somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাহানারা ইমামকে নিয়ে লেখা...

০৪ ঠা মে, ২০১৫ সকাল ১১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা নিকৃষ্ট বাস্তব কৌতুক দিয়ে শুরু করি, “১৯৯২ সালে গণআদালত প্রতিষ্ঠা করার পর শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বিরুদ্ধে সরকার রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করেছিল।”

শুরুটা হয়েছিল ১৯৯১ সালের ২৯শে ডিসেম্বর... গোলাম আজমকে জামায়াতে ইসলামের আমীর ঘোষনা করা হলে সমগ্র বাংলাদেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। নিজে থেকে এগিয়ে এসে এই বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন জাহানারা ইমাম। প্রতিষ্ঠা করেন “একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি।” সোহরাওয়ার্দীতে তৈরি করেন গণআদালত। লাখ মানুষের উপস্থিতিতে গোলাম আজমের ফাসির পক্ষে রায় দেন। এরপর রায় নিয়ে যান সরকারের কাছে, অনুরোধ করেন রাজাকারের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্যে।

হ্যা, সরকার মামলা করে... তবে রাজাকারের বিরুদ্ধে না, বরং জাহানারা ইমামের বিরুদ্ধে। গণআদালতের সাথে সম্পৃক্ত ২৪ জন সহ জাহানারা ইমামের বিরুদ্ধে অ-জামিনযোগ্য রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করে বসে সেসময়ের বিএনপি সরকার। আক্রোশে ফেটে পড়ে জনতা, আন্দোলনের চাপে প্রত্যেককে জামিন দিতে বাধ্য হয় সরকার, কিন্তু মামলা তুলে নেয় নি। অপরদিকে রাজাকারের দল গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরতে থাকে, কিন্তু দমে যান নি জাহানারা ইমাম।

সাধারন মানুষকে সাথে নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন, লক্ষ জনতার সাথে রাজাকারের বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি নিয়ে গেলেন জাতীয় সংসদে। সাড়ে তিনশর উপর সংসদ সদস্যের মধ্যে মাত্র ১০০ জন রাজাকারের বিচারের পক্ষে মত দেন, বাকি সব বিপক্ষে! আন্দোলনে যোগ দেন শেখ হাসিনাসহ অন্যান্য আওয়ামিলীগ নেতারা। রাস্তায় রাস্তায় মিছিল করেন, প্রতিবাদ করেন। সরকার পুলিশি আক্রমন চালালে রক্তাক্ত হয়েছেন, কিন্তু থেমে যান নি। ক্যান ইউ ইমাজিন? যে দেশের জম্মের জন্যে নিজের ছেলেকে কুরবান করেছিলেন, সেই দেশের পুলিশের হাতে তাকে রক্তাক্ত হতে হয়েছে! এই আন্দোলন চালানো যে কতটা কষ্টের ছিল, তা হয়তো আমরা বুঝতে পারছি না, কখনো বুঝতেও পারব না। হুমায়ুন আহমেদের কিছু লেখায় সেসময়ের কিছু বিষয় ফুটে উঠেছে, যা থেকে কিছুটা ধারনা করা যায়।

ইনিই জাহানারা ইমাম, মা, জননী... একাত্তরে নিজের স্বামী হারিয়েছেন, নিশ্চিত মৃত্যু জেনে ছেলেকেও যুদ্ধে পাঠিয়েছেন, হারিয়েছেন... স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধাদের কাছ থেকে জননী উপাধী পান... শহীদ জননী! অথচ এত কিছুর পরেও রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা মাথায় নিয়ে তাকে মৃত্যুবরন করতে হলে...

শুরুর কৌতুকটা দিয়ে আবার শেষ করি... “১৯৯২ সালে গণআদালত প্রতিষ্ঠা করার পর শহীদ জননী জাহানারা ইমামের বিরুদ্ধে সরকার রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করেছিল।”
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×