somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাপ

০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



প্রথম দেখায় ছেলেটাকে আহামরি তেমন মনে হয়নি।শাহবাগে রবিন একদিন পরিচয় করে দিয়েছিল।পরিচয়ের সময় বলেছিল,তূর্য বেশ ভাল ছবি আঁকে।আর এভাবেই সম্পর্কের সূত্রপাত হয় মৌমিতার সাথে তূর্যের।ছুটির দিনে রবিন শাহবাগ,টি এস সি ছাড়া আর কোথাও যেতে চায়না।রবিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে পাশ করার পর বেশ কিছুদিন বেকার ছিল।তারপর আঠাশতম বিসিএস পরীক্ষায় প্রশাসনে হয়ে যায়।মৌমিতার মামা যিনি পুলিশের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা তিনিই বিয়ের সম্পর্কটা নিয়ে আসেন।রবিনের পরিবারে মা ছাড়া আর কেউ না থাকায় মৌমিতার আব্বাও এই বিয়েতে রাজি হয়ে যান।মৌমিতার কিছু বলার ছিলোনা।কাউকে না কাউকে তো বিয়ে করতেই হতো।সেটা রবিন না হয়েও অন্য কেউ হতে পারতো।ভালোবাসার কথা বললে,মূলত মৌমিতা সেভাবে কাউকে কাছে পায়নি।তবে আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে যারা কাছে এসেছে তারা তাকে শারীরিক ভাবেই বেশী চেয়েছে।ফলে চুমাচুমি আর ঝাপটা-ঝাপটির মধ্যেই সম্পর্ক সীমাবদ্ধ ছিল।বিয়ের পর রবিনের কাছ থেকেও একই আচরণ পেয়ে একটু অবাকই হয়েছিল।তবে খুব দ্রুতই পরিস্থিতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়।প্রথম যেদিন তারা শারীরিকভাবে মিলিত হয়,মৌমিতা আলো নেভাতে দেয়নি।যদিও রবিন চেয়েছিল ঘর অন্ধকার করে নিতে।মৌমিতার জেদের কাছে হার মানে।বিয়ের কয়েকদিন আগে হতেই খালা,ফুফাতো বোন আর আম্মা বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছে,বিয়ের পর স্বামীর সাথে কিভাবে সহবাস করতে হয়।মৌমিতার কাছে বিশেষ কিছু মনে হয়নি বিষয়টিকে।সারাদিন পর রবিন বাড়ি আসে।খাওয়া সেরে নিয়েই মৌমিতার শরীর নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।যত প্রশংসা মৌমিতার শরীরের।ওর উরু কত সুন্দর।ওর স্তনজোড়া কত সুডৌল আর বড়, এই সব প্রশংসায় ব্যাস্ত থাকে।মৌমিতারও আস্তে আস্তে নেশা হতে শুরু করে।তবে নেশাটি বেশ অদ্ভুত।সঙ্গমের একদম শেষ পর্যায়ে, যখন রবিনের বীর্যপাতের সময় হয়ে আসে তখন সে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে রবিনের চেহারা দেখে।আসলে সে রবিনকে নয়, একজন পুরুষকে দেখে।কিম্বা বলা যায় একজন পুরুষকে খুঁজে।

তূর্যের সাথে প্রথম যেদিন মৌমিতার পরিচয় হলো,মৌমিতা একটা জিনিসই লক্ষ্য করে তা হলো তূর্যের চোখ।তূর্য সরাসরি চোখের দিকে তাকায়।মৌমিতা জানে বেশীরভাগ পুরুষই ওর বুকের দিকে প্রথম তাকায়।তূর্য সেটা করেনি।আলাপ শেষ হলে রবিন তূর্যকে বাসায় আসার দাওয়াত দেয়।তূর্য কারণ জানতে চাইলে,রবিন জানায় আগামী পরশু মৌমিতার জন্মদিন।বাসায় এসে মৌমিতা বেশ রাগই করে,বলে স্বল্প পরিচিত একজনকে দাওয়াত না দিলেই কি হতোনা।রবিন হেসে উড়িয়ে দেয়।মৌমিতার জন্মদিনে তূর্য পাঁচটি ছবি আনে ছবিগুলি দেখে মৌমিতা প্রচন্ড অবাক হয়।পাঁচটি ছবিই একটি নিঃসঙ্গ নারীর আর একটি প্রজাপতির।পার্থক্য হলো রঙে।একটি ছবিতে নীল রঙের প্রাধান্য বেশী।একটি হলুদ।তারপর সবুজ, মেরুণ আর সর্বশেষ সাদা রঙে আঁকা।রবিন শোওয়ার ঘরে ছবিগুলি নিয়ে যায়।টাঙ্গিয়ে দেয়।রাতে খাবার টেবিলে তূর্যকে প্রশ্ন করে ছবির বিষয়বস্তু একই তবে রঙ আলাদা আলাদা কেন।তূর্য অনেক সময় চুপ করে থাকে।তারপর বলে মেয়েদের জীবনটাই এমন।বিভিন্ন সময় মেয়েদের জীবনে বিভিন্ন রঙ ভর করে।রবিন বলে আমি ভাই ছবি টবি বুঝিনা।আমারে যদি বল কিভাবে ক্রসফায়ার করতে হয়,কিভাবে টোপ ফেলে ছিনতাইকারী ধরতে হয়,তাহলে আমি সুন্দরভাবে বলতে পারবো।সেদিন গল্পে গল্পে অনেক রাত হয়ে যায়।আর তূর্যকেও মৌমিতার বেশ ভাল লেগে যায়।
তূর্য তার ব্যাগ খুলে রোল করা কয়েকটি আর্ট পেপার বের করে।
-আজকে কি এঁকে এনেছো?
মৌমিতার কথায় কোন উত্তর করেনা তূর্য। ছবিগুলি বের করে বিছিয়ে রাখে।তারপর সিগারেট ধরায়।
-আসতে আসতে জোর বৃস্টি নামলো।ভিজেই গেলাম।ছবিগুলিও হালকা ভিজে গিয়েছে।
মৌমিতা রবিনের প্যান্ট আর টি শার্ট এনে দেয়।তূর্য পোষাক নিয়ে বাথরুমের দিকে চলে যায়।ভরদুপুরে প্রচন্ড বৃস্টি শুরু হয়ছে।মৌমিতা ছবিগুলি খুলে দেখে।প্রতিটিই একই মেয়ের বিভিন্ন ভঙ্গিতে আঁকা ন্যুড ছবি।প্রতিটি ছবিতেই মেয়েটির স্তন খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।মাথা মুছতে মুছতে তূর্য ঘরে ঢুকে।
-ছবিগুলিতে মেয়েটির স্তনকে এতো গুরুত্ব দিয়েছো কেন?
-আমার চোখে যেটি বেশী ধরা পড়ে সেটিই আঁকি।
তূর্য মৌমিতার পাশে বসে।টিভি অন করে দেয়।চ্যানেল ঘুরাতে শুরু করে।স্টার মুভিজে এসে স্থির হয়।মৌমিতা টিভির দিকে তাকায়।
-গ্রেট এক্সপ্যাকটেশান!
তূর্য বলে।
-ছোট বেলায় পড়েছি।সিনেমাও দেখেছি।
মৌমিতা তূর্যের বুকে মাথা রাখে।চুপ করে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকে।তূর্যর হাত ওর বুকে নেয়।
-খুব ছোটবেলায় আমার এক পাড়াতো দিদি তার বুক আমার মুখে ঠেসে ধরেছিল।
তূর্যের কথায় মৌমিতা নিরুত্তর থাকে।এভাবেই কিছু সময় অতিবাহিত হয়।
-তূর্য এখন মনে হয় আমাকে তোমার চুমু খাওয়া উচিত।
তূর্য মৌমিতার মুখ উঁচু করে ধরে।গভীরভাবে তাকায়।তারপর গাঢ়ো চুম্বন করে।
-আমাদের কি এসব করা ঠিক হচ্ছে?
তূর্য মৌমিতাকে প্রশ্ন করে।
-তূর্য তুমি মাতালকে বলছো মাতলামি করোনা।
মৌমিতা হাসতে হাসতে উত্তর দেয়।

তূর্য খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মৌমিতার নিরাভরণ শরীর দেখতে থাকে।
-কি দেখছো তূর্য?
-সৃস্টিকে।
সঙ্গমের শেষের দিকে এসে মৌমিতা দু’হাতের মুঠোয় তূর্যের মুখ নিয়ে দেখতে থাকে।তূর্য খেয়াল করে মৌমিতার দু’চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরছে।সঙ্গম শেষে মৌমিতাকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে তূর্য।হাত দিয়ে চোখের জল মুছে দেয়।চুমু খায়।
-কাঁদছো কেন?
-আমি বহুদিন ধরে একজনকে খুঁজি।কিন্ত পাইনা।
তূর্য ভীষণ অবাক হয়।কি বলবে ভেবে পায়না।
-এই সময় তুমি কারে খুঁজো?
কিছুক্ষণ নিরব থাকে মৌমিতা।তারপর বলে যায়।তখন কত হবে বয়স ষোল কি সতেরো।বাড়িতে কেউ ছিলোনা।পাশের বাড়ির আংকেল জোর করে তার সাথে মিলিত হয়।আংকেলের সেই চেহারা প্রতিটি সঙ্গমের সময় তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়।

মৌমিতার বাড়ি হতে বেড়িয়ে আসে তূর্য।হাটতে থাকে।ফিরে আসে শাহবাগে।এরপর আর কোনদিনই তূর্য মৌমিতার সাথে দেখা করেনি।আর তার আঁকার বিষয় বস্তুও বদলে ফেলে।নারীর শরীর ছেড়ে প্রকৃতির দিকে মনোযোগী হয়।

০১/০৪/২০১৮
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:৩১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×