স্বাগত মাহে রমযান। পবিত্র রমযান হচ্ছে আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির মাস। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা এমাসে রোজা পালনের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করেন। আজকের ব্লগে রোজা ভঙ্গের কারণ নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। সহজে বলতে গেলে, আমাদের দেহের পাঁচটি পথ অর্থাৎ মুখ, কান, নাক, মল ও মূত্র ত্যাগের রাস্তা দিয়ে যদি কোন কিছু অতিক্রম করে তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। তবে শর্ত হচ্ছে, সেটা অনিচ্ছাসত্ত্বে হতে হবে। নিম্নে এমন কিছু মাস'আলা তুলে ধরা হল,
মাসআলাঃ অনেকে মনে করেন, রোজাবস্থায় চোখে ড্রপ ব্যবহারে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায় মূলত মাস'আলা বলছে, রোজা অবস্থায় চোখে ড্রপ ব্যবহার করলে রোজা ভাঙ্গবে না। এমনকি এর তিক্ততা মুখে বা গলায় অনুভব হলেও রোজা ভাঙ্গবে না। এ মাসয়ালাটি সাধারণ কিয়াসের বহির্ভুত সরাসরি আসার দ্বারা প্রমাণিত। -ফাতাওয়া তাতারখানিয়া: ৩/৩৭৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৪৪
মাসআলাঃ স্যালাইন বা ইঞ্জেকশন নিলে রোজা ভাঙ্গে না। তেমনিভাবে অসুস্থতার কারণে গ্লুকোজ স্যালাইন নিলেও রোজার ক্ষতি হবে না। তবে অসুস্থতা ছাড়া গ্লুকোজ স্যালাইন নেওয়া নাজায়েয। -সূত্র : আলাতে জাদিদা কে শরয়ি আহকাম: ১৫৩
মাসআলাঃ রোজা অবস্থায় শরীর থেকে রক্ত বের হলে রোজা ভাঙ্গে না। তদ্রুপ সিরিঞ্জ দ্বারা বের করা হলেও রোজা ভাঙ্গে না। তবে বিশেষ ওযর ছাড়া শরীর থেকে ইচ্ছাকৃত এ পরিমাণ রক্ত বের করা মাকরূহ, যার কারণে ওই দিন রোজা পূর্ণ করার শক্তি হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয়। -সূত্র : সহিহ বোখারি, হাদিস ১৯৩৮, ১৯৪০; ফিকহুন নাওয়াযিল- ২/৩০০
মাসআলাঃ রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট বা মাজন দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা মাকরূহ। আর পেস্ট বা মাজন গলার ভেতর চলে গেলে রোজাই নষ্ট হয়ে যাবে। তাই রোজা অবস্থায় টুথপেস্ট বা মাজন ব্যবহার করা যাবে না। টুথপেস্ট বা মাজন দিয়ে ব্রাশ করতে হলে সাহরির সময় শেষ হওয়ার আগেই করে নিতে হবে। সূত্র : ইমদাদুল ফাতাওয়া: ২/১৪১; জাওয়াহিরুল ফিকহ: ৩/৫১৮
মাসআলাঃ রোজা অবস্থায় অনিচ্ছাকৃত বমি হলে (যদি তা বেশিও হয়) রোজা ভাঙ্গে না। অবশ্য কেউ ইচ্ছাকৃত মুখ ভরে বমি করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। হাদিসে আছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, রোজা অবস্থায় (অনিচ্ছাকৃত) বমি হলে তা কাজা করতে হবে না। কিন্তু ইচ্ছাকৃত বমি করলে সে যেন তা কাজা করে নেয়। -সূত্র : তিরমিজি, হাদিস ৭২০; আল মুহিতুল বুরহানি: ৩/৩২৬
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মে, ২০১৮ দুপুর ১:২৬