যম । কাউকে তো সে ডেকে ফেসবুক ব্যবহার করতে বলেনি বরং সবাই নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করছে তার ফেসবুক। ব্যক্তিগত থেকে অফিসিয়াল, কর্মাশিয়াল সবাই হয়ে গেল ফেসবুকের মাধ্যমে যোগাযোগ।
৮৭ মিলিয়ন মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য সমৃদ্ধ ভান্ডার নিজের ব্যবসার স্বার্থে সংরক্ষন না রেখে সত্যি কি তুলে দিয়েছে অন্যদের হাতে প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জুকারবার্গ।
চারঘন্টা ব্যাপী যৌথ শুনানির মধ্যে সেনেট বিচার বিভাগ এবং কমার্স কমিটির প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে এখন আমেরিকায় বসে। যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো কোন হোটেলে উঠেছে সে সেটা জানাতে চাইল না। নিশ্চয়ই ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য। অথচ মানুষের ঠিকানা অনায়াসে দিয়ে দিল অন্যদের কাছে। যা শুধুই ফেসবুক কে দেয়া হয়েছে।
কখন খেলাম কখন ঘুমালাম কার সাথে কেমন জীবন যাপন আত্মিয় বন্ধুদের দেখানোর সাথে দেখিয়ে দিচ্ছি আমরা চেনা অচেনা সব মানুষকে। একজন মানুষ এবং তার চরিত্র বৈশিষ্ট তার যোগাযোগের সম্পর্ক সব তাদের হাতের মুঠোয় এখন। একাউন্ট ডিয়েক্টিভ করলেও থেকে যাবে তথ্য। কখন কোন ডিভাইস, কোন জায়গা থেকে লগ ইন করা হয়েছে। কার সাথে কি কথা বলা হয়েছে।
গোপন ম্যাসেজে বলা গোপন কথাগুলো খোলা আমজনতার কাছে অনেকে সেটা বুঝতে পারে না।
আর সব ডাটা সংগৃহিত থাকছে মার্ক জুকারবার্গের অফিসে। ভাবছি আমার নাম থেকেও কি একটি ভোট দেওয়া হয়েছে ট্রাম্পকে! যা আমি জানতেই পারব না হয় তো কোন দিন। কেউ তো এমন অধিকার দেয়নি ফেসবুককে।
কিন্তু মানুষের ডাটা নানা ভাবে ব্যবহার হয়ে যাচ্ছে এখন ।
এক সময় টেলিফোন কোম্পানি মানুষের ফোন নাম্বার বিক্রি করে দিত অন্য ব্যবসায়িদের কাছে। সেই সব কোম্পানির ফোন আসত নানা কিছু বিক্রি বাড্ডার চাকচিক্যময় আহ্বান নিয়ে। সারাদিনের কাজ সেরে ঘরে ফিরে এইসব ফোনের অত্যাচারে অতিষ্ট ছিল মানুষ। ব্লক করার সিস্টেমও আসল সাথে কিছুটা স্বস্থি পাওয়া গেল অবাঞ্চিত ফোনের থেকে কিন্তু ফোন নাম্বারটি চলে গেল ব্যবসায়ি থেকে ব্যবসায়ির হাতে।
মার্ক জুকারবার্গ সরি বলে, তথ্য সঠিক ভাবে সংরক্ষন না করার কথা জানাল। খেলার মতন একটা বিষয় এত্ত বিশাল আকার ধারন করবে তাকে এত্ত নিয়ম মানতে হবে সে হয় তো সত্যি ভাবেনি।প্রতিদিন এখন কঠিন করছে কিছু নিয়ম। আইসিসদের ফেক একাউন্ট বাতিল করেছে। ইলেকশনের আগেও অনেক একাউন্ট বাতিল করেছে বলে জানাল। আমরাও ছিলাম না সতর্ক নিজেদের তথ্য পরিবার পরিজন ঠিকানা ফেসবুকের কাছে তুলে দিতে। আজকাল এত সহজ হয়েছে ফেসবুক কোন লেখা, কোন ছবি নিজের ডিভাইসে সংরক্ষণের চেয়ে ফেসবুকে রাখাটা যেন খুব সহজে খুঁজে পাওয়া যায়। কথা বলা যোগাযোগ নিমিশে হয়ে যায় ফেসবুকের মাধ্যমে।
কিন্তু খারাপ বিষয়গুলো সব সময় জড়িত ভালো সহজের সাথে। এখন কতটা কঠিন হবে ফেসবুক । দেখা যাক কি নতুন নিয়ম আসে। বিভিন্ন ভাষার লোকজন নিয়োগ পাবে মানুষের উপর গোয়েন্দগিরি করার জন্য। ভালো, কিছু কাজের সংস্থান হলো। কিন্তু ফলাফলে কত ভালো মন্দ ধরা পরবে সেটা জানার জন্য অপেক্ষা করতে হবে বেশ কিছুদিন।
বিভিন্ন দেশের সরকার ফেসবুকের ইনর্ফমেশন নিয়েছে বিভিন্ন ভাবে । সব কিছু মিলে গোবলেট অবস্থা। বিভিন্ন দেশের মধ্যে মনে হয় একমাত্র চীন কঠিন ভাবে ফেসবুক ব্যবহার করা নিষিদ্ধ রেখেছে তাদের দেশে।
গুগোলও তো ডাটা সংরক্ষন এবং মানুষের নাড়ি নক্ষত্রের হিসাব রাখার জন্য চেষ্টা করছে। ফোন নাম্বার এবং সব কিছু এক করে ফেলার জন্য আহ্বান তারা সারাক্ষণ দিচ্ছে তবে এখনও তারা অন্যদের কাছে তুলে দিয়েছে বলে কোন অভিযোগ আসেনি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১:৩০