somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

@খেয়া ঘাটঃ আসুন সুন্দরবন ও রামপাল নিয়ে আলোচনা করিঃ

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মূল পোষ্টঃ আসলে "রামপাল"এর পুড়োটাই রাজনীতি আর "সুন্দরবন" হচ্ছে একটা বাহানা মাত্রঃ

খেয়া ঘাট , আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ!

আমার মনে হচ্ছে, আপনার সাথে আলোচনা করা যায় !!!

দেখুন আমার লেখাটার মুল বক্তব্য হচ্ছে:
১) যদি আমরা আমাদের দেশের উন্নয়ন চাই তাহলে আমাদের বিদ্যুৎ দরকার, এর সংস্থান বাড়াতে হবে, তা যেভাবেই হোক না কেন? সেটা গ্যাস, কয়লা, জলবিদ্যুৎ, ডিজেল-ফার্নেস ওয়েল, আণবিক, সৌর, বর্জ্য ভিত্তিক হোক বা কুইক রেন্টাল, আমদানি পদ্ধতিতে হোক। এর কোন বিকল্প নেই। আবেগ দিয়ে দেশের বা পরিবারের আর্থিক অভাব কাটানো সম্ভব নয়। তবে না খেয়ে থাকা সম্ভব!

২) দেশে মানুষ প্রতিনিয়ত বাড়ছে, বাড়ছে- ক্রয়ক্ষমতা, শিক্ষার হার। মাথাপিছু আয় ক্রমোন্নতির দিকে, সেই সাথে বাড়ছে মানুষের চাহিদা, বাড়ছে বিদেশের সাথে যোগাযোগ, এর জন্য শক্তি প্রয়োজন, আর এই শক্তি মানেই বিদ্যুৎ। যা আসবে শুধুমাত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। এর কোন বিকল্প নেই।

৩) রামপাল নিয়ে এত প্রতিবাদ-সমালোচনা এর মুলে আছে রাজনীতি, ডেফেনেটলি রাজনীতি। সুন্দরবন একটা “বাহানা মাত্র"; হ্যাঁ! আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, মূল উদ্দেশ্য বিদ্যুৎকেন্দ্র’টা হতে না দেওয়া, এর জন্য সুন্দরবনকে ইস্যু বানানো হয়েছে। এর পক্ষে আমি আনোয়ারা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল হয়ে যাওয়ার ঘটনাটা উল্লেখ করছি, সেটা কিভাবে বাতিল করা হল তা নিশ্চয় জানেন? সেখানেও ইস্যু হয়েছিল, পরিবেশ আর বসতি। কয়লা খনির কথাও উল্লেখ করা যায় রেফারেন্স হিসেবে, যদিও বিষয়টা খনি ও উত্তোলন কেন্দ্রিক কিন্তু ঘটনার ঘনঘটা একই, প্রকল্প বন্ধ করা।

৪) রামপাল-এর কেন্দ্রটা যদি স্থানান্তর করা হয়, তাহলে কি নতুন জায়গা নিয়েও প্রতিবাদ প্রতিরোধ হবে না? আমার ব্যক্তিগত মত হল, সেখানেও একই রকম আচরণ করা হবে, তখন “বাহানা” হবে ভিন্ন কোন বিষয়!

৫) প্রতিবাদকারীদের নেতৃস্থানীয়রা চায় না বাংলাদেশ উন্নতি করুক, মাথা উঁচু করে দাঁড়াক পৃথিবীর বুকে, আমাদের ভাই-বোন যারা পৃথিবীর দেশে দেশে শ্রম বিক্রয় করছে তারা মর্যাদা পাক একটা স্বাধীন ও শক্তিশালী দেশের নাগরিক হিসেবে। কেটে যাক “মিসকিন” ট্যাগিং (মধ্যপ্রাচ্যে)! এক কথায় তারা দেশের ভাল চায় না, সেটা বুঝে করুক আর না বুঝে করুক – এটা আমার ব্যক্তিগত মত। তাই তারা দেশের যে কোন উন্নয়ন মূলক কর্মকাণ্ডে বাধা প্রদান করেন, যদিও এটা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার।

৬) জন ঘন বসতির এই দেশে, একটা বড় কোন প্রকল্পের জন্য প্রচুর জায়গা লাগে একটা নির্দিষ্ট এরিয়ার মধ্যে, যা একেবারে ফাঁকা বা অব্যবহৃত পাওয়া এক কথায় অসম্ভব। এর পর আছে পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য, প্রকল্পের ফ্যাসিলিটি’র বিষয়। আমরা জানি, সব জায়গায় সব শিল্পকেন্দ্র করা যায় না, লজিস্টিক, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, অর্থনৈতিক ভাবে ভায়াবল প্রভৃতি বিষয় মাথায় রাখতে হয়। এর যে কোন একটার অনুপস্থিতে প্রকল্পটা লোকসান দিবে। তখন জাতির ঘাড়ে শ্বেতহস্তী চাপবে।

৭) মানুষের উন্নয়ন মানেই পরিবেশের ক্ষতি। আমি, আপনি সারাদিন যাই করছি না কেন, তা দ্বারাই পরিবেশের ক্ষতি করছি। একটা সিঙ্গেল উদাহরণও দেখাতে পারবো না, যা দ্বারা আমরা “মানুষ” পরিবেশের উপকার করছি।

৮) একটু ভাল ভাবে খুঁজলেই দেখবেন কিভাবে ক্রম বর্ধমান মানুষের চাপে গত ২০-৩০ বছরে সুন্দরবন ছোট হয়ে গেছে এবং আগামীতে আরও ছোট হবে সেটা বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়াও। প্রতিনিয়ত আমরা সুন্দরবনের গাছে কেটে সাবাড় করে দিচ্ছি, একটা বাঘ ভুল করে বা খাবারের অভাবে লোকালয়ে (যা ছিল সুন্দরবনের অংশ একসময়) এসে পড়লে পিটিয়ে হত্যা করে, গাছে ঝুলিয়ে রেখে পোজ দিয়ে ছবি তুলছি, হরিণের মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্যে তা কিনে খাচ্ছি বিনা বাঁধায়, সামান্য কষ্ট লাঘব ও অল্প সময়ে বেশি মাছ ধরার জন্য নদীতে বিষ দিচ্ছি, মাছের সাথে সাথে হত্যা করছি জলজ প্রাণীকুল। কিন্তু আমরা সে বিষয়ে একেবারেই বেখেয়াল, কোন ব্যাপক ভিত্তিক প্রতিবাদও হয়নি কখনো। আর এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেই আমি বলছি, রামপালের বিদ্যুৎকেন্দ্রটা বাতিল করার জন্য সুন্দরবনকে ইস্যু বানানো হয়েছে।

আর তাই বলেছি,

“ ... বেচারা সুন্দরবন, তোর জন্য ভীষণ মায়া হয়! রামপাল বাতিল হওয়ার পর কেউ তোর খোজও রাখবে না! পুঁছবেও না?”

আমার ধারনা, ফুলবাড়ি, আনোয়ারা প্রজেক্ট বাতিলের পর যেভাবে আন্দোলনকারীরা সেই এলাকার কথা (রাজনৈতিক ব্যবহার বাদে যা প্রচুর) ও মানুষের কথা ভুলে গেছে, সেই একই ভাবেও সুন্দরবনের কথা ভুলে যাবে......

সবশেষে আপনাকে আবারও ধন্যবাদ জানিয়ে, একটা কথা বলবো, আর তা হচ্ছে, “সুন্দরবনকে কেউ যদি রক্ষা করতে পারে, সে হলো “রয়েল বেঙ্গল টাইগার” মানুষ না! পারলে একে রক্ষা করুন, সুন্দরবন বাঁচবে ...

ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন!

শুভ মহালয়া!
N.B: চুক্তির বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা চলবে ...
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:৩৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×