আমার পাশের ফ্ল্যাটের সুন্দরীরে দেখি না অনেক দিন গত হইতেছে, তাই সকাল থিকা তাহার শরনে মনডা এমনিতেই আজকে খারাপ । তার উপড়ে বাসার নীচে আইস্যা দেখি লিফট খানা নষ্ট।
পাহাড় সম উচু ভবন ওরে তাহার চূড়ায় ক্যামনে উঠি ।
এহেন শোকে যখন আমি কাতর ঠিক তখনি ভবনের চূড়ায় উঠার জন্য প্রেশনার মত কাজ করিল আমার বাসার দারয়ানের বানী।
আমার পাশের বাসার সুন্দরী নাকি আজকে সকালে নানুবাড়ী থেকে ফিরেছে
আর বাসায় ওঠার সময় ভুলে একটা বক্স রেখে গেছে।
আহা মনডাই ফুরফুরা হইয়া গেল।
কাল বিলম্ব না করিয়া দারোয়ানের কাছ থেকে বক্স খানা লইয়া রওনা হইলাম আমার সুন্দরীর উদ্দেশ্যে।
ইশ কতদিন পর তাহারে দেখিব, মনটা আনন্দে লম্ফঝম্প শুরু করিল।
সিড়ি ভাঙিয়া উপরে উঠিতে এখন আর কনো কষ্ট বোধই হইতেছে না।
কিন্তু বিধিবাম আভাগার কপালে কি আর সুখ সয়,
তাহার বাসার সামনে কলিং বেল বাজাতে যাব তখনই শুনি বাসায় কান্নার রোল।
আমার হৃদপিন্ড তো ধরাস করিয়া উঠিল, কার কি হইল আবার!
সুন্দরীর বাপের কিছু হয় নাইতো, হায় হায় আমার সুন্দরীর কি হবে !
ও তো ওর বাপ ছাড়া এক মুহূর্তও থাকতে পারে না।
আমি আমার সুন্দরীর কষ্ট ক্যমানে সইমু।
দুরু দুরু বুকে দিলাম কলিং বেলে চাপ, আণ্টি এসে দরজা খুলে দিল।
দেখলাম তার চোখে পানি আর আমার সুন্দরীর আহাজারি। কিন্তু ভিতরে তারা দুজন ছাড়া আর কেউ নাই।
ভিড় না দেখে অবশ্য একটু সস্থি লাগল, কিন্তু ভয়টা কাটল না।
সাহস নিয়া জিজ্ঞাসা করলাম আণ্টি কি হয়েছে, বাসার সবাই ঠিক আছেতো? আংকেল ঠিক আছেনতো?
প্রশ্নের জবাবে যা শুনলাম তাতে তো আমার আক্কেল গুডুম অবস্থা।
আজ সকালে আমার সুন্দরীর পালিত বিড়াল নাকি দুনিয়ার পার্থিব মায়া ত্যাগ করিয়া পরলোক গমন করিয়াছেন আর তাহারি শোকের মাতম চলিতেছে।
উত্তর শুনিয়া আমি ভাষা হারাইয়া ফেলিলাম,
আর কথা না বাড়াইয়া বক্স খানা তাহার মায়ের হাতে ধরাইয়া দিয়া কোন মতে আমার বাসায় ডুকিলাম।
আর মনে মনে চিন্তা করিতে থাকিলাম,
আহা এই বিলাই ক্রন্দন যদি সে আমার জন্য একবার দিত।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০০