লালফোন সম্বন্ধে যতটুকু আমি জানি আর বুঝি, তা হল- একটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য ও সর্বদা চালু একটা রাষ্ট্রীয় ফোন সিস্টেম এটা। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গ সরাসরি নিজেরদের মধ্যে আদান প্রদান কৃত বার্তা গোপন রাখার কাজে বা নিজেদের আলোচনা যাতে ম্যানুপুলেট না হয় বা শত্রু দেশের হাতে না পড়ে- সেবিষয়ে খেয়াল রেখেই এটা ব্যবহার করে থাকেন। এটাই সরকারী নিয়ম বিশ্বজুড়ে। এমনকি এই ফোনে বিশ্ব নেতারা একে অপরের সাথে সরাসরি কথা বলেন। যার ফলশ্রুতিতে বিশ্বব্যপি বা পারস্পরিক কয়েকটা যুদ্ধও এড়ানো গেছে।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা/নেত্রীর পদ দুটিই বর্তমান সংসদীয় ব্যবস্থায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি পদ। তারা যদি মনে করেন, তাদের কোন বিষয়ে সরাসরি কথা বলা উচিত। সেক্ষেত্রে তাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনার জন্য এই মাধ্যমটাকেই বেছে নেওয়াটাই সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মনে করি। আবার এটা তাদের প্রটোকলিক দায়িত্বও বটে।
টেলিফোন সম্পর্কে আমার যতটুকু ধারণা, আর তা হল- এটাতে কল করা হলে, এটা রেসপন্স করছে কিনা তা অপর পাশ থেকে অবশ্যই বোঝা যাবে এবং রিং হলে কলকারী অবশ্যই রিংটোন শুনতে পাবে। যদি ফোনের রিসিভার তোলা থাকে বা লাইন কাটা থাকে তাও বোঝা যাবে। এর কোন ব্যতিক্রম হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। যদি আমরা টেকনোলজিকে বিশ্বাস করি। আর লাল ফোনের ক্ষেত্রে বিষয়টা তো আরও গুরুত্বপূর্ণ এবং সর্বদা পরীক্ষিত থাকে এটা।
এই লালফোনে আধা ঘণ্টা ধরে কল করা হচ্ছে মানে অপরদিকে রিং হচ্ছে এবং সেই রিংটোন কেউ শুনছে না বা বুঝতে পারছে না- তা হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ এটা বিরোধীদলীয় নেতার বাসা। আর এখনে তার সরকারী-বেসরকারি স্টাফরা সবসময় থাকেন। আবার লাইন ডিসকানেক্ট বা ফোন রেসপন্স করছে না জেনেও আধঘণ্টা ধরে লোক দেখানোর জন্য লাল ফোনে ফোন করা হচ্ছে এটাও বিশ্বাসযোগ্য নয়। কারণ এটাও প্রধানমন্ত্রীর অফিস আর এখানেও আছে পর্যাপ্ত সরকারী–বেসরকারি স্টাফ এবং সবকিছু রেকর্ডেড থাকে এখানে।
তাহলে সমস্যা কোথায়? কোন একপক্ষ থেকে আমরা সম্ভবত এই বিষয়ে ভুল ব্যাখ্যা পেয়েছি।
২৭/১০/২০১৩