বিজয় দিবসের গৌরবের শুভেচ্ছা বাণী ও আনন্দের উচ্ছাসের পোস্টে যখন ফেইসবুক সহ সামাজিক মাধ্যমে ভাইরালের জোয়ার চলছে। তখনই বিজয় দিবসের ঠিক আগের দিন শুক্রবার সকালে জাতীয় জাদুঘরে এক অনুষ্ঠানে সাবেক এক ভারতীয় উইং কমান্ডার মুক্তিযুদ্ধকে পাক-ভারত যুদ্ধ হিসেবে উপস্থাপন করলো। অবশ্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাবলীল ভাষায় দ্বিমত প্রকাশ করেছেন। তবে এমন বক্তব্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী অনেকেই।
অনুষ্ঠানে ভারতীয় উইং কমান্ডার ডিজে ক্লের ১২ দিনে ঢাকা বিজয় বইয়ের উন্মোচন করা হয়। বইয়ের পরিচিতিতেও মহান মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাক যুদ্ধ হিসেবেই লেখা হয়। এ ব্যাপারে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বইয়ের লেখকের কাছে জানতে চাইলে আর্মড ফোর্সেস ভেটেরান উইং কমান্ডার ডিজে ক্লে ভিএম সময় সংবাদকে বলেন, এতে আপত্তির কিছু নেই। বিস্তারিত নীচের লিংকে পড়তে পারেন
সময় টিভি লিঙ্ক
আওয়ামীলীগ যেভাবে নিজেদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার বলে প্রচার করে, বাস্তবে তাদের অন্তরে সেইভাবে চেতনাকে লালন করলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ঐ উইং কমান্ডারের জীব ছিড়তে না পারলেও কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে অনুষ্ঠান থেকে বের করে দিতেন। দেশের কেউ সামান্য গঠনমূলক সমালোচনা করলেই তার চৌদ্ধগুষ্টিকে রাজাকার বলতে বিলম্ব হয় না। অথচ নিজের দেশে এসে মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধাদের সব গৌরবোজ্জ্বল অবদানকে ম্লান করে দিলেও নতজানূ ও মেরুদণ্ড সোজা করে তীব্র প্রতিবাদ করার সাহস হয়নি। বিগত কয়েক বছর যাবৎ ভারতের বিভিন্ন নেতারা বলে আসছে - তারা বাংলাদেশকে স্বাধীন করে আমাদেরকে দান করেছে - এই মেরুদন্ডহীন নতজানু চেতনাবাজ সকারের পক্ষ থেকে বিন্দুমাত্র প্রতিবাদ হয়নি। আর প্রতিবাদ হয়নি বলে আজ নিজের দেশে এসে মুখের উপর বলে গেল।
কত নির্লজ্জ বেহায়া হলে আবার সেই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করে, যে বইয়ে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে ভারত-পাক যুদ্ধ বলে পরিচয় দিয়েছে। বই কিন্তু ইতিহাস আর বাংলাদেশের সরকাররের কোন মন্ত্রী বা পদস্থ কেউ কোন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করার অর্থ হচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবে বইয়ের বিষয় বস্তুকে সত্য বলে মেনে নেওয়া। আরও সহজে বলা যায় আমাদের সরকার এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করে বা করার সহায়তা করে এটা মেনে নিলো যে ভারতই মাত্র ১২ দিনে ঢাকা বিজয় করে বাংলাদেশ স্বাধীন করে দিয়েছে। এবং এটা ছিল ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধ। আর এই বই মুছে ফেললো স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সকল অবদান। সৃস্টি হলো আরেক ইতিহাস যাহা গবেষকরা তাদের গবেষণায় রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করবে অনন্তকাল।
জানিনা চেতনাবাজরা এর পর কোন যুক্তিতে চেতনার গলাবাজি করবে?
আরও অবাক করা ব্যাপার হলো এত বড় অনুষ্ঠান হলেও ভারতীয় দালাল মিডিয়াগুলি এই খবর প্রচার করে নাই। হাতেগোনা কয়েকটা মিডিয়া এই খবর প্রচার করেছ।
পরিশেষে আমি এই উইং কমান্ডার ও বইয়ের লেখকের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানাচ্ছি। সাথে সাথে সরকারের কাছে দাবী রাখছি এর বিরুদ্ধে অফিসিয়েলি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য প্রত্যাহারের ববস্থা নিতে; এদেরকে অতি সত্তর বাংলাদেশ থেকে বেড় করে দিতে এবং প্রকাশিত বই প্রকাশ্যে বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে জ্বালিয়ে তীব্র ঘৃণা জানানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিতে।
জয় বাংলা!!
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:১৭