আজ সাকিবের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন। ভার্সিটিতে ঢুকতেই কিছুদূর বসে থাকা কয়েকজন ছেলে মেয়ের মাঝে থেকে একজন ছেলে তাকে ডাকল। সাকিব এগিয়ে গেল তাদের দিকে। সেখানে যেতেই একজন সাকিবকে তার নাম জিজ্ঞেস করল।
সাকিব তার নাম বলল।
ছেলেটা বলল,
-তুমিতো নতুন ভর্তি হইছো, আমরা তো তোমার সিনিয়র। আমাদের কিছু কথা যে শুনতে হয়।
সাকিব বলল,
-বলুন।
ওখান থেকে অন্য এক ছেলে বলল,
-ভাইয়া একটা গান শুনাও তো।
সাকিব বলল,
-ভাইয়া গান তো জানি না।
এবার আগের ছেলেটি রেগে গিয়ে বলল,
-গান জানোছ না মানে?মুখের উপর জানি না বলছ তোর এত সাহস ক্যামনে হইল?
সাকিব বলল
-স্যরি ভাইয়া।
ছেলেটি বলল,
-কিসের স্যরি?? কানে ধর।
সাকিব মাথা নিঁচু করে দাড়িয়ে আছে দেখে ছেলেটি ধমক দিল।সাকিব নিজের দুই হাত দুই কানের কাছে নিয়ে গেল
তখনি ছেলেটি বলল,
-থাম, কানে ধরা লাগবে না। ওরে একটা কিস দে (পাশে বসে থাকা মেয়েটিকে দেখিয়ে)
ছেলেটির কথা শুনে সাকিব হতভম্ব হয়ে গেল।
মেয়েটি ছেলেটির পিঠে একটা থাপ্পর দিয়ে বলল
-ধুর কি বলিস এসব?
ছেলেটি মেয়েটার কথা কানে নিল না।
সাকিবকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-কিরে, কিস দে।
তার পরেও সাকিব দাড়িয়ে আছে দেখে ছেলেটি বলল,
-কিরে কিস করবি নাকি প্যান্ট খুলে ক্লাসে যাবি?নিচে ছোট প্যান্ট আছেতো?
সাকিব কোন উপায় না পেয়ে ঝুকে মেয়েটিকে কিস করতে যাবে ঠিক তখনি ছেলেটি কসে একটা চড় বসালো সাকিবের গালে।
ফলে সাকিবের একমাত্র চশমাটি দূরে ছিটকে পরে ভেঙ্গে গেল এবং সাকিবের চোখ থেকে কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পরল।
ছেলেটি বলল,
-যা, বেয়াদব ছেলে।
সাকিব ভাঙ্গা চশমাটি কুড়িয়ে নিয়ে চলে আসার সময় ছেলেটি বলল,
-শোন, শার্ট খুলে যা।
সাকিব কিছু না বলে শার্ট খুলে চলে আসার সময় লক্ষ্য করল অন্য সবাই মিটি মিটি হাসছে।
সাকিবের মনে হল জীবনের প্রথম সে শয়তানের হাসি দেখছে। সে এতিম খানায় অবেহেলার মাঝে বড় হয়েছে কিন্তু আজকের মত কষ্ট কোনদিন পায়নি। নতুন চশমা কি করে জোগাড় করবে সেই চিন্তায় দু'চোখ ভরে যায় অশ্রুতে। আচ্ছা ওদেরকি কষ্ট বোঝার ক্ষমতা নেই? ওরাকি শুধু আনন্দ টুকুই বুঝতে পারে? কই কেউ তো একবারের জন্যও বলল না, সাকিব তোমার কি কষ্ট হচ্ছে?
-ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:০৪