somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সংবিধান সংশোধনী ও আমাদের নতুন শ্লোগান !!!

০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা ভাল ও পরিছন্ন জাতীয় নির্বাচন আমরা সবাই চাই কিন্তু প্রতিবার সংসদ নির্বাচনের আগে এই নিয়ে ভয়াবহ ক্যাচাল হচ্ছে দেশে। একই সমস্যায় বারবার পরতে হচ্ছে আমাদের। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অগ্রসরতা, হুমকি মুখে পড়ছে জনজীবন, প্রাণ হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ।

এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?

দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি পাশে রেখে আসুন আমরা আমজনতা মন খুলে এ নিয়ে আলোচনা করি, তাতে করে আর কিছু না হোক কিছুটা সময়ের জন্য রাজনৈতিক হানাহানি ভুলে থাকা যাবে আর নিজেরা ব্রেন স্টরমিং করতে পারবোঃ

এ থেকে উত্তরের প্রধান মাধ্যমই হচ্ছে সংবিধান। যদিও রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে সংবিধান কোন বাধা নয় তবুও এটাকেই বারবার ক্যাচালের হাতিয়ার বানানো হচ্ছে যা খুবই দুঃখজনক। তাই এটাকেই সমাধানেরও হাতিয়ার বানাতে হবে আমাদের।

আসুন দাবী জানাই বর্তমান সংসদের কাছে শেষবারের মত আর একবার সংবিধান সংশোধন করা হোক আর আমাদের মতামত সেখানে প্রতিফলিত হোক।

আমি নিম্নবর্ণিত সংশোধনী ও বিষয়গুলো উল্লেখ করছি আলোচনার জন্য যা ১৬ তম সংশোধনীতে থাকবেঃ

১) তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে নিশ্চিত করা হোক সংবিধানে। সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিষয় গুলো বিবেচনা করা হোক-
ক) চলতি সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে চলতি সরকার দলীয় একজন সংসদ সদস্য প্রধানমন্ত্রী হবেন তিন থেকে চার মাসের জন্য অর্থাৎ নির্বাচন কালীন সময়ের জন্য। তার কাজ হবে প্রধানত আগামী সংসদ নির্বাচন নিশ্চিত করা। কমপক্ষে দুইবার পূর্ণ মেয়াদের (৫ বছর) সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে তার এবং অবশ্যই চলতি প্রধানমন্ত্রী সেই পদে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।
খ) প্রধান বিরোধী দল থেকে উক্ত সময়ের জন্য একজন উপপ্রধানমন্ত্রী থাকবেন। তারও যোগ্যতা হতে হবে 'ক' এর অনুরূপ অর্থাৎ কমপক্ষে দুইবার পূর্ণ মেয়াদের (৫ বছর) সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে তার এবং তিনি বিরোধী দলীয় প্রধান হবেন না।
গ) ৩০ জন (৩০০ আসন ভিত্তিতে) মন্ত্রী থাকবেন সেই মন্ত্রী সভায়, তাদের সংখ্যা বর্তমান সংসদে প্রাপ্ত আসনের শতকরা হারে হবে এবং সেটা হবে সর্বদলীয় মন্ত্রীসভা এবং অবশ্যই নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের নিয়ে।
ঘ) প্রধানমন্ত্রী ও উপ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন সংক্রান্ত কোন কাজে জনসংযোগ করতে বা নির্বাচন করতে পারবেন না। পারবেন না উদ্বোধন করতে নতুন কোন প্রজেক্ট যাতে করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা যায়।
ঙ) উল্লেখিত ৩০ মন্ত্রী নির্বাচন করতে পারবেন।
চ) এই সময়ে নির্বাচন কমিশন থাকবে সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং সে তার মত করে নির্বাচন পরিচালনা করবেন। আর এদের (৩ সদস্য) নিয়োগ প্রক্রিয়া হতে হবে সংসদে নির্বাচন কালীন মন্ত্রীসভা গঠিত হওয়ার ঠিক দুই বছর আগে এবং তাতে সরকারী দল ও প্রধান বিরোধী দলের একজন করে মনোনীত সদস্য থাকবে শুধুমাত্র পর্যবেক্ষক (আবশ্যিক) হিসেবে এবং তারা কোন দাফতরিক কাজ করতে পারবেন না কিন্তু ভোট দিতে পারবেন। কোন কারণে সংসদ যদি নির্বাচন কমিশন গঠন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আগের কমিশনই বহাল থাকবে। শুধুমাত্র পর্যবেক্ষক দুইজন নিয়োগ দেওয়া যাবে। কমিশনের মোট সদস্য হবে ৫ জন (৩ নির্বাচিত আর ২ মনোনীত)।

২) দুইবার প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধী দলীয় প্রধান হওয়ার পর কেউ আর প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধী দলীয় প্রধান-এর পদের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। তবে তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হতে পারবেন।

৩) একজন ব্যক্তি একটা নির্দিষ্ট বারের মত (৫/৬/৭) সংসদ হওয়ার পর তাকে বাধ্যতামূলক ভাবে নির্বাচন থেকে অবসর নিতে হবে অর্থাৎ তিনি আর নির্বাচনে বিবেচিত হবেন না। তবে তিনি রাষ্ট্রপতি হতে ও দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণ করতে পারবেন।

৪) কমপক্ষে দুইবার পূর্ণ মেয়াদের সংসদ সদস্য না হলে তিনি প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধী দলীয় নেতা নির্বাচিত হতে পারবেন না।

৫) সংসদের কার্যদিবস বা সময়ের মধ্যে কোন সাংসদ যদি ৭০% সময় অনুপস্থিত (মাসিক ভিত্তিতে) থাকেন, তাহলে তিনি কোন বেতন ভাতা পাবেন না এবং যদি ৫০% সময় (মিনিট হিসেবে) অনুপস্থিত থাকেন তাহলে তিনি পরবর্তী নির্বাচনে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। এক্ষেত্রে কোনরূপ অজুহাত খাটবে না। শুধুমাত্র সরকারি দায়িত্ব পালন কালীন বিদেশ ভ্রমণ, অসুস্থতা ও বিনাবিচারে আটক বা নিখোঁজ সংসদ সদস্য যৌক্তিক সময়ের ওয়েভার পাবেন।

৬) ফৌজদারি, দেওয়ানী ও যুদ্ধাপরাধী মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত কেউ সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবে না।

৭) পর পর দুইবার কোন প্রার্থী একই আসন থেকে নির্বাচিত হলে, তৃতীয়বার তাকে ওই আসনে মোট ভোটের ৬০% ভোট পেতে হবে। যদি সেটা তিনি না পান তাহলে তাকে তৃতীয় টার্মে অন্যকোন আসন থেকে নির্বাচন করতে হবে বা ওই বারের মত নির্বাচন থেকে বিরত থাকবেন তিনি।

৮ ) নির্বাচনে ধর্মের অপব্যবহার, মিথ্যা অপপ্রচার, সাম্প্রদায়িকতা একদম নিষিদ্ধ থাকবে। তবে সংবিধানের আলোকে ধর্মীয় দল নির্বাচন করতে পারবে।

আমাদের করনীয় কি?

আমি আমার ব্যক্তিগত কিছু চিন্তা উপরে তুলে ধরেছি যাতে কিছুটা ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে কিন্তু আমি মনে করি, আমরা যদি প্রতিবার একেক জোটকে এত বেশী করে ভোট দিয়ে ফেলি যাতে করে সেই জোট সংসদে ব্রুট মেজরিটি (অংশ ২/৩) পেয়ে সংবিধান সংশোধন করার ক্ষমতা পেয়ে যায়। আর বার বার নিজেরদের ইচ্ছামত কাউকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে সংবিধান সংশোধন করে ফেলে। যার ফলশ্রুতিতে আমাদের তথা ভোটা দাতাদেরই ভুগতে হয় বারবার।

তাই আমি মনে করি, আমাদের ভোট দেওয়ার সময় হিসেব করতে হবে, যেন আমাদের দেওয়া ভোটই আমাদের দুর্ভাগ্যের কারণ না হয়। তাই, আসুন আমরা নিজ নিজ পরিবারের ভোট ভাগ করে সমান দুই ভাগে দুই জোটে দেই, যাতে করে কেউই ব্রুট মেজরিটি পেয়ে যেন আর সংবিধান সংশোধন করার সুযোগ না পান।

আসুন আমরা সমস্বরে দাবী জানাই আমাদের স্থায়ীভাবে রাজনৈতিক ক্যাচাল থেকে বাঁচাতে উপরের বিষয় গুলো বিবেচনা করে সংবিধানে সংশোধনী আনা হোক!

আর আমরা নিজেরা বুঝে শুনে, ভাগ করে ভোট দেই এবং আমাদের আগামী দিনের শ্লোগান হোক, "আমাদের ভোট আমরা দিব, বুঝে শুনে ভাগ করে দেব"।

ধন্যবাদ !!!

০১/১২/২০১৩, ৪। ২৫ বিকাল
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×