somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বুদ্ধদেব গুহের “চিঠি”

২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কোর্চি,

তোমার চিঠি হঠাৎ এই শীত সকালে
একরাশ উষ্ণতা বয়ে আনল,
পাতা ঝড়ে যাচ্ছে সামনের শালবনে
বিবাগী হচ্ছে ভোগি, রিক্ততার দিন আসছে সামনে
এরই মধ্যে তোমার চিঠি যৌবনের দ্যুতির মত এলো
এক ঝাঁক টিয়ার উল্লাসী সমবেত সবুজ চিৎকারের মতো ;
তার মানে এই নয় যে, তোমার চিঠি দুর্বোধ্য
উপমার ক্ষুদ ক্ষমা করে দিয়ো ।
কেমন আছ তুমি?
জানতে চাইলেও জানতে পাই কই?
সকাল থেকেই তোমাকে আজ
খুব সুন্দর একটা চিঠি লিখতে ইচ্ছে করছিল
ঘুম ভাঙার পর থেকেই,
তোমার কথা মনে পড়ছিল খুবই
আজকে ঘুমও ভাঙল বড় এক চমকে
এক জোড়া পাখির ডাকে ঘুম ভাঙল
যে পাখিদের ডাক বড় একটা শুনিনি এদিকে
কম্বল ছেড়ে দৌড়ে বাইরে গিয়ে দেখি
এক জোড়া স্কারলেট-মিনিভেট
এসে বসেছে আম গাছের মাথায়,
আমার ঘুম ভাঙ্গানিয়া পাখিরা
আহা! রোজই যদি আসত
আর তার পরই তোমার এই চিঠি ,
দিন আজকে ভালই যাবে আমার ।

বলছিলাম যে, সকাল থেকেই তোমাকে
সুন্দর একটা চিঠি লিখব ভাবছিলাম
কিন্তু,সুন্দর সুখের যা কিছু ইচ্ছা তা দমন করার মধ্যেও
বোধহয় এক ধরনের গভীরতর সুখ নিহিত থাকে ,থাকে না ?
আজ চিঠি লিখবনা তোমাকে
তার বদলে একটি স্বপ্নহার পাঠাচ্ছি।
লেখক ,কবি না।
তবুও তার নাম গোপনই থাক।


কিযে দেখেছিলাম তোমার ঐ মুখটিতে কোর্চি
এত যুগ ধরে কত মুখইতো দেখল এই পোড়া চোখ দুটি
কিন্তু এমন করে আর কোন মুখইতো
আমার সর্বস্যকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করেনি ,
ভাল না বাসলেই ভাল।
বড় কষ্টগো ভালবাসায়
ভালোবাসাতো কাউকে পরিকল্পনা করে বাসা যায়না
ভালোবাসা হয়ে যায়,ঘটে যায়
এই ঘটনা ঘটার অনেক আগে থেকেই
মনের মধ্যে প্রেম পোকা কুড়তে থাকে
তারপর হঠাৎই এক সকালে এই দুঃখ-সুখের ব্যাধি
দুরারোগ্য ক্যান্সারের মতই ধরা পড়ে
তখন আর
কিছুই করার থাকেনা।
অমোঘ পরিনতির জন্যে অশেষ
যন্ত্রণার সঙ্গে শুধু নীরব অপেক্ষা তখন।
কেউ যেন কাউকে ভাল না বাসে
জীবনের সব প্রাপ্তিকে এযে অপ্রাপ্তিতে গড়িয়ে দেয়
তার সব কিছুই হঠাৎ মূল্যহীন হয়ে পরে
হুশ থাকলে এমন মুর্খামি কেউ কি করে? বলো ?
সেজন্য বোধয় হুঁশের মানুষদের কপালে
ভালবাসা জোটে না।
যারা হারাবার ভয় করে না কিছুতেই
একমাত্র তারাই ভালবেসে সব হারাতে পারে।
অথবা অন্যদিক দিয়ে দেখলে মনে হয়
যা কিছু সে পেয়েছিল বা তার ছিল সেই সমস্ত
কিছুকেই অর্থবাহী করে তোলে ভালবাসা ।
যে ভালবাসেনি,তার জীবন বৃথা
তবুও বড় কষ্ট ভালবাসায়
এমন মহাবোধ আর কি আছে।

স্বপ্নহার তোমাকে পাঠাই
নীল নদীটির নিবির পাড়ে ঘুম পাওয়া রোদ
চমকে চেয়ে অলস পায়ে,যখন হাটে
মাঘি মাঠের ন্যাবা ধরা শূন্যতাতে ,
ঠিক তখনি আমার বুকের গভীর থেকে
স্বপ্নগুলো ঝাপটে ডানা ,
অস্ফুটে কি কইতে কইতে নড়েচড়ে
স্বপ্ন ওরে,স্বপ্নে দেখি নীরের পাখি আসছে নীড়ে
অনেক পাহাড় মাঠ পেরিয়ে,ভালবাসা ঠোটে করে
আসছে ফিরে পাখি আমার নীরের পাখি ।
স্বপ্নগুলো খুব ভিতু হয়,আমারস্বপ্ন সবার স্বপ্ন
তবু আমি স্বপ্ন দেখি
রুপের রাজা, গুণের গুনী
মুঠির মাঝে মুক্ত মলিন
সব পাখিদের মুক্ত করা মন্ত্র নিয়ে
আসবো ফিরে বারে বারে।

আমার কিছু স্বপ্ন ছিল
স্বপ্ন দিয়ে মালা গাঁথি স্বপ্নমালা
ছিপছিপে সেই মেয়ে ছিপছিপে সে
শ্যামলা বরণ,পেঁয়াজ ঘষি শাড়ি
তার স্বপন পুড়ে বাড়ি,আমার সংগে আড়ি
স্বপ্নে দেখা নারী, পেঁয়াজঘষি শাড়ির আঁচল
ঠোঁটের কোনে তিল,স্বপ্নমালায় গেঁথে গেল
হরিণ চিতা চিল।
স্বপ্নে আমি ভেবেছিলাম অনেক কিছুই
ভেবেছিলাম এটা করব,সেটা করব,বাড়ি করব,
পাহাড় চূড়ায় স্বপ্ন এবং সুখের কুটো দিয়ে
পায়ের কাছে বইবে নদী নারীর মতো
সাধের নারী,বাধ্যতার নাব্যতাতে নীল
স্বপ্ন ওড়ে ,স্বপ্ন ওড়ে বারে বারে।



কোর্চি,
দেখি কি করতে পারি
তোমার সংগে বেড়াতে যাওয়ার ,
ইচ্ছেতো কত কিছুই করে
এ জীবনে ক’টি ইচ্ছে আর পূর্ণ হল
বল,কারই বা হয়?
এমনিতে আমার অনেক কষ্ট
এমন করে ডাক পাঠিয়ে কষ্ট
আর বাড়িও না ।
একা একা মজা করতেও
বিবেকে লাগে ;
যার বিবেক বেঁচে থাকে তার
সুখ মরে যায় ।
সুখী হওয়ার সহজ উপায়,
বিবেকহীন হওয়া ।
বিবেক বিবস হলেই বাঁচি।
ভালো থেকো ।
তোমার ,
প্রিথু দা ।


শিমুল মুস্তাফার কণ্ঠে অসাধারণ আবৃতি শুনতে চাইলে এখানে যানঃ
Click This Link









সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৭ রাত ১০:০৮
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×