ভিজুয়ালাইজ এই সময়ে লেখা পড়ার সময় নেই এখন। অথচ একটি ভিডিও দেখার সময় আছে । কত মিলিয়ন বার শেয়ার হয় অনাকাঙ্খিত কিছু ভিডিও। অথচ একটি লেখা সে ভাবে শেয়ার হয় না। আসলে লেখাটা পড়ে তার মর্ম মনে গেঁথে নেন এখন আর ক'জন মানুষ। নাহ্ তবে লেখা শেয়ার হয়.. কিছু মানুষ একজন লেখকের মূল্যায়ন না করে নাম না দিয়ে কপি পেষ্ট পোষ্ট দেন নিজের নামে অন্যের লেখা দিয়ে বাহবা পেতে চান।লেখক হয়ে উঠেন। তাদের ভক্তকুলও মহা তেলবাজ কখনো জানতে চান না, লেখা তিনি কবে থেকে শুরু করলেন। এমন লেখা আর একটি কি তার মস্তিস্ক থেকে নির্গত হবে ?
লেখকরা কেন যেন বঞ্চনার পর্যায়ে থাকেন সব সময়। অথচ লেখকের লেখায় উঠে আসে সমাজ সংস্কার, বাস্তবতার কথা কবিতা, গল্প, জীবন কথায় লেখকরা লিখে রাখেন সময়। তুলে ধরেন সমাজের ভুল ক্রুটি। করেন প্রতিবাদ। জানান নতুন দিকদর্শন। এবং বলে দেন সুবিধাজনক নিয়ম লেখকের অভিজ্ঞতায় যা জেনেছেন।
আমরা বই পড়ে একটি সুন্দর জগতের সন্ধান করতাম সব সময়। লেখকের সাথে কোন সংযোগ না রেখেই। এখন আবার লেখকের ব্যাক্তিগত জীবন এবং লেখকের সাথে আড্ডা গল্প বেশী গুরুত্বপূর্ণ লেখা পড়ার চেয়ে।
এক প্লেট খাবারের দামের চেয়েও বইয়ের দাম কম বর্তমানে ।
মার্লবোরো সিগারেটের একটি প্যাকেট ২২৫ গোল্ড লিপ ১৪০ । ৫৫৫ এর দাম ২৪০।
রেড ওয়াইনের দাম ২৫৮০। হুইস্কি ৪৩০৫ বিয়ার ২৮৭০ থেকে ২১৯ টাকায় বিক্রি হয় যা প্রতিদিন খেতে হয় নেশাকারীর। অথচ একটি বইয়ের দাম প্রায়ই ১০০ টাকা মাত্র। খুব কম বইই আছে হাজার টাকা দামে। বেশীর ভাগ বইয়ের মূল্য ১০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। একটি বই একবার কিনতে হয় এবং অনেক বার পড়া যায়। অনেকে পড়তে পারেন। বইয়ের কথামালা মনকে এক অন্য জগতে নিয়ে যায়। সিগারেট বা মদের মতন প্রতিদিন কিনতে হয় না। খাওয়ার পরই তার নেশা ফুরিয়ে যায় না।
অথচ সে সময় এবং অর্থ বা ইচ্ছা এখন প্রায় কারোরই নেই। তবু কিছু লেখক লিখছেন এবং বই ও প্রকাশ করে যাচ্ছেন। গুটি কয় পাঠক এখনও আগ্রহ ভরে পড়েন।
বিনামূল্যে কিছুই পাওয়া যায় না। অথচ পড়তে ইচ্ছুক পাঠক আশা করে থাকেন লেখক বিনামূল্যে বইটি উপহার দিবেন। বিনামূল্যে উপহার পাওয়া বইটি কিন্তু অনেকে পড়েনও না। কেন নিয়ে যান অনেক আগ্রহ করে লেখকের অটোগ্রাফসহ কে জানে। মিউজিয়ামে জিনিস সংগ্রহ করার মতন কোন ব্যাপার কাজ করে মনে হয় তো। লেখক মারা গেলে অটোগ্রাফ যুক্ত পেইজটির ছবি তুলে জানাবেন লেখকের লেখার কত ভক্ত ছিলেন তিনি। কত মধুর সম্পর্ক ছিল লেখকের সাথে।
বর্তমান সময়ে অনেক বইয়ের পিডিএফ করে বইটি বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ করে দিচ্ছেন কিছু ওয়েব চালান মানুষ। লেখককে এবং প্রকাশককে বঞ্চিত করার এই যে ধৃষ্ঠতা মূলক আচরণ সবার চোখের সামনে হচ্ছে এরজন্য কেউ রা ও করেন না। বরং সুবেসধারী কিছু মানুষ ভাবেন বেশ তো বইটি পড়ার সুযোগ দিয়ে উপকার করছে। কপি রাইট শব্দটি যেন বাংলাদেশের মানুষ জানেই না। অথচ ভিনদেশী কোন বই বিনামূল্যে কখনোই ওয়েবে পাওয়া যায় না। হার্ড কপি, পেপারব্যাক বা সফট কপি সামর্থ অনুযায়ী অর্থ খরচ করে কিনেই পড়তে হয়। বিদেশের এত এত নানা রকম বিনোদনের ব্যবস্থ্যার পরও দেখি অসংখ্য মানুষ বই পড়েন। হাতে বই বা ওয়েবে বই সারাদিনের ব্যাস্ততার ফাঁকে চলার পথে বই পড়ে কাটান।
পাঠক লেখকের মর্যাদা দিয়ে লেখকের বইপাঠ করার মনোভাব গড়ে তুলুন। ফ্রি তে বই চাইবেন না। একটি বই পেলে তা পড়ে মূল্যায়ন করুন আপনার মতামত দিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:১৫